somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যখন আমি আবেগি ছিলাম

২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টুনটুনি,
আজ অনেক দিন পর তোমাকে নিয়ে লিখতে বসা। জানি এই লেখা টুকু তুমি কোনো দিন পড়বে না বা কোনো দিন জানবেও না! তবুও কেন লিখছি? যখন লেখা গুলো লিখছি, আমার মনে হচ্ছে, আমি কথা গুলো তোমাকেই বলছি। বাস্তবে এটা সম্ভব না হলেও কল্পনায় কিন্তু অসম্ভব না।
আজ ৮ ই জানুয়ারি। তোমার জীবনে বিশেষ একটি দিন। এই দিনে তুমি কেমন আছ জানতে চাইব না। জানতে চাওয়াটা হবে বোকামি। যে দিনটাতে একটি মেয়ে বধু সেজে স্বামীর ঘরে যায়, সে দিনটা নিশ্চয় কারো খারাপ যেতে পারে না। আমিও বেশ ভালই আছি। পাওয়া - না পাওয়ার হিসাব কষতে কষতেই আমার দিনগুলো কেটে যাচ্ছে। যাইহোক,,,
তুমি হয়তো জান না, প্রথম যেদিন তোমাকে আমি দেখেছিলাম, মাঠের কোণায় বসেছিলে তুমি।তোমার হরণীর মত চোখ, বাঁশির মত নাক আর মায়াবী মুখটা দেখে, সেদিন থমকে গিয়েছিলাম। আর ভাবছিলাম কি নিখুঁত করেই না, বিধাতা তোমায় বানিয়েছেন। সারাটাদিন শুধু তোমার দিকে তাকিয়েই ছিলাম।ছায়ার মত তোমায় অনুসরন করেছিলামম সেদিন।কিন্তু তুমি জানতে না তা ! তুমি জানলে পরের দিন। সবাই যখন মঞ্চে অনুষ্ঠান দেখতে ব্যস্ত, আর আমি তখন ব্যস্ত তোমায় দেখতে।যখন তোমার চোখ পড়ল আমার চোখে, আমি ইশারায় তোমাকে কিছু একটা বলতে চাইলাম। তারপর থেকে তুমিও মাঝে মাঝে দেখতে লাগলে আমায়।আমি ইশারায় তোমায় বললাম, আমি তোমার প্রেমে পড়েছি। তুমি বুঝলে না। তারপর যখন বললাম, তুমি কি আমায় ভালবাসবে? তুমি ইশারায় বললে জানি না। সেই থেকে শুরু। যখন তোমার আমার কথা বাড়তে লাগল, তখন চোখের ইশারা দুর্বল হয়ে পড়লো।চোখের ভাষাটা ঠিক তুমি বুঝতে না, আর আমিও। তাই ঠিক করলাম তোমার সামনে দাড়িয়ে আমার মনে কথাগুলো তোমায় বলব। কিন্তু তুমি কোন সুযোগই দিলে না। বাধ্য হয়ে তাই কাগজ কলমের শরণাপন্ন হলাম। লেখার ভাষা আমার জানা ছিল না, তবুও লিখলাম। পৃষ্ঠা ভরে লিখলাম কি সব হাবিজাবি লেখা।লেখাটুকু পড়ে অনেক হেসেছিলে তাই না! ভেবেছিলে এ আবার কেমন পাগল!! সত্যিই তখন পাগল ছিলাম। শুধু শুনতে চেয়েছিলাম তোমার কাছ থেকে তিনটি শব্দ।একদিন পর তোমার এক বান্ধবী আমাকে জানালো সেই কাঙ্খিত শব্দ তিনটি পূর্বাভাষ। তোমার বান্ধবী বলেছিল তুমি ফোনে জানাবে। তারপর তোমার ফোনের অপেক্ষায়, একটি বারের জন্যেও মোবাইল হাত ছাড়া করিনি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তোমার ফোন। সেই কাঙ্খিত শব্দ তিনটি তোমার থেকে শুনে আমার চোখে আনন্দাশ্রু জমেছিল সেদিন।তোমাকে একটা কবিতা শুনিয়েছিলাম, তোমাকে নিয়েই লেখা। শুনে তুমি একটু হেসেছিলে শুধু। তোমার প্রথম সেই হাসির শব্দটা আজও আমার কানে বাজে অচেনা সুরের মত। খুব জানতে ইচ্ছা করে যাকে জীবন সাথী করে পেয়েছ সেও কি তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখে? সেই কবিতা শুনে কি তুমি অমন করে এখনো হাসো?
হঠাৎ সকাল বেলা তোমার ফোন। ফোনটা পেয়েই কেমন জানি মনের মধ্যে একটা মোচড় দিয়ে উঠলো, রিসিভ করতেই মধুর কন্ঠটা কর্কশ করে তোমার সেই নিষেধাজ্ঞা - "তুমি আর কোন দিন এই নাম্বারে কলও দিবে না, মিস কলও দিবে না"। কেমন যেন একটা অদ্ভুত শিহরণ আমার সারা শরীরে বয়ে গেলো। পরমূহুর্তে জানতে পারলাম তোমার বোনের কড়া শাসনের কথা। তারপর থেকে আবার আমাকে কাগজ কলমের শরণাপন্ন হতে হলো। অনেক গুলো চিঠি লিখেও কোনো উত্তর পেতাম না। তবুও লিখতাম, ভাল লাগত আমার কথা গুলো তোমাকে জানাতে। তুমি কি জান তোমার সেই নিষেধাজ্ঞা আমি আজও পালন করে চলেছি!
একবার কি ভয়ই না পেয়েছিলে!!! ঈদে তোমার বাড়িতে আমরা কয়েকজন হঠাৎ উপস্থিত। তুমি আমাকে দেখে কি করবে বুঝতে পারছিলে না। একটা বিস্ময় আর ভয় তোমাকে যে গ্রাস করেছিল, তা তোমাকেই দেখেই বুঝেছিলাম। কিন্তু কিছু করার ছিল না আমার, ঈদের দিনে তোমাকে না দেখে থাকি কি করে বলো।
এত কিছুর পরও আমাদের রিলেশনটা কিন্তু ভালই চলতেছিল। ফোনে মাঝে মাঝে কথা হত। আমি চিঠিও দিতাম নিয়মিতই। একদিন তুমি ফোনে বললে, আমার জন্য তুমি ঘর ছাড়তেও রাজি। সেই তোমাকেই আজ ঘর ছাড়তে হয়েছে,শুধু আমার জাগায় অন্য কেউ।
বেশ কিছু দিন ভালই চলল। কিন্তু কি একটা কারনে তুমি আরেক টা ছেলের সাথে রিলেশন করলে। যা আমার কাছে আজও একটা রহস্য। রহস্য বলছি এই কারনে যে, পরবর্তীতে ছেলেটি সরকারী চাকরি পাওয়ার পর তোমাকে বিয়ের প্রপোজ করেছিল, যেটাকে তুমি রিফিউজ করে দিয়েছিলে।ছেলেটি দেখতে শুনতে খারাপ ছিল না। বর্তমান সময়ের স্মাট বয় বলতে যা বুঝায়, ছেলেটি ছিল তাই। কিন্তু কেনো তুমি ছেলেটা কে ফিরিয়ে দিয়েছিলে, সেটাই একটা রহস্য আমার কাছে!
কিছু প্রশ্ন মনের মাঝে নিয়ে ঘুরে বেড়াই আজও। কেন তুমি আমার সাথে এমন করলে? কেন তুমি আমাকে কিছু জানালে না? যে মনটা তোমার কাছে গচ্ছিত রেখেছিলাম, কেন তুমি তা ফিরিয়ে দিলে না? কেন আমাকে ভালবাসাহীন করে গেলে? কেনো আমার ভালবাসার যোগ্যতা, সামর্থ্য টাকে কেড়ে নিলে? আমার কি কোনো ভুল ছিল? আমি কি তোমার ভালবাসার যোগ্যছিলাম না? কেনই বা তুমি আর একটি ছেলের সাথে প্রতারনা করলে? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর আজও খোজে বেড়াই। পাই না কোন দিন। আবার বলতে পারো পেয়েছি। সেটা না হয় আমার কাছেই থাক।
আজ কাল নিজের পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করে না। নিজের দঃখগুলোকে নিয়েও তাই আর ভাবি না। আর সুখের কথা বলবে? তোমার সুখের মাঝেই আমার সুখ গুলো বর্তমান। শুনেছি তোমার স্বামী সংসার নিয়ে তুমি বেশ সুখেই আছ। আবার তোমার কোল জুড়ে ফুটফুটে সুন্দর একটা আগামীও এসেছে।যখন তোমার সুখের খবর পাই, তখন ভাবি আমি হয়তো তোমায় ততটা সুখী করতে পারতাম না, যতটা সুখে তুমি আছ। আমি তোমায় পেলে তো সুখেই রাখার চেষ্টা করতাম। সেই সুখটা তো তুমি পেয়েছ। আমার জায়গায় না হয় শুধু অন্য একটা মানুষ। তাতে কি, সুখে তো তুমি আছ! তাতেই হলো।ভাল থেকো টুনটুনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১১:৪৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×