somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিন্দার- নরকে--পর্ব--৭

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পর্ব--৭
সুজনের রাতে তেমন ভালো ঘুম হয়নি কারণ শোবার জায়গা পরিবর্তন হলে নতুন পরিবেশে আর নতুন বালিশ হলে তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে সেই কবে থকে এই বদ অভ্যাস তাকে পেয়ে বসেছে। এই ছোট্ট একটা বালিশের সাথে ঘুমের আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি এক নিবিড় সম্পর্ক! কিছুদিন এক বালিশের সাথে মাথা রেখে ঘুমালে এই জড়বস্তুর সাথে গভীরতা হয়ে যায় অথচ কত আপনজন,কত দিনের সম্পর্কের সাজানো পাতানে ভেলায় কোন জীবের সাথে প্রাণের মায়ার গাঢ়ত্বের জন্ম হয় না!
আজন্ম মানুষের এই অদ্ভুত ভালোলাগা আর অদ্ভুত পরিণতি জীব ও জড়ে, নারী ও নরে, কথায় ও কামনায় সর্বদা ফারাক থাকে বাড়ায় যাতনা।
সকাল এগারোটার দিকে রায়হান এসে সুজনের রুমে ঢুকলো --
'মৃদু গলায় ডাক দিয়ে তার ঘুম ভাঙ্গালো।
-- কি অবস্থা তালতো ভাই!
-এত দেরী করে ঘুম থেকে উঠলে কি রাষ্ট্র চলবে!
- রাত ক'টায় ঘুমিয়েছো?
-- না তেমন দেরী করে ঘুমইনি।রাত একটার দিকে ঘুমিয়েছি।
- তুমি তো স্টুডেন্ট মানুষ,সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আছে কি না।
- জ্বী আছে!.
-- আমি দুই বার বাংলাদেশে গেলাম সেখানে দেখলাম সবার বিশেষ করে তোমার মতো তরুণদের অদ্ভুত অবস্থা!
- আমিতো রীতিমতো বেয়াক্কেল হয়ে গেলাম।
- আচ্ছা,কি এমন কারণে আপনি এমনটা বোধ করলেন!
-- আমি দেখলাম আমার পরিচিত সব পরিবারে-ই- ছেলেমেয়েরা আস্তে আস্তে বেলা এগার থেকে বারোটা কেউ আবার দূপূর একটার দিকে ঘুম থেকে ওঠে।
- সবাইকে কেমন জানি জীবনের প্রতি উদাসীন মনে হয়। কোন ব্যাপারে সিরিয়াস বা লক্ষ্যবিহীন নৌকা নিয়ে ভেলা বেয়ে চলা নাবিকের মতো মনে হয়।
-- আপনি মনে হয় গ্রামের দিকের পরিবারের কথা বলেছেন।
- না ভাই গ্রাম, শহর দু দিকের পরিবারেরই দেখলাম একি রকম বদঅভ্যাস।
-- হা হা মনে হয় অনেক দিন আগের কথা বলতেছেন।এখন সবকিছু অনেক বদলে গেছে।ছেলেমেয়ারা ও পিতামাতাসহ সবাই সচেতন নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
-- 'আহ' সচেতন হলে তবে তো মঙ্গল।
" " " রায়হান তার বোনকে বললো শুধু নাস্তা দিয়ে দেওয়ার জন্য। সে সুজনকে নিয়ে লন্ডনের বাঙালি পাড়ায় নিয়ে যাবে ও একটু ঘুরাঘুরি করে দুপুরের খাবার বাইরে খেয়ে আসবে।
রোজী বললো,ঠিক আছে ওকে নিয়ে যা কিন্ত দুপুরের খাবার বাইরে না খেয়ে বাসায় এসে দুজন একসাথে খাবে আমি অনেক কিছু রান্না করেছি।
'রায়হান বললো,অনেক দিন হয় বাঙালি কারি হাউসে খাওয়া হয় না আর যেহেতু ইস্ট লন্ডনে যাচ্ছি তবে সুজন ভাইকে নিয়ে দুপুরে খেয়ে আসবো আর রাতে তোমার ঘরে খাওয়া যাবে।

" " " চা নাস্তা খেয়ে রায়হান ও সুজন দুজন রওয়ানা দিলো ঘুরাঘুরির উদ্দশ্যে।
গাড়িতে চড়ে রায়হান বাঙালি গান ছেড়ে দিলো--

"কতটা ক্ষত এই পোড়া হৃদয়ে,কেউ জানে না -
হায়,কেউ জানে না!---
কিভাবে যে দিন যায় রাত আসে!
জানে শুধু একাকী চাঁদ আর নিশুতি রাতের ধ্রুবতারা
হায়!কেউ জানে না ---
কতটা ক্ষত-------কেউ জানে না ---
দুরের ও শ্মশানে দেখি সাদা কবুতর
মনের কার্ণিশে অসহায় স্মৃতিরা কাঁপে থরথর,
গভীর হয় কালো রাত,আসে না ভোরের প্রভাত
হায়! কেউ তো জানে না
কতটা ক্ষত ------কেউ জানে না---
কাম-রিপুর উন্মাদনায় আমি বড্ড ক্লান্ত,
প্রেমের আগুন বশিকরণের জানি না যে মন্ত্র,
লাজ-লজ্জা ভুলে;আজ হলাম বেসামাল --
মস্তিষ্কের গোপন কুঠুরিতে মেলি স্বপ্ন দুয়ার!!
হায়!কেউ জানে না হায়!!
কতটা ক্ষত ------কেউ জানে না "'"--


--- আহ কি দারুণ বেদনার গান---
- এটা'তো ছ্যাঁকা খাওয়ার গান রায়হান ভাই -
- কি হলো ছ্যাঁকামাইসিন খেয়েছেন মনে হয়--
---'হুমম'
- তিনমাস আগে বিয়ে করেছিলাম সেটা স্থায়ী হয়েছিল তিন সপ্তাহ।
-বড় দুই বোন ও বড় ভাই সবাই বিয়ে করে সুখী সংসার করতেছে। আমার কপালে সংসারের সুখ এলো না!
-দুই বার বাংলাদেশে গেলাম সবাই আটারো থেকে বিশের মধ্যে বয়সের মেয়ে দিতে চায়। অবশেষে বিয়ে করা সম্ভব না হওয়াতে এদেশে বিয়ে করে কলঙ্কের দাগ পড়লো।
-- আরে পুরুষ মানুষের কি কোন কলঙ্ক আছে নাকি!তবে আপনার মতো যারা ভালো লোক তাদের কথা ভিন্ন।
- 'ভাই রে'যে আঘাত পায় সেই বুঝে! একজন মানুষের সবচেয়ে দামী হলো সততা।এটা নষ্ট হয়ে গেলে কিছুই থাকে না। সাদা কাগজে একবার কালো কলমের দাগ লাগলে যা হয়।
-- আপনার বিয়েটা কেন ভেঙে গেলো। দেখে শুনে, যাচাই,বাছাই করে বিয়ে করেন নি!
- আরে সবি করেছি,বদ অভ্যাস থাকলে যা হয়। হিজাব পড়ে আবার দেখো ড্রাগ খায়!এটা কেমন ধরনের মেয়ে! তাই আর বেশিদিন চলতে দেই নাই।
-- বাদ দাও এসব! সবি নিয়তি,কি বলো!
- তা অবশ্যই।আরেকটা বিয়ে করে ফেললে তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে,পুরানো ভুলে নতুন কে গ্রহনের মাধ্যমে।
-- হা হা তুমি ভারী রসিক মানুষ,একটা পেতে কত বেগ পোহাতে হয় দেখনা?আর আরেকটি ---
- বেশ ভালো আছি, দুঃখবোধ নেই,নিজের একটা শিশুদের খেলনার দোকান আছে সকাল বিকাল কাজে ব্যস্ত থাকি।এই তো চলছে!
- এই আমার বিজনেস কার্ড টা রাখো, যেকোন প্রয়োজনে ফোন করে চলে এসো।
-'ধন্যবাদ ভাই' ঠিক আছে।
- আমার ইষ্ট লন্ডনে এসে পৌঁছে গেছি।
- বাহ,কম বেশি প্রায় দেখি সবাই এশিয়ান চেহারার লোকজন।
- শুধু কি লোকজন আরো কত কি!
- এই দেখ আমার গাড়ির সামনে দেখো,কিছু বুঝতে পারলে!
- নাতো,একটা গাড়ি দেখলাম এসে থামলো আরেকজনকে হ্যালো বলে মনে হয় চলে গেলো।
-- হা, হা হা,এটা সেই হ্যালো না ওর হাতে 'পুরিয়া' মানে ড্রাগ দিয়ে চলে গেলো।এভাবে এখানে ড্রাগ ডিলিংস হয়।
- বড়ই বিচিত্র,সব দেশেই ড্রাগের মত বিষাক্ত ছোবল আমাদের প্রজন্মেরা বিপদগ্রস্থ হচ্ছে।
- যাক আরো কত দেখবে!এই যে পার্কের পাশে দেখো,কি সুন্দর হিজাব পরিহিত নিস্পাপ চেহারার আটার থেকে বিশের মধ্যে বয়সের মেয়েগুলো দেখো।
-- হায় আল্লাহ,হিজাব তো ঠিকআছে কিন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গ যেন বাতাসের গতির মতো শিহরিতও উল্লসিত করছে আশপাশ
আর কি দিব্বি ওরা সিগারেট টানছে।
- এটাই বতর্মান প্রজন্ম কিন্ত যে পার্কের পাশে এই বেইজ্জতি করছে সে পার্ক আমাদের ইজ্জতের অংশ।
- তার মানে কি ভাই!!
'এটা হলো আলতাফ আলী পার্ক যা বৃটেনে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের ও একটি চেতনার নাম।
আলতাফ আলী যার জন্ম বাংলাদেশের সিলেট জেলায় যিনি পেশায় ছিলেন ব্রিটেনের অভিবাসী বাংলাদেশি ফ্যাক্টরি শ্রমিক।
১৯৭৮ সালের ৪ মে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পূর্ব লন্ডনের এডলার স্ট্রিটে বর্ণবাদীদের হাতে খুন হন।সেই থেকে তার মাধ্যমে বিলেতের মাটিতে সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাস ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার, স্বাধীনতার অধিকারসহ যাবতীয়  অধিকার আদায়ে লড়াইয়ে অনুপ্রেরণার উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তাঁর মৃত্যুর পর লন্ডনের বাঙালি সম্প্রদায় বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদে নেমেছিলেনন। তার ধারাবাহিকতায় আলতাব আলীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৯৮ সালে পূর্ব লন্ডনের ওয়াইট চ্যাপল হাই স্ট্রিটে সেন্ট মেরি পার্ককে ‘আলতাব আলী পার্ক’ নামে নামকরণ করা হয়।


পরবর্তীতে ভাষা শহীদদের স্মরণে বহির্বিশ্বের বানানো প্রথম শহীদ মিনার,যা ১৯৯৯ সালে পূর্ব লন্ডনে এই পার্কেই প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এই আলতাব আলী পার্ক ও তার সংলগ্ন শহীদ মিনার হচ্ছে প্রবাসী বাঙালিদের অনুপ্রেরণা ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা দাবি দাওয়া, মানববন্ধন সহ সকল কর্মকাণ্ডের জন্য এই পার্কে সমাবেত হন তাদের মতামত বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য।
বৃটেনে বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হয়ে এই পার্ক বেঁচে আছে এই প্রজন্মের মাঝে যা প্রবাসী বাঙালিদের জন্যে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের একমাত্র স্থান।
তবে ইদানিং দেখা যায় এখানে বাংলাদেশের কতিপয় রাজনৈতিক দলের লোকেরা বিশেষ দিনে বা বিশেষ সময়ে চর দখলের মতো দখল নেওয়ায় জন্যে মারামারি, হাতাহাতি শুরু করে দেয়।এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বহুলাংশে লোপ হয়।
-- ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করবো না আসলেই অনেক কিছু জানা হলো।
--এরজন্য বলা হয় ভ্রমণ মানুষের চোখ খুলে দেয়।
-- আচ্ছা এই পার্কের বিপরীতে দিকে যেখানে সবগুলো দোকান ও বিল্ডিং বিভিন্ন চোখ ধাঁধানে রঙের কিন্ত
এই একটা বিল্ডিং এমন বিকর্ষ কালো রঙের কেন!!
-- হা হা! তুমি আসলেই টেলেন্ট,সবকিছু বাদ দিয়ে এই কালো বিল্ডিংয়ে চোখ গেলো!!
একটা কথা হয়তো জানো কি না জানি না তবে আমার মতে, সব কিছুর একটা কালো দিক থাকে আর মানব শিশুর চরিত্রের শুরু করে শেষ অব্দি কালোদিক দেখা যায় আর কারো দেখা যায় না।
"এই কালো ঘর হলো সম্পদশালী পাশ্চাত্য সভ্যতার কালো দিকটার একটা চিহ্ন। যার প্রভাব সমাজ থেকে সংসারে বিদ্যমান কেউ তাকে বলে বিলাসিতা আর কেউ বলে বাহুল্যমাত্র।


- রহস্য জনক! খুলে না বললে বুঝতে অসুবিধা হয়।
- কি আর বলবো, এটাকে নলে ষ্টিপবার (Strips Bar)। তার মানে হলো এখানে সুন্দরী যুবতীরা গানের তালে তালে একে একে শরীরের সব কাপড় খুলে নগ্ন নৃত্য করে আর বেহায় পুরুষেরা তা উপভোগ করার জন্যে টাকা দেয়।
- আসলেই সভ্যতার আড়ালে কত বেহায়াপনা চলে তার কতটুকুই বা আমরা জানি।
-এর পাশেই দেখ একটা লাল ঘর এগুলো আরেকটা ধ্বংসের মিসাইল।এগুলো হলো জুয়ার ঘর। অনেকে লাভের আশায় দশ টাকা একহাজার টাকা বানাননোর ধান্দায় এখানে গিয়ে নেশায় জড়িয়ে জীবন ধ্বংস করে চলছে।
- লন্ডন যেহেতু আছো এগুলো পরিহার করার উপদেশ রইলো।
- জ্বী ভাই,আপনার উপদেশ অবশ্যই মেনে চলবো।
--ধন্যবাদ।চলো ব্রিকলেইন যাই। এই দেখ রাস্তার পাশে ইংলিশ নামের পাশে বাংলায় লেখা ব্রিকলেইন।
- আহ, তাই তো।এটাই হলো বাঙালীর আরেকটা গৌরবের বিষয় যদিও আমরা আস্তে আস্তে তা হারতে চলছি।
-ব্রিকলেন এমন একটা জায়গা যা বিশ্ব জুড়ে এক নামে সুপরিচিত। ইস্ট লন্ডনে ফাইনান্সিয়াল সিটি ক্যানারিওয়াফ থেকে অদুওে আর সিটি অব লন্ডনের সীমান্তে। ইনার সিটি বারা টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্রিকলেনের মাত্র ৫শ বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়,এই ব্রিকলেনে আইরিশ কমিউনিটির দাপট ছিলো আলাদা এক মাত্রায়। তারপর আসে জুইস কমিউনিটি। পঞ্চাশের দশকে সূচিত হয় বাংলাদেশী কমিউনিটির যাত্রা।


-আবাসিক অবস্থানের পাশাপাশি কারী হাউস তথা রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মাধ্যমে-চ্যালেনজিং সূচনা হয়ে ওঠে সফলতার ইতিহাস। বাঙ্গালীদের ঘামে-শ্রমে-মেধায়-মননে ব্রিকলেন খ্যাতি পায় 'কারী ক্যাপিটেল' হিসেবে।
- ভাই, এখানে খাবারের জন্য আমাদেরকে ডাকছে। সিক্স নাইন্টি নাইন বাফেট।
-- হা হা এরা হলো 'ব্রিকলেইন কারি টাউট' কাউন্সিল ও পুলিশ এদের কড়া নজরদারিতে রাখে যা সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ তবুও লাভের আশায় বেশি বিক্রির আশায় বাঙালিরা মানুষকে আকৃষ্ট করতে এই সিষ্টেম চালু করেছে।
- আমি এটা ঘৃণা করি।
- এদের এসব অদ্ভুত ব্যবসার ধারণার ফলে কিন্তু এখন সেই ঐতিহ্যবাহী ব্রিকলেইনের দু পাশ জুড়ে শুধু কারী হাউস নেই।
- - বাহ ইংলিশ,জাপানিজদের সাথে আমাদের নামগুলো তো দারুণ---মনসুন,প্রেম- প্রীতি, জিরা,ক্যফে গ্রীল,আমার গাঁও,চাটনি,সাজনা।
- এখন দেখতে পারছো ভিন্ন ভিন্ন কালচারের রেস্টুরেন্ট ও ফোডশপ এসে যোগ হচ্ছে। চাইনিজ, জাপানি সুসি, হোটেল, ডিজার্ট শপ।
- বাঙালি বেশিরভাগ রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়েছে যার স্থলাভিষিক্ত হয়েছে প্রোপাটি শপ বা ইটালিয়ান,আজেন্টাইন,ব্রাজিলিয়ান রেস্টুরেন্ট।
-এর মূল কারণ হলো প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে সম্ভব না হওয়াতে অনেকেই গুটিয়ে ফেলছেন ব্যবসা ফলে নতুন করে আসছে ভিন্ন কমিউনিটির নতুন ধারার ব্যবসা।
- চলো দুপুরের খাবার খাই,যে কোন বাঙালি রেষ্টুরেন্টে। বাঙালির পুরা স্বাদের কারি।
-চলুন।
"দুপুরের খাবার শেষে সুজন ও রায়হান দুজন হোয়াইট চ্যাপেল গেলো। সুজনের কাছে মনে হলো হোয়াইট চ্যাপল যেন সিলেটের ও ঢাকার বঙ্গ বাজারের মতো।রাস্তার পাশে ছোট্ট ছোট্ট দোকান। কেউ বা বিক্রি করছে মেয়েদের ওড়না, শাড়ি ও চুড়ি আর কেউ শাক সব্জী আবার কেউ মোবাইল টপ আপ, চায়ের কাপের টুংটাং শব্দ, গানের ও ইসলামী সঙ্গীত সহ ওয়াজের আওয়াজ, জিলাপি, মিষ্টি, সহ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান, কারির গন্ধ আর সাথে রুটির মহুয়া মাধুকরী সুবাস এই যেন এক খন্ড বাঙালি সংস্কৃতির আদলে গড়া বাঙালি পাড়া। এভাবে করে হাঁটতে হাঁটতে তাদের সময় অনেক চলে গেলো তা টেরই পেলো না।


- হঠাৎ সুজন শুনতে পেলো মাইকে ভেসে আসছে,
' হাই আলাস সালাহ,হাই আললা ফালাহ।
'কল্যাণের দিকে এসো' 'মঙ্গলের দিকে এসো'
- ভাই এই লন্ডনে সুমধুর সুরে মুয়াজ্জিন কল্যাণের দিকে ডাকছে।


- হ্যাঁ, এটাও বাঙালির ঐতিহ্য আর গর্বের আরেকটা অর্জন।ইষ্ট লন্ডন মসজিদ বা লন্ডন মুসলিম সেন্টার।যা ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ,এখানে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য সাত হাজার মুসল্লী ধারণ করতে সক্ষম। বাঙালি মুসলমানের স্থাপত্য কীর্তির এক অপরূপ দৃষ্টান্ত ও বৃটেনের অন্যতম আইকনিক বিল্ডিং বলা হয় এল,এম,সি তথা ইষ্ট লন্ডন মসজিদকে।এখানে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় জুম্মার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এবং গড়ে সাপ্তাহিক নামাজীর উপস্থিতি সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি বলে পরিসংখ্যানে বলা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামিক স্কুল,মক্তব,সেমিনার সহ বিভিন্ন কার্যক্ষম পরিচালিত হয়।
- মাশাল্লাহ,ইসলামের প্রসার ঘটুক পৃথিবীর আনাচে কানাচে।শান্তির সুবাতাস বয়ে চলুক জমিনে।
- 'চলো' নামাজ পড়ে আত্মা শান্তি করে ঘরে ফিরে যাই।
(চলবে)


পর্ব---১

পর্ব---2

পর্ব ৩/১

পর্ব ৩/২

পর্ব-- ৪

- পর্ব -৫

পর্ব ৬
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৪:৩৭
২৭টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×