somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্যামোফ্লাজ

১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্বের লিঙ্ক- Click This Link

পর্ব-২

Present Day
রাত ১১ টা, মৃদু শব্দে পিয়ানো বাজছে লুকাসের বাসার বাইরের বিশাল ফাঁকা জায়গাতে। লুকাস নিজেই বাজাচ্ছে পিয়ানো। বাকি সবাই মুগ্ধ হয়ে শুনছে সেটা। ছোটবেলা থেকে শখের বসে বেশ ভালই বাজানো শিখেছে লুকাস। টাইটানিকের গানটা বাজাচ্ছে সে। পার্টিতে লুকাস ইনভাইট করেছে তার সহকর্মী, সাংবাদিক, পুলিশ অফিসার, তার বন্ধু সহ আরো অনেক কেই। ছোট করে বিশাল এক পার্টির আয়োজন। কারনটা অবশ্য অনেক বড় ছিল, আরেকটা প্রমোশন। রাজনৈতিক রেষারেষির জন্য আটকে ছিল তার সেটা। ক্ষমতাসীন দলে থাকা স্বত্বেও তার দলের হঠাৎ পতন, সরকার ব্যবস্থা থেকে ছিটকে যাওয়া, এসব আটকে রেখেছিল সবকিছু। চার বছরে বেশ ভাল করেই দল আবার নিজের জায়গায় এসে সরকারও গঠন করে ফেলল। আর নতুন সরকার গঠনের শুরুতেই তার প্রমোশনটাও হয়ে গেল। পাঁচ বছর আগে যখন এই দল শাসনে ছিল তখনও শুরুতে একটা আর শেষে একটা প্রমোশন দিয়েছিল সরকার। তাই বর্তমান সরকারী দলের প্রতি সে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ।
সবার কাছে বেশ পরিচিত মুখ লুকাস। তার অর্জনের নেই শেষ। তার ড্রয়িং রুমে ঢুকলে মনে হয় কোনো মিউজিয়ামে ঢোকা হয়েছে। চারপাশের দেয়ালে ছবি বাঁধাই করা, আর একটু দূরে দূরে ক্রেস্ট আর মেডেল। রুমের আর্কিটেকচারাল ডিজাইন আর সোডিয়াম লাইট সবকিছুকে ফুটিয়ে তুলেছে অনেক সুন্দর করে।
পিয়ানো বাজানো শেষ হলে সবাই হাত তালি দিয়ে ভালবাসা জানালেন। এক হাত তুলে সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন লুকাস। সবার মধ্যে থেকে লিওনার্দো এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরল লুকাস কে। তারপর হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে লুকাসের গুণগান করল লিও। লুকাস কে নিয়ে তার লেখা কবিতাটা আবৃত্তি করল সে।
লুকাসের মত লিওনার্দোর ভাগ্য এত ভাল না। প্রতিটা খারাপ কাজে লুকাস কোনো না কোনো ভাবে পার পেয়ে গেলেও, লিও আটকে গিয়েছে। এ পর্যন্ত সবগুলো অভ্যন্তরীণ কেসেই উঠে এসেছে লিওর নাম। তাইতো লুকাসের মত পদোন্নতির সুযোগ পায় নি লিও। তবে এটা নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই, কারণ সে তার কাজগুলো এই অবস্থানে থেকে বেশ ভালভাবেই করে যাচ্ছে।
সবাই যখন নাচ আর গানে মেতে আছে তখন বাড়ির সামনের দরজা দিয়ে ছোট একটা রিমোট কন্ট্রোল কার প্রবেশ করে। সিকিউরিটি গার্ডদের চোখ এড়িয়ে সেটি চলে যায় একদম বাসার ভিতরে। বিশাল বাড়ি, কিন্তু মানুষ দুইজন, লুকাস আর তার ছেলে যার নাম নিকোলাস। নিকোলাস এসব পার্টি পছন্দ করে না। তাই সে আজ উপস্থিত নেই সেখানে। এটা নিয়ে লুকাসকে অনেকেই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলে নিকোলাস কাজে আটকে গেছে বলে কাটিয়ে দেন লুকাস।
পুরো বাড়ি রিমোট কন্ট্রোল কারটা ঘুরতে থাকে। গাড়ির সাথে ছোট্ট একটা ক্যামেরা; মাথা দিয়ে বের হয়ে আছে সাবমেরিন এর মত। পুরো বাসার কোথায় কি আছে পুরাটা ভিডিও করছে সেটা। পুরো বাড়ি জুড়ে বিভিন্ন ম্যাগনেটিক সার্ফেসে সেটি ছোট একটা ডিভাইস লাগিয়ে দিল। বাথটবের এক সাইডে সেটি আরেকটা ডিভাইস লাগিয়ে ওয়াশরুমের জানালা বেয়ে নিচে নেমে আসল। তারপর অন্ধকারে খুব সাবধানে সেটি বাড়ির প্রাচীর টপকে রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কালো মার্সিডিসের কাছে এসে থেমে গেল। মার্সিডিসে বসে ছিলেন একজন লোক, তার মাথায় হ্যাট, চোখে ব্ল্যাক গগলস আর গায়ে চাদর মুড়ানো। তিনি গাড়িটা নিয়ে বাসার পিছনের দিকে দিয়ে চলে গেলেন।
রাত তখন পৌণে একটা। পার্টির সমাপনী বক্তব্য শেষ করে লিও আর লুকাস এসে বসলেন ড্রয়িং রুমটাতে। লুকাস লিওর হাত ধরে চুমু খেয়ে বললেন-"আজ শুধু তোমার জন্য আমি এইখানে বন্ধু"
- তুমি পরিশ্রম করেছ তাই এই পজিশনে এসেছ।
- তুমি যদি খুনটা না করতে..........
- চুপ কর, বাতাসেরও কান আছে। আমার টাকা কবে দিচ্ছ সেটা বল।
- পাবে, কাল পরশুর মধ্যেই পেয়ে যাবে।
- দেখো, তোমার সাথে আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আমি টাকা নিতাম না। কিন্তু আমার আর এই জায়গায় থাকতে ভাল লাগছে না। আমার কোনো উন্নতি হচ্ছে না, একের পর এক ধরা খেয়েই যাচ্ছি। আমি অন্য দেশে গিয়ে বিজনেস শুরু করব ক্যাসিনোর। এর জন্যই আমি টাকা নিচ্ছি তোমার থেকে.......
- আমি বুঝতে পেরেছি। তুমি যে কাজটা করেছ সেটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট ছিল আমার জন্য। নয়ত আমার প্রমোশনটাই আটকে যেত।
- বাদ দাও এসব। আমি বাসায় ফিরতে চাই।
- থেকে যাও আজ এখানে, অনেক বেজে গেছে। তাছাড়াও তোমার শরীর ভাল নেই। তুমি একটু বেশিই এলকোহল নিয়েছ আজ।
- খাব না! আমার বন্ধুরা কোথায় চলে যাচ্ছে আর আমি কোথায় পড়ে আছি!
লুকাস বের হয়ে যায় রুম থেকে। লুকাস তার রুমে চলে যায়। এক তরুনী আসে তার শরীর ম্যাসাজ করে দিতে। কিন্তু সে ফিরায়ে দেয়। অনেককিছু পেয়েও যেন কি একটা অপূর্ণ রয়ে গেছে; সে সেটা ধরতে পারছে না। সে চিন্তা করছে তার অতীত নিয়ে। সময় কত দ্রুত যায়! এইতো সেদিন বাবা মা থেকে দূরে এসে জয়েন করল আমেরিকান ফোর্সে। এলিসাকেও ছেড়ে আসতে হয়েছে তাকে। মেয়েটাকে সে অনেক বেশি ভালবাসত। আসার সময় এলিসা তার হাত ধরে বলেছিল-"প্রতিদিন চিঠি লিখবে আমায়" সে প্রতিদিনই চিঠি লিখেছিল, কিন্তু চিঠিগুলো পৌঁছানো হয় নি। এরই মাঝে তার বাবা মা মারা গেলেন একটা বোমা বিস্ফোরণে। তখন গ্রামে গিয়ে শুনলেন যে এলিসার বিয়ে হয়ে গেছে। একই সাথে দুইটা ধাক্কা তিনি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেন নি। তখন থেকেই তিনি ডেস্পারেট হয়ে গেছেন লাইফ নিয়ে। প্রতিটা মিশনে তিনি ফ্রন্টে এটাক দিয়েছেন, যে জায়গাগুলোতে কেও সাহস পায় নি একা সে জায়গাগুলোতে তিনি একাই কভার দিয়েছেন। এসব তাকে আরো উপরে নিয়ে গিয়েছে।
বাথটবের হালকা গরম পানিতে থেকে যখন লুকাস তার অতীত নিয়ে চিন্তা করছিলেন, ঠিক তখন কোথায় থেকে যেন ভেসে আসল-"Time to revenge my friend. Time to destroy the camouflages..........."
লুকাস এটা শুনে লাফ দিয়ে উঠলেন। তার নাকে মুখে পানি ঢুকে। তাড়াহুড়ো করে নামতে যেয়ে পা পিছলে তার বাম হাতে লাগে। তিনি ওয়াশরুমে পড়ে যান। কোনোরকমে নিজেকে সামলে রুমে এসে হাঁপাতে থাকেন। এটা তিনি কি শুনলেন; তার চেয়ে বড় কথা তিনি কার গলায় শুনলেন! তিনি নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছেন না। এটা কখনোই হতে পারে না।
আর শব্দ আসছে না ওয়াশরুম থেকে। তিনি ধরে নিলেন এটা তার মনের ভুল ছিল। তিনি শুয়ে পড়লেন বেডে। হঠাৎ আবার টেপ রেকর্ডারটা বেজে উঠল। তিনি চিৎকার দিয়ে উঠলেন। ঠিক তখনই তার ল্যান্ড লাইন বেজে উঠল। তিনি ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসল-"স্যার, মেজর লিওনার্দো মারা গিয়েছেন কার এক্সিডেন্টে। তার গাড়ি একটা খাদে পাওয়া গেছে দুমড়ানো মোচড়ানো অবস্থায়। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা বিষয় তার গাড়িতে একটা টেপ রেকর্ডার বাজছে। সেটা হচ্ছে- “Time to revenge my friend. Time to destroy the camouflages...........”
লুকাস ফোনটা ধরে আছেন কানে, কোনো কথা বলতে পারছেন না। এদিকে তার রুমের চারপাশ থেকে রেকর্ডার বাজছেই। ধীরে ধীরে যেন সাউন্ড টা বাড়ছে। তার মাথা ধরে আসছে, মাথা ঘুরাচ্ছে। তিনি তার সেল ফোনটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।

***
জেলখানায় বসে আঙ্কেল জোসেফের সাথে দাবা খেলছেন নিকোলাস। অনেকদিনের পরিচয় তাদের, নিকোলাস যখন চাকরিতে ঢুকলেন তখন পুলিশ অফিসার মার্ক টোয়েন, বর্তমান পুলিশ কমিশনার, তার সাথে পরিচয় করায়ে দেন জোসেফের সাথে। ক্রিমিনাল হলেও জোসেফকে অনেক শ্রদ্ধা করেন নিকোলাস। কারণ বেশি মানুষের সংস্পর্শে কখনো ছিলেন না তিনি, আর তাদের সবার মধ্যে জোসেফের মত জ্ঞানী মানুষ তিনি একজনও পান নি।
যেদিন নিকোলাসের খুব বেশি হতাশ লাগে, সেদিন তিনি এসে দাবা খেলেন জোসেফের সাথে। এ নিয়ে ভিতরে ভিতরে অনেক কথাবার্তা ছড়ালেও তা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই নিকোলাসের। কারণ নিকোলাস একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার হিসেবেই পরিচিত। বাবার মত ধূর্ততা নেই তার। তিনি একা থাকতে ভালবাসেন, কম মানুষ পছন্দ করেন। তাই এসব পার্টি, বড় অনুষ্ঠানে কখনো যান না নিকোলাস। আর একারণেই আজ সে তার বাবার পার্টিতেও ছিলেন না।
কিছুক্ষণ আগে বাসা থেকে দুইবার ফোন আসলেও ধরেন নি নিকোলাস। যারা মন থেকে পুলিশে চাকরি করে তারা সারাদিন ক্রিমিনাল নিয়ে থাকতেই ভালবাসে। নিকোলাসও এর বাইরে না।

এদিকে বর্তমান পুলিশ কমিশনার মার্ক টোয়েনের ছোটবেলার বন্ধু জোসেফ বেশ ভালই দিন কাটাচ্ছেন জেলখানায়। একা মানুষ বাসায় যেভাবে সময় কাটাতেন, তার চেয়ে ভাল সময় তিনি জেলে বসে কাটাচ্ছেন। তার যখন যা লাগবে বলার সাথে সাথেই চলে আসছে তার সেলে। এটার জন্য পুরো ক্রেডিট মার্ক কে না দিলে ভুল হবে না। সে তার কথার মাধ্যমে আপন করে নিয়েছে কয়েদিদের আর জেল সুপার কে। আবার তার কিছু সাইকোলজিক্যাল সমস্যা থাকায় পেয়েছেন আলাদা কিছু কেয়ার।
জোসেফ জেলে আসার দুইবছরের মাথায় সুস্থ হয়ে চিঠি দিয়ে মার্কের সহায়তায় শুরু করেন আর্ট করা এবং তৃতীয় বছরেই তার একটা আর্ট নজর কেড়েছে সবার। ছবিটিতে ফুটে উঠেছিল কয়েদিদের কষ্টের জীবন। তারপর তার আরো কিছু ছবি বিখ্যাত হতে শুরু করলে জেল কর্তৃপক্ষ তাকে আরো সুযোগ সুবিধা দিতে থাকে। এসবের পিছনে হাত ছিল তার বন্ধু মার্কের। তাই সে সারাজীবন মার্কের উপর কৃতজ্ঞ থাকবে।
এতগুলো বছরে কেও দাবাতে হারাতে পারেনি জোসেফ কে। বাইরে থেকে অনেক দাবা খেলোয়াড়ও এসেছিলেন তার সাথে খেলতে। হতাশ হয়ে ফিরে চলে গেছেন আবার। নিকোলাসও প্রতিটা ম্যাচ হেরে এসেছে আজ পর্যন্ত। প্রথমদিকে কয়েক দানে হারলেও এখন বেশ সময় ধরেই খেলাটা টিকিয়ে রাখেন তিনি। কিন্তু আজ চিত্রটা ভিন্ন। নিকোলাসের অবস্থান জোসেফের থেকে ভাল। সে আজ জিতে যেতে পারে, করতে পারে নতুন ইতিহাস। আর মাত্র কয়েকটা দানেই নিকোলাস হারিয়ে দিবে আঙ্কেল জোসেফ কে। এমন সময় ফোন বেজে উঠল নিকোলাসের। পকেট থেকে বের করে স্ক্রিনে নামটা দেখে কেটে দিল সে। প্রায় সাথে সাথেই আবার ফোন। এবারও কেটে দিল নিকোলাস। তারপর আবার কল আসতেই জোসেফ বলে উঠলেন-“তোমার বাবার ফোনটা ধরো, গুরুত্বপূর্ণ কিছু হয়ত।”
ফোন ধরতেই কিছুটা চিৎকার দিয়ে উঠলেন লুকাস
- নিক, কোথায় তুমি?
- দেখো আমি বলেছি আমি পার্টিতে যেতে পারব না তাও………
- তোমার আঙ্কেল লিওনার্দো মারা গিয়েছে।
- কিভাবে?
- মার্ডার
- কখন হল এসব! ডেড বডি কোথায়?
- লিওর গাড়ি একটা খাদে পড়ে আছে দুমড়েমুচড়ে।
- কার এক্সিডেন্টও তো হতে পারে।
- না, এটা মার্ডার। কারণ তার গাড়িতে একটা টেপ রেকর্ডার ছিল। সেটা অন করলেই শোনা যাচ্ছে- “Time to revenge my friend. Time to destroy the camouflages...........”

- কিসের রিভেঞ্জ!
- জানি না, কিন্তু এই একই রেকর্ড টা আমার বাসাতেও বাজছে। আমি আর নিতে পারছি না। তুমি
তাড়াতাড়ি আসো। তোমার সাথে আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে।
গাড়ি নিয়ে সোজা বাসার দিকে রওনা দিল নিকোলাস। কিন্তু পথের মাঝে আরেকটা ফোন। ফোন করেছেন পুলিশ কমিশনার মার্ক টোয়েন। তিনি জানালেন মেজর লিওনার্দোর কার এক্সিডেন্টের কথা। তদন্তের দায়িত্ব দিলেন নিকোলাসকে। তাকে কড়া নির্দেশ দিলেন কেও কোনো এভিডেন্স সরানোর আগে যেন নিকোলাস সেখানে পৌঁছায়। ফোনটা রেখে গাড়িটা ঘুরায়ে নিল নিকোলাস। যাওয়া শুরু করল এক্সিডেন্ট স্পটের দিকে।
এদিকে বাসায় নিকোলাস আসার অপেক্ষা করছেন লুকাস। এতক্ষণে নিকোলাসের চলে আসার কথা। আসছে না কেন! টানা বেজে যাচ্ছে রেকর্ডারটা। সে যেখানেই যাচ্ছে সেখানেই বাজছে সেটা। রেকর্ডার থেকে বাঁচতে তিনি নিচতলায় নামতে গেলেন। কিন্তু সিঁড়িতে পা দিতেই পা পিছলে পড়ে গেলেন লুকাস। মাথা গিয়ে লাগল নিচে রাখা ফুলের টবে। মাথা ফেটে রক্ত বের হতে লাগল তার। কিছু ধরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু তার মাথার কাছে একজন দাঁড়িয়ে আছে। তারপর হঠাৎ চারপাশে কিসের যেন ধোয়া আসতে লাগল। কাশতে লাগলেন লুকাস। ধোয়া এড়িয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ধীরে ধীরে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসল। জ্ঞান হারালেন লুকাস, মাটিতে পড়ে থাকল তার দেহটা।
নিউ-ইয়র্ক স্ট্রিটের উত্তর দিকের এক রাস্তার পাশের খাদে পড়ে আছে ভাঙ্গা গাড়িটা। পুলিশ অলরেডি জায়গাটা ঘিরে দিয়েছে। রাত বেশি হওয়ায় মিডিয়ার চাপও কম। নিকোলাস গাড়ি থেকে নামলেন। তারপর পকেট থেকে গ্লাভস বের করে এগিয়ে গেলেন স্পটের দিকে।
- কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গেছে?
- না,স্যার। তবে গাড়ির ভিতরে একটা টেপ রেকর্ডার পাওয়া গিয়েছে।
নিকোলাস টেপ রেকর্ডার টা অন করলেন। তারপর রেকর্ডারে বাজতে লাগল- “Time to revenge my friend. Time to destroy the camouflages...........”
- আর কিছু গাড়িতে ছিল?
- একটা ভাঙ্গা মদের বোতল ছিল। উনি গাড়ি চালাতে চালাতেও এলকোহল নিয়েছেন।
- কোথায় থেকে আসছেন জানা গেছে কি?
- আপনার বাসা থেকে স্যার।
তখন মনে পড়ল তার লিওনার্দো তার বাবার পার্টিতে ছিলেন। বাসার কথা শুনে তার মনে পড়ল তার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। আসতে দেরি হচ্ছে বলে নিকোলাস ফোন দিলেন তার বাবাকে। কিন্তু ফোন উঠালো না কেও। দুইবার চেষ্টা করার পর নিকোলাস বাসার ল্যান্ডফোনে ফোন দিলেন। কিন্তু এবারও কেও ফোন রিসিভ করল না। তিনি বুঝতে পারলেন লুকাস ঠিক নেই। সবকিছু ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাতে বলে তিনি গাড়ি নিয়ে রওনা দিলেন বাসার উদ্দেশ্যে।
বাসার পাশে গাড়িটি পার্ক করে মেইন গেটের দিকে গেল নিকলাস। দুই তিন বার গেটে নক করেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া গেল না। পকেট থেকে রিভলবারটা বের করে বাসার চারপাশে একবার চেক করে নিল সে। বাতাসে মদের গন্ধ ভেসে আসছে। কোথাও কেই নেই। তারপর বাসার পিছনের গ্যারেজের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলেন নিকোলাস। ধীরে ধীরে হেঁটে ডাইনিং এর কাছে যেতেই তিনি আটকে গেলেন। সিড়ির কাছে পড়ে আছে লুকাসের দেহ। দৌড়ে গিয়ে আগে সে চেক করে নিল পালস রেট। তারপর কোলে করে লুকাসের বডিটা নিয়ে গাড়িতে উঠলেন সে। গাড়ি টেনে সোজা চলে গেলেন পাশের হাসপাতালে।
কিন্তু বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। ডাক্তার এসে জানালেন লুকাস কোমায় চলে গেছেন। তার সাথে দেখা করতে চাইলে ডাক্তার দরজার বাইরে থেকে দেখার পারমিশন দিলেন। বাইরে দাঁড়িয়ে নিকোলাস গ্লাস দিয়ে দেখছেন লুকাস কে। অসহায় এর মত শুয়ে আছেন তিনি। তারপর এসে বসলেন করিডোরে রাখা চেয়ারগুলোতে।

মাথা নিচু করে বসে আছেন নিকোলাস। তার আগে বাসায় আসা উচিত ছিল। তার চোখ ভেজা, এই প্রথম লোকটার জন্য এত মায়া হচ্ছে নিকোলাসের। অনেক উলটাপালটা কাজ করিয়ে নিয়েছেন লুকাস তাকে দিয়ে, এমনকি দুইটা খুনও করেছে নিকোলাস। ক্ষমতার লোভে কি করেন নি লুকাস! দ্বিতীয় খুনটা করার পর থেকেই নিকোলাসের মনে জেদ আসে পুলিশে ঢোকার। লুকাস কে গিয়ে সে কথাটা বললে তাকে হেল্প করেন তিনি। ভিতরে ভিতরে ঢুকায়ে দেন পুলিশে। প্রথমে বোঝেন নি নিকোলাস। পড়ে যখন একের পর এক লুকাসের বিভিন্ন অসৎ কাজে নিকোলাসকে সাহায্য করতে জোর করতেন তিনি, তখন নিকোলাস বুঝলেন তাকে পুলিশে ঢুকিয়ে দেওয়ার পিছনেও স্বার্থ আছে লুকাসের। তাই তিনি ভিতর থেকে কখনো সম্মান করতে পারেন নি লুকাস কে।
হঠাৎ কেও নিকোলাসের মাথায় হাত দিল। মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলেন কমিশনার দাঁড়িয়ে। তাকে দেখেই নিকোলাস দাঁড়াতে নিলে বসতে বললেন মার্ক।
- আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি, নিক। তবুও কেসটা তোমাকে দেওয়ার একটাই কারণ। আমি অন্য কারো উপর ভরসা করতে পারছি না। তোমায় হেল্প করবে জুনিয়র অফিসার স্যামুয়েল।
- আমার কেস ফাইলগুলো লাগবে, স্যার।
- আচ্ছা আমি সেসবের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।
- ধন্যবাদ, স্যার
- তুমি এখন রুমে যাও নিকোলাস। You need rest .........
কমিশনার চলে গেলেন। নিকোলাস আই.সি.ইউ রুমের বাইরে থেকে লুকাসকে আরেকবার দেখে বাসায় চলে আসলেন। বাসাতেও যে লুকাস রেকর্ডটা শুনেছিলেন তা ভুলে গেলেন নিকোলাস। তার শরীর অনেক বেশি খারাপ লাগছিল। তাই তিনি শুয়ে পড়তেই ঘুমিয়ে গেলেন।

***
সকাল মার্কের ফোনে ঘুম ভাঙ্গল নিকোলাসের। কেসটা নিয়ে কথা বলতে নিকোলাস কে রুমে ডেকেছেন তিনি। অনেক বেশিই ঘুমিয়ে ফেলেছেন আজ নিকোলাস। দ্রুত চলে গেলেন মার্কের রুমে। তবে তার আগে নিকোলাস একবার হাসপাতালে গিয়েছেন। অফিসে যাওয়ার পথেই হাসপাতাল। এতে তার একটু সুবিধাই হয়েছে। ডাক্তার কিছু বললেন না, শুধু বললেন আশ্বাস রাখতে।
স্যামুয়েল বসে আছে মার্কের রুমে। তাকে এই কেসে সাহায্য করবে জুনিয়র অফিসার স্যামুয়েল। তার এ নিয়ে কোনো ক্ষোভ নেই। কারণ জুনিয়র অফিসার সাথে থাকলে তাকে দিয়ে খাটানো যাবে, আর নিজে জুনিয়র অফিসার হিসেবে থাকলে খাটতে হবে অনেক।
- স্যার, কোনো কেসফাইলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে?
- সরি, নিক। অনেক খুঁজেও কোনো কেস ফাইল পাইনি।
- তাহলে কি নিয়ে সামনে আগাব!
- সেনাবাহিনীর দপ্তরে ফোন দিয়েছিলাম। তাদের কাছে নাকি লিওনার্দোর বেশ কিছু কেসফাইল আছে। এর মধ্যে একটা হচ্ছে তার সিনিয়র ম্যাসন এর গুমের কেস। একদিন রেগে গিয়ে০ লিও মারামারি বেধে দেয় ম্যাসনের এর সাথে। এত বেশি মারে যে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এ নিয়ে সাসপেন্ডও করা হয় তাকে ছয় মাসের জন্য। কিন্তু এর দুই বছর পর হঠাৎ গুম হয়ে যান ম্যাসন। ধারণা করা হয়েছিল এর পিছনে লিওনার্দোর হাত আছে। তাই এই কেসের প্রধান সাস্পেক্ট তাকে করা হয়েছিল।
- আর কোনো কেসফাইল পাওয়া গিয়েছে এমন?
- বাকিসব ড্রাগ রিলেটেড।
- স্যার একটা প্রশ্ন করব?
- অবশ্যই।
- এমন কোনো কেস আছে কি যেটাতে বাবাও সাস্পেক্ট হিসেবে ছিল?
- হঠাৎ এমন মনে হল কেন?
- আসলে কাল রাতে আপনি ফোন দেওয়ার আগে বাবা ফোন দিয়ে এই টেপ রেকর্ডারটার কথা বলেছিল। একই রেকর্ডার বাসাতেও নাকি বেজেছে। তাই বলছিলাম.........
- মানে তুমি বলতে চাচ্ছ এটা সিরিয়াল কিলিং কেস?
- হতে পারে স্যার। এমন কিছু যেখানে বাবা আর আংকেল লিওনার্দো একসাথে সাস্পেক্ট ছিল। যদি সেটা জানা যায় তাহলে খুনির নেক্সট টার্গেট সম্পর্কেও জানা যেতে পারে।
সেনাবাহিনীর দপ্তরে আবার ফোন দিলেন মার্ক। এটা সম্পর্কে বলার পর তারা পনেরো মিনিট সময় চাইলেন। ফোনটা রেখে মার্ক জিজ্ঞেস করলেন-“তোমার বাবা কেমন আছেন?”
- আগের মতই। এত তাড়াতাড়ি হয়ত তিনি কোমা থেকে ফিরবেন না।
- হাসপাতালে আমি পুলিশ দেওয়ার ব্যবস্থা করব। তিনি নিজেও রেকর্ডটা শুনেছেন মানে টার্গেটে তিনিও আছেন।
- ধন্যবাদ, স্যার।
- তুমি কাজে মন দাও। উপর থেকে অনেক চাপ আসছে কেন আমি কেসটা জুনিয়র অফিসারদের দিলাম। কিন্তু এটা কেও বুঝতে চায় না যে এই জুনিয়র অফিসাররাই এসব কেস সলভ করতে করতে দক্ষ হবে। আমি আর একটাও খুন চাই না, নিকোলাস। আর একটা খুন হলে কিন্তু কেসটা আর আমাদের হাতে থাকবে না।
নিকোলাস চুপ করে আছে। এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল। মার্ক ফোনটা তুলে কিছু একটা শুনে রেখে দিলেন। তারপর নিকোলাসের দিকে ঘুরে বললেন-“এমন কোনো কেস নেই যেটাতে তারা দুইজন একসাথে সাস্পেক্ট। কিন্তু তাদের মতে অনেক মিশনেই তারা দুইজন একসাথে ছিলেন। আর লিওনার্দোর সব কেস ফাইলের কপি রেডি করে রাখবে। কাল আনতে যেতে হবে।”
খবরটা অনেক হতাশ করল নিকোলাস কে। মার্কের রুম থেকে বের হয়ে তিনি স্যামুয়েল কে জিজ্ঞেস করলেন-“ফরেনসিক ল্যাবে কিছু মিলল?”
- না, স্যার। গাড়িতেও কোনো আলাদা ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেই।
- আর রেকর্ডার টা?
- সেটাতেও কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেই।
- আর কোনো ইনফরমেশন?
- জ্বী স্যার। উনার বডিতে অনেক বেশি এলকোহলের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে উনি গাড়ি চালাতে চালাতেও এলকোহল খাচ্ছিলেন। বোতলে উপরের ভাঙ্গা অংশে ছিপি ছিল না। কিন্তু বোতলে আরেকজনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গেছে। সেটা হতে পারে আপনার বাবার। টিম গেছে হাসপাতালে এজন্য।
- কি!
- জ্বী, স্যার। কারণ এই মদের বোতল কালকের পার্টি থেকে নেওয়া বলে সন্দেহ করা হইছে।
- রেকর্ডারটা আমার ফোনে পার করে নিয়ে আসো।
- স্যার, একটা প্রশ্ন করব যদি কিছু মনে না করেন?
- হ্যা,বলো
- আপনার বাবা আর উনার মধ্যে কি কোনো রকম শত্রুতা ছিল?
- কেন বল তো?
- উনি আসছিলেন আপনাদের বাসা থেকে, তার গাড়িতে পাওয়া গিয়েছে পার্টিতে যে মদ ছিল তার মধ্যে একটা, আবার একই রেকর্ডার দুই জায়গাতেই।
- তুমি কি বুঝাতে চাচ্ছ আমার বাবা গাড়িতে মদ রেখে দেন যাতে সেটা খেয়ে লিওনার্দো এক্সিডেন্ট করে মারা যায়?
- হতে পারে স্যার।
- তাহলে উনি কেন কোমায় চলে গেলেন?
- হয়ত লিওনার্দো আপনার বাসায় মৃত্যু ফাঁদ পেতে রেখেছিলেন। কিন্তু ভাগ্য ভাল হবার কারণে উনি বেঁচে গেছেন
কিছু বলতে গিয়েও বললেন না নিকোলাস। তার আগে বাসায় গিয়ে দেখতে হবে বাসার টেপ রেকর্ডারটা। সেটাতে যদি লিওনার্দোর ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া যায় তাহলে স্যামুয়েল যা বলছে তা সত্যি হলেও হতে পারে। বাসায় চলে যায় সে। তারপর তার বাবার রুমে ঢুকে চেক করতে থাকে টেপ রেকর্ডার টা কোথায়। সারা রুম চেক করেও পায়না সে। তারপর ওয়াশরুমে ঢুকে চেক করতেই তার চোখ পড়ে বাথটবের দিকে। একটা কালো গোল ডিভাইস আটকে আছে সেখানে। হাতে গ্লাভস পরে নেয়। তারপর হাতে নিয়ে দেখে সেটা একটা স্পিকারের মত। এটা ব্লুটুথ স্পিকার। সাবধানে সেটা ব্যাগে নিয়ে রুম আবার চেক করতে থাকে। এবার সে রুমের কয়েকজায়গায় পায় স্পিকারটা। রুমের বাইরে এসেও সে কয়েক জায়গায় স্পিকার পায়। মোট পাঁচটা স্পিকার, সবগুলো ব্যাগে রাখে সে। তারপর সেটি পাঠিয়ে দেয় ফরেনসিক ল্যাবে। সাস্পেক্ট হিসেবে দেয় লিওনার্দোর নাম।
কিন্তু না লিওনার্দোর কাছে পাওয়া টেপ রেকর্ডারে লুকাসের ফিঙ্গারপ্রিন্ট আছে, না লুকাসের টায় আছে লিওর ফিঙ্গারপ্রিন্ট। তার মানে কেসটাতে থার্ড পার্সন কেও আছে। কিন্তু অবহেলা করছে সেনাবাহিনী দপ্তর। যা হেল্প চাচ্ছে তা করলেও কেমন একটা অনীহা দেখাচ্ছে কেসটায়।
খুনি একটা ক্লু দিতে চাচ্ছে। কিন্তু সেটা ধরতে পারছে না নিকোলাস। রেকর্ডারটা অন করে বারবার শুনছে সে। কিন্তু এত ছোট রেকর্ডে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। কে হতে পারে! এদিকে তার বাবার কন্ডিশন নাকি একটু ভালর দিকে যাচ্ছে, ডাক্তার ফোন দিয়েছিলেন। নিকোলাস অপেক্ষা করতে চায় তার বাবার সুস্থ হবার জন্য। কারণ সে কিছু বলতে চেয়েছিলেন, যা একমাত্র ভরসা এই কেসটা সলভ করার।

***
আজ উইকেন্ড, নিকোলাস ভেবেছিলেন একটু বেশি ঘুমিয়ে তারপর হাসপাতাল হয়ে অফিসে যাবেন। কিন্তু সেই সুযোগ আর হল না তার। ফোন এসে ঘুম ভেঙ্গে গেল। একটা ডেড বডি পাওয়া গিয়েছে, মেজর স্টিফেনস এর। বুকের বাম পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটা জানা গেছে যে এটা একটা স্নাইপার শট। বুলেট পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক ল্যাবে।
তার পরিবারের সাথে কথা বললেন নিকোলাস। প্রতিটা উইকেন্ডের মত স্টিফেনস সকালের হাঁটা শেষে হোম থিয়েটরে অরচেস্ট্রা শুনছিলেন আর কফি খাচ্ছিলেন। এমন সময় একটা বিকট শব্দ হয়। তারপর তারা এসে দেখেন তিনি পড়ে আছেন সোফাসেটের উপরে। সবচেয়ে অবাক করা কান্ড হোম থিয়েটরে অরচেস্ট্রার বদলে এখনও বাজছে-“Time to revenge my friend. Time to destroy the camouflages...........”
উত্তর পাশের জানালা দিয়ে গুলিটা এসে লেগেছে তার বুকে। গর্ত হয়ে আছে জানালায়। জানালার বাইরে মাঠ, তারপর বিশাল একটা দালান। কাজ চলছে কেবল, তবুও সেটার সিসি টিভি ফুটেজ পাওয়া যাবে কিনা চেক করতে বললেন নিকোলাস।
আরেকটা ফোন। এবার খবর আসল ক্যাপ্টেন লিওন আর ক্যাপ্টেন জ্যাস্পারের ডেড বডির। একই ধরণের খুন, স্নাইপার শট। নিকোলাস এখন মোটামুটি সিউর যে খুনগুলো কোনো আর্মি অফিসার করছে। সবচেয়ে বড় কথা সেখানেও পাওয়া গিয়েছে একটা করে টেপ রেকর্ডার।
এক দুই ঘন্টার ব্যবধানে তিনটা খুনের খবর যখন নিকোলাস কে অনেক বেশি হতাশ আর চিন্তিত করে তুলেছে ঠিক তখনই আরেকটা ফোন আসল। এবার ফোন এসেছে হাসপাতাল থেকে। লুকাস কোমা থেকে বের হয়েছেন। নিকোলাস যেন কিছুটা আশার আলো খুঁজে পেলেন কেসটা নিয়ে।
এবার নিকোলাস আর দেরি করতে চান না। জুনিয়র অফিসার স্যামুয়েল কে তিনি তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে চলে গেলেন হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে লুকাস নেই, নেই তাকে যে ডাক্তার পরিদর্শনে রেখেছিলেন তিনিও। চারপাশে খোঁজ নিলেও কেও বলতে পারলেন না লুকাসের কথা। হঠাৎ আরেকটা ফোন। অচেনা এক নাম্বার। ফোন রিসিভ করতেই ভেসে আসল- “৭৭ নাম্বার স্ট্রিটের পুরাতন ভাঙ্গা বাড়ি। একা আসবে, ফোর্স নিয়ে আসলে তোমার বাবাকে আর পাবে না।”
ফোনটা কেটে গেল.........
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×