
আমাদের গ্রামের বাড়ী সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার অর্ন্তগত গাবুরা নামক ইউনিয়ানের ডুমুরিয়া গ্রামের একপ্রান্তে। সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা ঘনবসতি গাছপালা পরিপূর্ণ একটি আদার্শ গ্রাম। তার সামনে দিয়ে বয়ে গেছে একটি মাধারি আকারে খাল এবং গ্রামরে পিছন দিকে বিশাল আকারের একটি বিল আছে। বিলে সারা বছরে একবার মাত্র ফসল ফলে আর অন্য সময় গবাদিপশুর চারণ ভূমি হিসাবে ব্যবহার করে গ্রামবাসিরা। এই গ্রামেই আমাদের পরিবারে বাবা, মা বড় বোন আমি এবং আমার ছোট ভাই মিলে মোট ৫জনের পরিবারের সদস্য নিয়ে আমার বাবা বসবাস করতেন।আমার বয়স তখন ৮/৯ বছর হবে। আমি মাদ্রাসায় আমার ছোট চাচা মাদ্রাস শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তার মাদ্রাসায়। এর কিছু দিন পর আমাদের গ্রামরে বাজাররে পাশে নতুন প্রাইমারী স্কুল তৈরী করলে সেখানে ভর্তি হলাম আমার মায়ের মাধ্যমে। বাজারে অন্য পাশে একটি মসজিদ আছে। মসজিটি বোরানদিদের মসজিদ নামে পরিচিত। সেখানে আমরা আমাদের শরিকের আরো ৭/৮জন চাচাতো ভাই আরো অনেকে সকালে মক্তব পড়তে যেতাম। প্রাইমারী স্কুল এবং মক্তব পাশাপাশি হওয়ায় আমরা সকলে ভোর বেলায় উঠতাম এবং ভোর বেলায় চলে যেতাম একবার মক্তব এবং স্কুলে প্রস্তুুতি একসাথে নিয়ে পায়জামা পাঞ্জাবী পাজামার নিতে স্কুল ড্রেস পরে বের হতাম। মক্তব পড়া শেষ হলে পাঞ্জাবী পাজাম খুলে ব্যাগে রেখে দিতমা এবং স্কুলে যেতাম। জোহরে আজান হলে বেঞ্চী পাশাপাশি করে জোহরের নামাজ আদায় করতাম অনেকে মিলে। স্কুলের মাঠে বড় বড় ২টি কুল গাছ ছিল। গাছ থেকে পকেট ভরে কুল নিতাম এবং সালাম দিতাম আর কুল দিতাম দিন গুলো অনেক সুন্দর ছিলো। এভাবেই কাটছিল হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে বাড়ীতে ফিরে শুনলাম আমার বড় চাচা ছেলে আর আমাকে হেফজখানায় পড়তে হবে। হাফেজ হওয়ার জন্য । যেমন চিন্তা তেমন কাজ ২ ভাইকে নিয়ে গেল লক্মীখালী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এবং ভর্তি করে দিয়ে আসল। ২ জন কে দুজায়গায় লজিং বাড়ী ঠিক করে দিল হুজুর। মাদ্রাসায় একদিন দুদিন করে আমাদের সময় চলে যাচ্ছিল। পড়াশুনার পরে ২ ভাই মিলে কতরকম আলোচনা করতাম বাড়ীর জন্য মন কান্দে কতদিন পরে বাড়ীতে যাব। কতদিন বাড়ী থেকে আসলাম এবার।
এসব আরো কত কি। বাড়ীতে আসার সময় হলে ২ ভাইয়ের আনান্দ দেখেকে মনে হয় ঈদের আনান্দ বয়ে যায় মনের ভিতরে। আবার ঠিক যখন বাড়ীথেকে ছুটি শেষ হলে বাড়ী থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার দিন এর বিপরীদ হয়। মনে হয় ২ ভাইকে জেলেখানায় নেওয়া হচ্ছে মনের ভিতবে ভাবখানা এমন হয়। বাড়ী থেকে বের হয়ে একটা বিল পার হয়ে যেতে হয়। বিলটা পার হয়ে একটা আলিয়া মাদ্রাসা পড়ে মাদ্রাসায় যেতে। বাড়ী থেকে মাদ্রাসায় আসার দিন বিলটা পার হয়ে আলিয়া মাদ্রাসার বারান্দায় ২ ভাই বাড়ীতে ছুটির দিন গুলো কাটানো কত কথা মনে করে মন খারাপ করে বসে থাকতাম অনেক সময়। পাড়ার সব ছেলে মেয়েরা সব খেলাধুলা করছে আর আমাদের ২ ভাইকে মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে এই সময়। এসব মনে করে মন খারাপ হত অনেক। এরপর আবার হাটা শুরু করতাম ২জন মিলে। হাটতে হাটতে এক সময় মাদ্রাসায় পৌছে যেতাম দুপুরের আগে। এরপর একদিন ২দিন পর আবার বাড়ীর সব কিছু ভুলে আগের মত মাদ্রাসায় দিন পার করতাম। হেফজখানায় পড়াশুনার অনেক চাপথাকে হজুরের বেতের মারখাওয়ার ভয়ে। যখন দিনে দিনে পড়াশুনার অনেক চাপ পড়ল তখন আমার চাচাতো ভাই পড়বে না আর বলে বেকে বসে। এরপড় সে পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়। তার কিছুদিন পড় আমার মাথায় একি ভূত চাপল আমি ও পড়ালেখা বন্ধ করে দিলাম। বাড়ীতে আসলাম আর মাদ্রাসায় যাবনা বলে পোণ করে বসলাম। বাড়ীতে থাকতে শুরু করলাম।
চলবে...................
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



