এশার জামাত শুরু হবে ৮:৩০মি: এখন প্রায় পনে ৮টার দিকে মসজিদ ভরে যায়। ৭:৩০মি: বাসা হতে রওনা দিলে নিচতলায় জায়গা পাওয়া যায়। যদিও লক্ষিবাজার শাহী মসজিদের দুরুত্ব আমার বাসা হতে ৪-৫মি: এর মত।
যখন ৮টা বাজল আর আজান হল, পাশ হতে এক লোক বলে উঠলো “আজানের আগেই ১মতলা ২য়তলা ভরে যায়, মানুষ আল্লাহ মুখি হয়েছে, এটা ঈমানদারের লক্ষন”। বেশ ভাল কথা।
তার কথা শেষ হতে না হতেই সামনে থেকে একজন বলে উঠল “আরে আল্লাহর ভয়ে না, খালি দেখতেন এসি না থাকলে একজনও আগে আসতো না।”
এখন কথা হল, দুজন ব্যাক্তির দৃষ্টিভঙ্গি দুরকমের, এখন আপনি কোনটির পক্ষে যাবেন..??
যে উদ্দেশেই হোক মসজিদে তো আসছে, অন্য কোন বাজে আড্ডায় তো যায়নাই।
রমজান মাসে মসজিদে প্রতি ওক্তের নামাজে পুরো মসজিদ ভরে যায়।আমার শোনা মতে অনেকে নানান মন্তব্য করে যেমন-
-নয়া মুসুল্লি, –মাইসকা নামাজী, - নয়া ইমানদার, -সিজনাল মুসুল্লি, -চাঁন রাইতে চাঁন উঠতে দেরি, নামাজিগো মসজিদ ছারতে দেরি নাই, - রোজার মাস চলি গেল হেতেগো আর টোহাই পাওন যাইতো না। ইত্যাদি…… ইত্যাদি……
আমার মতে থাকনা ভাই-নামাজ না পরেও যদি মসজিদে বসেও খাকে, থাকনা কি এমন ক্ষতি তাতে। তাকে নিরুৎসাহিত করার কি আছে।
যে মালিকের ঘরে আসে সে মালিক তো কিছু বলছে না। আল্লাহ তো বান্দার অপরাধ সহ্য করে, বান্দার জন্য অপেক্ষা করে ।একবার চিন্তা করেন আমরা যে পরিমান গুনাহ করতেছি তাতে আল্লাহ যে আমাদের শান্তিতে রাখছে এটাই তো শুকরিয়া করে শেষ করা যাবে না। সারা জীবনে হাজার কোটি গুনাহ করে তবুও আল্লাহ অপেক্ষা করে তার বান্দা তার ভয়ে মাফ চাবে।বান্দা কোন একটা ভাল কাজ করে কিনা আল্লাহ সেই অপেক্ষা করে ।আল্লাহ শেষ জামানার উম্মতের জন্য বাহানা খুজতে থাকেন।
আজ আমি আপনি বেশি বেশি আমল করে গর্ব করছি, কে জানে আমার সারা জীবনের আমল থেকে হয়ত ঐ ছেড়া টুপি, ছেড়া পাঞ্জাবি পরা লোকের ২ রাকাত নামাজ আল্লাহর কাছে সবচাইতে বেশি দামী।
আমল করা সহজ but আমল নিয়ে কবরে যাওয়া কঠিন।
অনেক অনেক আমল করছি আবার কে জানে কোন গোনাহরে কারনে আমল মাইনাস হইয়া গেছে। এই খবর কি আছে??
কিছুদিন দেখলাম সোস্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হচ্ছে শিশুদের নাকি মসজিদে প্রবেশের কি কি বাধা দেয়া হচ্ছে। শিশুরাই তো এখন দেখে দেখে আমল করার সখ করবে। তাদের দুরে সরিয়ে দিলে তারা ভাল কাজ, ভাল মন-মনসিকতা কোথায় গিয়ে তৈরি করবে?
আরে ভাই আল্লাহর ঘরে সবাই সমান কে গোল টুপি পরছে, কে লম্বা টুপি পরছে, কে আমিন জোর বলে, কে আমিন আস্তে বলে, কার দাড়ি কলপ দেয়া, কে দাড়ি বড় রাখছে, কে দাড়ির বর্ডার কাটল ইত্যাদি…… ইত্যাদি…… এরা হাবিজাবি..
আরে ভাই আমার আমলের মধ্যে এখলাস(আল্লাহর ভয়) কতটুকু আছে এটাই বড় কথা।আমল কবুলের সর্বপ্রথম শর্ত হালাল রিজিক। তার বেলায় কতটুকু ঠিক আছে??
আমরা কতভাবে আমাদের আমল কে নষ্ট করছি আমরা নিজেরাও জানি না। কয়বার হজ্জ করছি, কত টাকা যাকাত দিছি আর হিসাব আছে, অন্য মুসোলমানের হক নষ্ট করছি আমার দান-সদকা, নামাজ-রোজা আর হজ্জ যে কবেই নষ্ট হয়ে আমি গুনাহের গোডাউন ভাড়া কইরা গোনাহ জমাইতাছি তার কি কোন হিসাব আছে????
আসুন পরনিন্দা, পরচর্চা বাদ দিয়ে আমরা কিভাবে ঈমানদ্বার, আমলদ্বার, মোখলেছ, মুজাহিদ, দ্বীনের দ্বায়ী হতে পারি সে চেষ্টা করি।
এই রমজানের আর যে কয়টা দিন বাকি আছে এর পূর্ণ সঠিক ব্যবহার করি। পরের দিকে না তাকিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই, সবাই আসেপাশের মানুষ, সমাজ নিয়ে কিভাবে ভাল থাকতে পারি আল্লাহ যেন আমাদের এই ব্যবস্থাই করে দেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমীন
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৪:৪১