১৬০০ - ১৭০০ শতকের মধ্যে ইউরোপিয়ানদের কিছু অদ্ভুত ব্যবস্থা
(বাথরুম । শরিরের দুর্গন্ধ । বিয়ের অনুষ্ঠান । সেসময়ের স্নান পদ্ধতি । মৃত দেহের সৎকার )
বাথরুম
প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে দেখা যায় এই সুবিশাল প্রাসাদে কোনো বাথরুম নেই। মধ্যযুগে, কোনো টুথব্রাশ, পারফিউম, ডিওডোরেন্ট এবং অবশ্যই টয়লেট পেপার ছিল না। মানুষের মল প্রাসাদের জানালা থেকে বাইরে ফেলা হতো।
এই প্রাসাদে যে চমৎকার বাগানগুলো দেখা যায় সেসময় সেগুলো টয়লেট হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কথাও শোনা যায় । (1)
শরিরের দুর্গন্ধ
আজকের সিনেমায় আমরা সেই সময়ের লোকদের পাখা ব্যাবহার করতে দেখি যা স্বাভাবিক ভাবেই ঘরকে ঠান্ডা করার জন্য নয়, বরং স্কার্টের নিচ থেকে নির্গত গন্ধ কিছুটা দূর করার জন্য ব্যবহার করা হত । শুধুমাত্র অভিজাতদের বাতাস করার জন্য চাকর ছিল, যা একই সাথে শরীর এবং মুখের নির্গত গন্ধ দূর করার জন্য এবং পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হত।(2)
বিয়ের অনুষ্ঠান
মধ্যযুগে বেশিরভাগ বিয়ে জুন মাসে (তাদের জন্য গ্রীষ্মের শুরু) অনুষ্ঠিত হত। কারণ বছরের প্রথম স্নান মে মাসে করা হত। সুতরাং, জুনে মানুষের শরিরের গন্ধ সহনীয় পর্যায়ে থাকত। তারপরও বিয়ের সময় দুর্গন্ধ ছরাতে শুরু করলে কনেরা তাদের সাথে ফুলের তোড়া বহন করত গন্ধ ঢেকে রাখার জন্য। এইভাবেই ব্রাইডাল বুকে-এর উৎপত্তি হয় (2)
সেসময়ের স্নান পদ্ধতি
ঠান্ডার কারণে এবং ঘরে জলের সরবরাহ না থাকার কারণে স্নান করার প্রচলন ছিল না(তখনো হিটার জাতীয় কিছু ব্যবহার করার প্রচলন শুরু হয়নি)। সেসময় স্নান একটি বিশাল টবে গরম জলে করা হত। পরিবারের প্রধানের প্রথমে পরিষ্কার জলে সাঁতার কাটার সুযোগ ছিল। তারপর, জল না বদলিয়ে, বয়স অনুযায়ী বাড়ির অন্যান্য পুরুষ সদস্যের পর মহিলারা এবং অবশেষে শিশুরা। যখন শিশুদের পালা আসত, তখন বাথটবের জল এত নোংরা হয়ে যেত যে এতে একটি শিশুকে হত্যা করা সম্ভব ছিল। (1)
ঘরের ছাদ
ঘরের ছাদ ছিল পুরো ফাকা এবং কাঠের বিমগুলি ব্যবহৃত হত জীবিত কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর এবং তেলাপোকা ঝুলিয়ে রাখার জন্য, যা ঘরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করত। যখন বৃষ্টি হত, ফাঁক দিয়ে জল পড়ার কারণে পশুদের মাটিতে লাফ দিতে বাধ্য করত। যাদের টাকা ছিল তারা টিনের প্লেট ব্যবহার করত।(3)
খাবার
সেই সময়ের স্বাস্থ্যবিধি খুবই খারাপ ছিল। টমেটো অম্লীয় হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে বিষাক্ত বলে মনে করা হত।
স্বাভাবিক একটি ছুটির দিনে প্রাসাদের রান্নাঘরে প্রায় ১৫০০ জনের জন্য আয়োজন করা হত বিন্দুমাত্র স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই। (4)
মৃত দেহের সৎকার
ইংল্যান্ড একটি ছোট দেশ, যেখানে সব মৃতকে সমাহিত করার জন্য সব সময় জায়গা হত না। নির্দিস্ট সময় পর পর ব্যবহৃত কফিনগুলি খোলা হত, হাড়গুলি বের করে নেয়া হত এবং কবরটি অন্য মৃতদেহের জন্য ব্যবহার করা হতো। প্রথম দিকে কফিন খোলার সময় কফিনের ভিতরের ঢাকনায় আঁচড় দেখতে পাওয়া যেত, যেটায় বোঝা যেত যে মৃত ব্যক্তিকে আসলে জীবিত অবস্থায় সমাহিত করা হয়েছিল। (5,6)
এরপর থেকে কফিন বন্ধ করার সময়, মৃত ব্যক্তির কব্জিতে একটি ফিতা বাঁধা হত যা কফিনে একটি গর্ত দিয়ে পার করে বাইরে একটা ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখার প্রচলন শুরু হয়। সমাধির পরে, কেউ কয়েক দিনের জন্য কবরের পাশে পাহারায় থাকত। যদি ভেতরের ব্যক্তিটি জেগে উঠত, তার হাতের নড়াচড়ার ফলে ঘণ্টা বাজার শব্দ বাইরের ব্যাক্তিকে জানান দিত যে ভেতরের মানুষটি তখনো জীবিত আছে। তখন তাকে বাইরে বের করে আনার প্রস্তুতি নেয়া হত । এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক মুভিও আছে।
১৯৩২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় "গ্রেট ইমু যুদ্ধের" সময়, অস্ট্রেলিয়ান সরকার ফসলের ক্ষতি করা ইমুদের মোকাবেলা করার জন্য মেশিনগান সজ্জিত সৈন্য মোতায়েন করেছিল। তবে ইমুরা চতুর এবং চটপটে প্রমাণিত হয়েছিল এবং সৈন্যরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে হিমশিম খাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত, ইমুরা বিজয়ী হয় এবং সরকার যুদ্ধ বন্ধ ঘোষণা করে। এটি ইতিহাসে অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জগুলি কীভাবে উদ্ভূত হতে পারে তার একটি অদ্ভুত উদাহরণ!
(Shakespeare) Hamlet once said to Horatio, “There are more things on heaven and earth, Horatio, than are dreamt of in your philosophy.”
আরও এমন কিছু মজার তথ্য জানতে দেখতে পারেন এখানে
https://www.gouravdey.com/.../unveiling-the-eccentric...
Sources:
1. Click This Link
2. "Clean: A History of Personal Hygiene and Purity" by Virginia Smith
3. "The Age of Comfort" by Joan DeJean
4. "The Time Traveler's Guide to Medieval England" by Ian Mortimer
5. Click This Link
6. https://www.wikiwand.com/en/Safety_coffin
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯