somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহমুদুর রহমান
আমার নাম- মাহমুদুর রহমান।কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করি না।যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করি।নিজের ধর্ম ইসলামকে খুব ভালোবাসি।ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা মানুষকে মানবিক হতে শিখায়,সহনশীল হতে শিখায়,সামাজিক হতে শিখায়।নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি।

খাই খাই স্বভাব ,মন্দ স্বভাব

০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খাওয়ার জন্য বললেই কি খেতে হয়?
এমন প্রশ্নের জবাবে আপনি নিশ্চয়ই বলবেন খাওয়া উচিৎ।আমিও তাতে সহমত কারন এটা সামাজিকতার একটি নিয়ম।একটা সমাজে বাস করতে হলে মানুষের মন রক্ষা করে চলতে হয় মূল্যবোধের প্রতি সম্মান রেখে।এখন ধরুন, একজন ব্যক্তি যিনি আপনাকে প্রতিদিন খেতে বলে আপনি কি প্রতিদিনই তার দাওয়াত কবুল করবেন?এমন প্রশ্নের জবাবে আপনি কি বলবেন?আপনি পারবেন কি প্রতিদিনই তার কাছ থেকে খেতে?এই জায়গায় এসে মানুষ নানান ভাবনা নানান মতে বিভক্ত হয়ে যায়।যেমন-

১-কেউ কেউ মনে করেন ঔ মানুষটার হয়ত অনেক টাকা আছে।তাই তিনি আমাকে খাওয়াতে চান।এতে আমার আপত্তি কেন থাকবে?

২-কেউ কেউ ভাবেন,না করা যায় না কারণ সে যদি অপমানবোধ করে!

৩-অনেকেই মনে করেন আমার পেটে জায়গা থাকলে অবশ্যই খাবো।

৪-খেতে বললে খেতে হয় কারন এটা সুন্নত।

৫-আবার অনেকেই মনে করেন,একজন মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন খাওয়াটা ভীষণ লজ্জার।কারণ আমি মানুষ কোন গৃহপালিত কুকুর নয়৷আমারও উচিৎ তাকে খাওয়ানো।আর সেটা সম্ভব না হলে, আমি নিজেকে তার কাছ থেকে আড়াল করবো কারণ তিনি হয়তো একা খেতে লজ্জাবোধ করেন।নতুবা তিনি সরাসরি বলতে পারছে না যে তার পক্ষে প্রতিদিনই একই কাজ করা সম্ভব নয়।তাই তিনি যখন বলছেন, খাও আমি তখন বলবো নাহ আজ আমার ক্ষুধা নেই।এছাড়াও আরও একটা ব্যাপার হচ্ছে,একজন মানুষ প্রতিদিন তার টাকা আমার পেছনে ঢালার অর্থ আমি অসহায়।

এখন উপরোক্ত ৫টি ধারনার মধ্যে আপনি কোনটিকে মনে মনে লালন করেন?আমার কাছে এক নম্বর থেকে চার নম্বর পর্যন্ত ধারনার অধিকারী লোকেদের জ্ঞানহীন বলেই মনে হয়।আপনার কাছেও সেটাই মনে হবে যদি আপনি একজন বিবেক সম্পন্ন মানুষ হয়ে থাকেন।আমি মনে করি মূল্যবোধ সবার মাঝেই কমবেশী আছে কিন্তু অনেকেই সেটা লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করেন।আর তাদের এই পছন্দই একদিন তাদের অভ্যাসে পরিনত হয়।ফলে তারা ধাবিত হয় অন্ধকারের দিকে।আমার একজন বন্ধুর কথা বলি।জুম্মন।জুম্মন প্রতিদিন একটি ক্যাফেতে আমার সাথে বসে থাকে আর সে অবস্থাতে আমি সব সময় অর্ডার করি নিজের ও তার জন্য।এবং প্রতিটি খাবার সে স্বাচ্ছন্দ্যে আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহন করে।আমার কাছে তার খাবারের ধরন দেখতে খুব ভালো লাগে।কিন্তু সময়ের পালাক্রমে সেটা রুপ নিয়েছে বিরক্তির দিকে।আমি লক্ষ্য করেছি প্রতিদিন যে কয়টা অর্ডার করি কোনটিতে তার না নেই।আমি অবাক হলাম কতদিনের আড্ডা অথচ একদিন নিজ থেকে কোন কিছু খাওয়ার আমন্ত্রন সে আমাকে জানায় নি।আমি একদিন বাধ্য হয়ে জিজ্ঞেস করি,তোমার হাত খরচ কত?সে বলে পাঁচ হাজার টাকার মতন।আমি বললাম সেগুলো কই যায়?সে বলেছিলো, সেটা আমি আমার কাজে খরচ করি।আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করি নি।

বিগত কয়েকদিন যাবত কোন একটি কারনে আমার মন খারাপ।আর তারই ধারাবাহিকতায় জুম্মনকে হুট করে একদিন বলেই ফেললাম,এগুলো ভালো স্বভাব নয়।সে বললো, কোনগুলো? আমি বললাম, যখন মানুষ খেতে বলে আর সবসময় খাওয়ার পক্ষে মত দেয়া।সে প্রতিউত্তরে বললো, এটা আল্লাহর নবীর সুন্নাত।আমার মনে দাবানলের প্রবাহ শুরু হয়ে গেল।আমি বললাম, আল্লাহর রাসূল দাওয়াত কবুল করতেন আর দাওয়াত হলো আমন্ত্রন।আমন্ত্রন হচ্ছে যখন ভালো কিছু রান্না করা হয় আর সেটা ভাগ করে খাওয়ার জন্য কাউকে ডেকে আনা আর এটা অনেকদিনপর একবার।খাই খাই স্বভাব আল্লাহর রাসূলের কখনও ছিলো না আর তুমি ঠিক সেই কাজটাই করো।আল্লাহর রাসূল দাওয়াত কবুল করতেন আবার দাওয়াত দিয়ে মানুষকেও খাওয়াতেন কিন্তু তুমি একটিতেও নেই।আত্মরক্ষার জন্য তখন বন্ধু জুম্মন বলে উঠলো, তুমি যখন খেতে বলো আমি তখন না করতে পারি না।কারন তুমি মনে মনে অপমানও বোধ করতে পারো।আমি বললাম, এটা সুন্দর যুক্তি হলেও এর মাঝে লুকিয়ে আছে আত্মরক্ষা।আর তোমাকে বলতে চাই এই ধরনের আত্মরক্ষা সমীচীন নয় কারন তুমি একজন বিবেকবান মানুষ।একবার দুবার খাও দশটা অর্ডার দিলে দশটাতেই তোমাকে হ্যা বলতে হবে কেন?জুম্মন বললো, তাহলে সেই মানুষটা আমাকে বলবেই বা কেন?কারন তিনি লজ্জাবোধ করেন।জুম্মন বলল, তাহলে তিনি দূরে গিয়ে খাক আমার কি?তিনি দূরে গিয়ে খেলে তুমি মনে মনে ভাববে তিনি তোমার প্রতি কেয়ার করেন না।জুম্মন বললো,তার পেটে ক্ষুধা আছে, আমার পেটে কি ক্ষুধা নেই?আমি বললাম,হুম অবশ্যই আছে কিন্তু তার কিংবা তার বাবার টাকার প্রতি তোমার কোন অধিকার নেই যেমনটা তোমার বাবার সম্পদের প্রতি তার নেই।জুম্মন চুপসে গেল।

আমি তার এই চুপসে যাওয়ার মধ্যে তাকে পাঁচ নম্বরটা বলি যেন সে উপদেশ গ্রহন করে।সমাজে যেন কেউ তাকে খাটো করতে না পারে।কিন্তু জুম্মন শেষ পর্যন্ত চলে যায়।আমি জানি তার মনে অনেক কষ্ট কাজ করছে।কিন্তু আমি মনে করি এটা তার জন্যই কল্যানকর।তার এই কষ্ট একটা সময় ক্ষোভে পরিনত হবে।আর সেই ক্ষোভই তাকে পরিশুদ্ধ করবে ইনশাল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১:২৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×