somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহমুদুর রহমান
আমার নাম- মাহমুদুর রহমান।কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করি না।যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করি।নিজের ধর্ম ইসলামকে খুব ভালোবাসি।ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা মানুষকে মানবিক হতে শিখায়,সহনশীল হতে শিখায়,সামাজিক হতে শিখায়।নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি।

উদ্দেশ্য একটাই, মুক্তি চাই।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দুচোখে ঘুম নেই। প্রতিদিনই কাটছে হতাশা আর ব্যাঞ্জনায়।ভেবেছিলাম হয়তো খুব শীঘ্রই চলমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবো আমি,আমার মত হাজারও মানুষ।এই স্বপ্ন বুকে নিয়ে গ্রামে এসেছিলাম।কিন্তু না।সারা দিন-রাত ঘর বন্দী থাকতে হচ্ছে।সন্ধ্যায় ইচ্ছে হয় একটু দোকান-পাট থেকে ঘুরে আসি।দোকানে গেলে অনেক মানুষ আছে যাদের সাথে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলা যাবে।আর তারই মাঝে একটু খানি স্বস্তি খুঁজে নিবো। কিন্তু না সেটা আর হয়ে উঠছে না।এটাকে বাধ্যতামূলক বলবো নাকি পরিস্থিতির শিকার বলবো আমি জানি না।কিন্তু ঘুরে ফিরে কথা একটাই যাওয়া যাবে না কোথাও। সময় যত গড়াচ্ছে আমার মন ততই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে এই মনটা যেন পাতালের দিকে তলিয়ে যাচ্ছে।হারিয়ে যাচ্ছে সেটার অতল আঁধারে।

মোবাইলে জুম্মন সাহেব আমাকে এ সকল কথাই বলেছিলেন।আমি তাকে বলেছিলাম,আপনি ধৈর্য রাখুন জুম্মন সাহেব।গতকাল যে তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছিলেন আগামীদিন একই তরকারি দিয়ে ভাত খাবেন তার তো কোন নিশ্চয়তা নেই।জুম্মন সাহেব বলেন সেটা অবশ্য ঠিক।কিন্তু মাহমুদ কি করে বোঝাই আমার কাছে এমন পরিস্থিতে ঘরবন্দী হয়ে থাকাটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে ।এক রোগ থেকে রক্ষা পেতে গিয়েকখন আরও কয়টা রোগ এসে দানাবাধে কে জানে!আমি জুম্মন সাহেবকে আর কিছুই বোঝাতে যাই নি। কারন আমার অবস্থা তার মতই। তারপরও একটি মাধ্যম আছে বলে এখনও হাল ছাড়ি নাই।আর সেটা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক , ব্লগ।আল্লাহর দয়ায়, এদুটোই আমার নিত্যদিনের পথচলার সঙ্গী।এখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার আলোকে বিভিন্ন পেশা-শ্রেনীর মানুষ বিভিন্ন ধরনের মতামত প্রদান করে থাকেন। আর সেগুলোর মাঝে নিজের ভাবনাগুলোকে মিলানোর চেষ্টায় মশগুল থাকি।

গত দুইদিন ধরেই মনটা খুব স্থবির হয়ে আছে।পত্রিকায় আজকের শিরোনামগুলো কেমন যেন বিষন্নতায় পূর্ণ।শিরোনামের ভেতর লুকিয়ে থাকা প্রতিটি বিস্তারিত লেখাগুলো দুঃখভরাক্রান্ত আবেগ আর আতঙ্কে ভরা।যেমন- একটা ছেলে আত্মহত্যা করে।কারন ছেলেটির মা বাহিরে যেতে তাকে বাধা দিয়েছিলো।এতে ছেলেটি বড্ড ক্রোধান্বিত হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রন হারিয়ে অবশেষে এই বোকামীপনাটা করে বসে।এতে তার কি কোন লাভ হয়েছে?মাঝে দিয়ে বেচারী মা’কে কষ্টে ফেলে দিল সে।আবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন না মানায় বড় ভাই আর তার বউ মিলে ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে।এখন তারা জেলে।আবার দুজন কৃষক লকডাউনে কিভাবে দিন পার করবে কিভাবে সংসার চালাবে এইভেবে আত্মহত্যা করে।দুধ কিনতে বের হওয়া এক যুবক পুলিশের লাঠির আঘাতে মারা গিয়েছে।আবার একদোকানি মাস্কের দাম কম করে বিক্রয় করায় পাশের দোকানদার তার নাক মুখ ফাটিয়ে দেয়।। আহারে মানুষ!কতটা কষ্টকর এই ঘটনা আর প্রেক্ষাপটগুলো।আমার বড্ড অসহ্য লাগে। গতকাল আবার একজন মহিলা এসিল্যান্ড বাবার বয়সী তিনজন বৃদ্ধলোককে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।কারন তারা ঘর থেকে রোজগাড়ের আশায় বের হয়েছিলো আর তার ওপর তাদের কারোরই মুখে মাস্ক ছিলো না।এদুটোই ছিলো তাদের অপরদাধ।কতটা নিম্ন মস্তিস্কের মানুষ এই মহিলা।তার মুখে ওয়াক থু।

আজ সারা পৃথিবীর মানুষ কত অসহায়!প্রান থাকতেও নিষ্প্রান প্রতিটি চেহারায় এক দিগন্ত মুমূর্ষুতার ছাপ স্পষ্ট।বুকফাটা হাহাকারে পরিপূর্ণ প্রতিটি মন মনন।কেউ কি কখনও ভেবেছিলো গতকাল তারা যেমন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলো আজ তাদেরকে এমন ভয়ানক একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে?আমরা মানুষ।আমরা খুবই আত্মকেন্দ্রিক।এক্ষেত্রে ধনী গরীব কোন ভেদাভেদ নেই।এই বিলাসিতার মাঝে থেকে আমরা নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ হারিয়ে ফেলি কিংবা ভুলে যাই।আমরা ভুলে যাই এই সমাজের নিকট,সমাজের প্রতিটি পেশা-শ্রেনীর মানুষের নিকট আমরা দায়বদ্ধ। হয়তো সামাজিকভাবে নয়তো অন্য যেকোনভাবে।আমরা ভুলে যাই মানুষের প্রতিফল তার কর্মের ওপর নির্ভরশীল।যে যেমন কর্ম করবে সে তদ্রুপ ফল ভোগ করবে।আর করোনা আমার কাছে তেমনি একটি প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে।এটা গোটা বিশ্বকে নিশ্চুপ করে দিয়েছে। ইস্রায়েলের আগ্রাসন,মিয়ানমারের আগ্রাসন,এ আই এস আই এস এর আগ্রাসন,যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন,ভারতের আগ্রাসন সহ সব ধরনের অমানবিক আগ্রাসন থামিয়ে দিয়েছে করোনা।তাই সবরকম ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মানবতার স্বার্থে প্রত্যেকে এখন যার যার অবস্থান থেকে খুঁজে চলেছে মুক্তির সোপান।দিন-রাত এক করে গোটা পৃথিবী একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।সকলের উদ্দেশ্য একটাই , মুক্তি চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৫০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×