পৃথিবীতে যেসব ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয় , দেখা যায় যে তার প্রায় অর্ধেকেরই রেজাল্ট প্রকাশ করা হয় না। একটা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল যখন হয় তখন দেখা হয় যে একটা ড্রাগ বা চিকিৎসা পদ্ধতি ( সার্জারি, বিভিন্ন থেরাপি) এসব কোন একটা মেডিকেল কন্ডিশনের জন্য কতটা কার্যকরী। ট্রায়ালের ফলাফল এই ড্রাগের পক্ষে যেতে পারে আবার নাও যেতে পারে। দেখা যায় যে পজিটিভ রেজাল্টের কোন রিসার্চ পাবলিশ হবার সম্ভাবনা নেগেটিভ রেজাল্টের রিসার্চ এর তুলনায় দ্বিগুণ। একটা রিসার্চ একটা ড্রাগের পক্ষে গেলেই যে সেটা আদতে ভাল তা প্রমাণিত হয় না। এ জন্য একটা বিষয়ে অনেকগুলো রিসার্চ নিয়ে মেটাএনালাইসি নামে একটা ব্যাপার করা হয়। যেটার তুলনামূলক নির্ভরযোগ্যতা বেশি। ট্রায়াল এবং রিসার্চ ব্যয়বহুল একটা ব্যাপার। অনেকক্ষেত্রে ফারমাসিউটিক্যালস কোম্পানীগুলো এসব ট্রায়ালের ফান্ড যোগান দেয়। অবশ্যই তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা বিবেচনায়। একটা ড্রাগ এর বিষয়ে পজিটিভ রেজাল্ট দেখাতে পারলে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা সম্ভব। ২০০৯ এর দিকে প্যানডেমিক সোয়াইন ফ্লুর সময় একটা গবেষণায় দেখা যায় অসেল্টামিভির( একটা এন্টি ভাইরাল ড্রাগ) অসুখের জটিলতা কমাতে সাহায্য করছে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা হয় অসেল্টামিভির স্টক করাতে। অসেলটামিভির নিয়ে দশটা ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছিল যার মাত্র দুইটার রেজাল্ট পাবলিশ করা হয়। প্রায় অর্ধযুগের আইনি লড়াই শেষে বাকি ট্রায়ালগুলোর রেজাল্ট পাবলিশ করা হল এবং সেগুলোর মেটাএনালাইসিসের ফলাফলে দেখা গেল যে অসেল্টামিভির আসলে রোগের উপসর্গ মাত্র একদিন কমাতে সাহায্য করে এবং হসপিটাল ভর্তি কমাতে এর কোন ভূমিকা নেই। ইতোমধ্যে বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা অসেলটামিভির কে তাদের এসেনশিয়াল ড্রাগের লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে যার মানে হল তারা বলছে এই ওষুধটা উপকারী, নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং নূন্যতম সাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য একটা প্রয়োজনীয় ওষুধ।
চমৎকার না ব্যাপারটা?
( সূত্রঃ অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক আর ইন্টারনেট)
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:০৪