ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ বা ডিবি) প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে যে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে ১০ টি স্কুল ও ৬ টি কোচিং সেন্টার জড়িত।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, যে ছয়টি কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্ণমালা কোচিং সেন্টার, মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টার, সাইফুর্স কোচিং সেন্টার, টেক কেয়ার কোচিং সেন্টার ও অ্যাডভান্স কোচিং সেন্টার। এছাড়া জড়িত ১০টি স্কুলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মাণ্ডা আইডিয়াল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল কলোনি হাই স্কুল, মানিকনগর আইডিয়াল হাই স্কুল এবং একই এলাকার মা ও মণি উচ্চ বিদ্যালয়।
একইসঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত অারো ১৯ টি কোচিং সেন্টারের নাম পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে বিজি প্রেসের লোক জড়িত ছিল বা দায়িত্বশীল কেউ অবশ্যই জড়িত অাছে। তা না হলে প্রতি পরীক্ষার অাগে প্রশ্ন ফাঁস হওয়া সম্ভব না।
তবে একটা অাশার খবর যে, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা বিজি প্রেসের সেই কর্মচারী আলমগীর ওরফে আলমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এটিই প্রথম চার্জশিট।
প্রশ্ন ফাঁস কেন করা হয়?
সহজ উত্তর ভাল রেজাল্ট করার জন্য।
অধিকাংশ স্টুডেন্ট, নির্বিশেষে তাদের মা বাবারাও ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পেতে মরিয়া হয়ে যান।
এটা যে কত বড় অন্যায় তা কারো মাথায় থাকে না।
অাচ্ছা, অন্যায় তো অনেকেই করে। সুতরাং অাপনি যদি বলেন অাপনিও অন্যায় করতে পারেন, এমতাবস্থায় অাপনি কি ভেবেছেন এটা কত বড় সর্বনেশে জিনিস!
যে ছেলেমেয়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে ভাল রেজাল্ট করবে তাদের সারাজীবন একটা খারাপ লাগা থাকবে।
তারা জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই কি নিজের কাছেই নিজে ছোট হবে না? নিজের কাছেই নিজে হেরে যাবে না?
তাদের মা বাবাদের ও কি একটা দীর্ঘমেয়াদে খারাপ লাগা কাজ করবেনা?
ভাল রেজাল্ট করলে কী হয়?
ভাল ইউনিভার্সিটিতে চান্স তো পাওয়া যায় না।
একজন ছাত্র গাধা হয়েও ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে চোখ ধাঁধাঁনো রেজাল্ট করল। কিন্তু পাবলিক ভার্সিটির এডমিশন পরীক্ষায় দেখা গেল ইংরেজীতে ৩০ এর মধ্যে পেয়েছে মাইনাস ২,
বাংলায় পেয়েছে ৫।
তাহলে লাভটা হল কী?
গোল্ডেন এ+ নিয়ে শেষমেষ সাধারন ডিগ্রী পড়তে ইগোতে লাগবেনা?
ওকে, মা বাবার টাকা অাছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়বে! সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে অাসবে!
হ্যাঁ সে সার্টিফিকেট ভাতে দিয়ে খাওয়া যাবে কিনা জানি না। তবে এখন চাকরি পেতে গেলে বেসিক ভাল থাকতে হয়।
যে পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে কুতুব হয়েছেন ঐ ক্লাসগুলোর বেসিক জ্ঞানই চাকরি পেতে বেশি কাজে লাগে।
অার পড়াশুনা শুধু যদি হয় সার্টিফিকেট জোগাড় করা তাহলে ঐ পড়াশুনা না করলেই দেশের উপকার।
এতে এটলিস্ট ফি বছর শিক্ষিতের হারের রিয়েল সিনারিওটা পাওয়া যাবে।
যারা ফাঁস প্রশ্নে পরীক্ষা দিচ্ছেন বা যে সব বাবা মা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেতে মরিয়া হয়ে যান অাপনারা এর খারাপ ফলগুলো নিশ্চয়ই পাবেন।
অার যারা প্রশ্ন ফাঁস করে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন তারাও সাবধান।
অাপনাদের ধরা শুরু হয়েছে।