ভোটারদের আস্থা পোক্ত করতে বিএনপি কে স্পেসিফিক গোল সেট করে তা ব্যাপক প্রচারণা করতে হবে। যে গোলটা একটা বাজওয়ার্ডে পরিণত হবে।
মানুষ আওয়ামী দুঃশাষণে বিরক্ত বা ভোটাধিকার দেয়না শুধু এমন ভিত্তির উপর নির্ভর করে বা এমন বক্তৃতা দিয়ে বিএনপির প্রতি জনগনের বিশ্বাস পোক্ত করা যাবে না।
বিএনপির নেতৃবৃন্দ যেসব ভাষণ দিচ্ছে তা খুবই এজ ইউজুয়াল। যেমনঃ
* আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিরোধী দল দমনে লাগামহীন হয়ে পড়েছে: ফখরুল
* বোকা বানাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে: ফখরুল
* নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনরা চেহারা পাল্টিয়ে ভদ্র সাজছে: মির্জা ফখরুল
* সুষ্ঠু ভোট হলে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে: ফখরুল
* সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: রিজভী
* অনর্গল মিথ্যা বলছেন তথ্যমন্ত্রী: রিজভী
* সংবিধান কি বড় পাথর যে সংশোধন করা যাবে না: রিজভী
এই টাইপের ভাষণ হচ্ছে জাস্ট রিএকটিভ কথাবার্তা। এমন ভাষণ দিলে কোন সাধারণ মানুষ বা ভোটার বিএনপির প্রতি ইমপ্রেসড হয় না। এগুলা একরকম হাস্যকর সাধারণ মানুষের কাছে।
সাধারণ মানুষদের মনে জায়গা নিতে বা তাদের ভোট নিশ্চিত করতে বা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দুইটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
১. সলিড গোল বা সলিড কোন প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যা হবে সংক্ষিপ্ত এবং তা মানুষ নিজেদের সাথে রিলেট করতে পারবে।
যেমনঃ আওয়ামি লীগ "ডিজিটাল বাংলাদেশ" "১০ টাকায় চাল খাওয়াবো" এমন কথা ২০০৮ সালে জনগণকে খাওয়াইছিলো। এরপর ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১ এমন বিভিন্ন শব্দবন্ধ তারা জনমনে প্রতিষ্ঠা করেছে। এগুলো এতবার এতভাবে প্রচার হইছে এই কথাগুলোর বিরাট ইমপ্যাক্ট কিন্তু মানুষের মনে পড়েছে। মানুষ কোন কথা যখন বার বার শোনে ও দেখে সেগুলো অবচেতনেই তারা গ্রহণ করে। এভেইলেবিলিটি বায়াসের কারনে এমন হয়।
২. সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে যে প্রবলেম ফেইস করছে সেগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা ও সেগুলো সমাধানে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। প্রতিশ্রুতি ব্যাপকভাপবে প্রচার করা। এটা যেন মানুষের মুখে মুখে হয়ে যায় সেটা নিশ্চিত করা।
সাধারণ মানুষ কী প্রবলেম ফেইস করছে অনেক সময় নেতাদের মাথায়ই থাকে না। না থাকাটা অস্বাভাবিক না। এক পেশার মানুষই অন্য পেশার মানুষের সমস্যা সম্পর্কে জানে না।
যেমন ধরেন ছোট ব্যবসায়ীরা কৃষকদের সমস্যা সম্পর্কে ক্লিয়ার জানবে না। কৃষকরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমস্যা সম্পর্কে জানবে না। গার্মেন্টস শ্রমিকরা পরিবহন শ্রমিকদের সমস্যা সম্পর্কে জানবেনা। অথচ এমন গোষ্ঠীগুলোই ভোটের ফলাফল চেইঞ্জ করতে বড় ভূমিকা পালন করে।
সংখ্যায় বেশি এমন সেক্টরের মানুষদের সমস্যা সম্পর্কে আগে জানতে হবে তারপর সেগুলো সমাধানের ব্যাপক প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
সংখ্যায় বেশি কারা। যেমন ধরেনঃ
কৃষক শ্রেণী
তরুণ বেকার সমাজ
গ্রামের দৈনিক ব্যাসিসে কাজ করা শ্রমিক
পরিবহন ও গার্মেন্টস শ্রমিক
প্রবাসী শ্রমিক
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী
বিএনপির নিজস্ব রিসার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট টিম থাকবে যারা সরেজমিনে খোঁজ খবর নিবে ও প্রত্যেকটি বড় সেক্টরের সমস্যা আইডেন্টিফাই করে সেগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিবে।
বিএনপি এখন যেভাবে কথাবার্তা বলছে ও আগাচ্ছে তাতে বিএনপি আবার নির্বাচনে হারবে বা নির্বাচন আগের মত হবে।
একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। আপনি একই ইনপুটে কখনই ভিন্ন আউটপুট আশা করতে পারবেন না। এজ ইউজুয়াল কথাবার্তা বা খোচা মারা কথাবার্তা বলে রাজনীতির মাঠে বক্তৃতা দেওয়া যায় কিন্তু সাধারণ ভোটারদের নজরে পড়া, তাদের ভালবাসা পাওয়ার জন্য আলাদা কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয়।
যে এজ ইউজুয়াল রাজনীতি বিএনপি ২০০৮ থেকে করে আসতেছে এখনও একইভাবে রাজনীতি করলে আউটপুট ভিন্ন হবে না অর্থাৎ ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনের মত হবে। যদি ২০১৪ ও ২০১৮ এর মত আউটপুট না চান তাহলে ইনপুট ও চেঞ্জ করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:১৯