দেখলাম ধানমন্ডিতে এক ছেলেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পার্কিং থেকে "চাঁদা" নেওয়ার কারণে। যার কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে, তিনিই ভিডিও করে ফেসবুকে দিয়েছেন ও তা ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে আসার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অনুমান।
ঘটনা ভিডিওতে যা দেখা যাচ্ছে সেটাই কিনা, অন্য কিছু আছে কিনা তা আমরা জানি না। সুতরাং এই ব্যাপারে ভালো মন্দ বা ঐ ছেলেরে জাজ করতেছিনা।
আমার আলাপ অন্য জায়গায়। সেইটা বলি।
চাঁদা দিতে বাধ্য করার ব্যাপারে বিএনপির বিরুদ্ধে দূর্নাম আছে। ঐ ছেলের ভিডিও দেখে কনটেক্সটা মনে পড়লো আরকি।
বিএনপি যে চাঁদা দাবি করে ও নেয় তা নিজে প্রত্যক্ষ করি নাই। এলিগেশান আছে সেই ভিত্তিতেই বলা।
বিএনপির বা ছাত্রদলের ছেলেরা যদি আসলেই আবার চাঁদা নেওয়ার কালচার তৈরী করে তাহলে কী হবে সেটা চিন্তা করছিলাম।
এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়, আমার অবজার্ভেশন বিএনপির স্থানীয় নেতা কর্মী তুলনামূলক অশিক্ষিত ও গোয়ার। তারা আইনের প্রতি কম্পারেটিভলী বেশি বীতশ্রদ্ধ। সেমতে তারা অনেক কিছু কেয়ার করে না। ইচ্ছামাফিক অন্যায় করে। অনেকসময় হায়ার অথরিটির কথাও মানে না।
এই দলের মধ্যে যে চেইন অফ কমান্ডে চরম বিশৃঙ্খলা আছে তা তো মাঠ পর্যায়ে এখন দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির যারা নেতা ও সাবেক কর্মী তাদের মন ও মননে আগের বিএনপির রেজিমের সময়টা গেথে আছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়ের কথা বলছি।
সারাবিশ্বে বিশেষত আমাদের দেশে ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে একটা মেজর চেঞ্জ আসছে কমিউনিকেশন ও সোস্যাল মিডিয়ায়। সোস্যাল মিডিয়া এগজিস্ট থাকাকালীন সময়ে পাওয়ারে থেকে রাজনীতি করা আর সোস্যাল মিডিয়ার অনুপস্থিতির সময়ে রাজনীতি করা এক না।
আমার অবজার্ভেশন চাঁদা নেওয়ার কালচার যদি বিএনপির বিপথগামী চ্যালারা ক্ষমতায় এসে প্রতিষ্ঠা করে তাহলে তারা সোস্যাল মিডিয়ায় জনগনের রোষানলে পড়বে, যেটা আপনারা বিভিন্ন ইস্যুতে এখন মাঝে মাঝে দেখছেন।
যে কোন অন্যায় করার সাথে সেটা নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সাথে সাথে বিচার বসতে পারে এবং সেটা নিয়ে জনমত তৈরী হয় এই অভিজ্ঞতা বিএনপির জন্য নতুন। এই যে নতুন দিক তাদের রাজনীতির মাঠে মোকাবেলা করতে হবে এই ব্যাপারে তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে ও সে অনুযায়ী মুভ অন করতে হবে।
সোস্যাল মিডিয়ার এমন এভেইলিবিলিটি না থাকলে বা মানুষের কাছে তথ্যের অবাধ প্রবাহ না থাকলে এবং সহজেই সোস্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত দেওয়া বা সোচ্চার হওয়ার অপশন না থাকলে আওয়ামি রেজিম হয়ত আরও সময় ধরে চলতো। বা অন্যভাবে বললে সোস্যাল মিডিয়া তাদের পতনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।
এমন এভেইলেবল তথ্য প্রবাহের যুগে বিএনপি ক্ষমতায় থাকে নাই।
এটা তাদের জন্য নতুন।
সুতরাং তারা যদি চাঁদা সহ অন্য ব্যাড কালচার ফিল্ডে প্রাকটিস করে যেটা জনগনের স্বার্থের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক তাহলে তাহলে তাদের আপকামিং মসনদ ঢলে পড়বে দ্রূতই। সেটা দুই বা তিন বছরেও হতে পারে।
এই ব্যাপারটাকে বিএনপির নেতৃবৃন্দের সিরিয়াসলি নেওয়া উচিৎ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৭:১৫