আজ ধীরে ধীরে বিশ্বাস ভেঙ্গে পরতে চলছে; আমি ,আমার নিজের প্রতি নিজের যা বিশ্বাস ছিল তা তো বটেই তার সাথে সাথে বন্ধু-বান্ধব সকলের প্রতি যেটুকু বিশ্বাসের তলানি অবশিষ্ট ছিল তাও হারিয়ে ফেলছি । আজ কোন কিছুতেই যেন বিশ্বাস করার মতো কিছুই খুজে পাই না।মনে হয় আমি যেন অবিশ্বাসের এক বিশাল সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছি। মনে হয় শ্বাস নেবার জন্য বাতাসকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। কিন্তু একসময় তো আমার কাছে হিসাবটা এতো জটিল ছিল না।সবকিছুই তো স্বাভাবিক ছিল আমার কাছে।
হ্যাঁ তখন তুমি ছিলে আমার কাছে, তাইতো উন্মুক্ত আকাশে আমি প্রান খুলে শ্বাস নিতাম।আকাশের বিশালতা যখন নীলিমায় বিলীন হয়ে যেত,আমি সেই বিশালতার মাঝে হারিয়ে জেতাম,সেই নীলিমার মাঝে তোমার ছবি আঁকতাম। যখন ঠাণ্ডা বাতাসের মাঝে মেহেদী পাতার গন্ধ ভেসে আসত,আমি সেই মেহেদী পাতার গন্ধের মাঝে তোমার চুলের গন্ধ অনুভব করতাম। যখন বৃষ্টি নামত , আমি সেই বৃষ্টির জল ছুঁয়ে তোমাকে বলতাম " একটু বৃষ্টির পানি ছুঁয়ে দেখবে"? কারন আমি সেই জলের স্পর্শের মাঝে তোমার স্পর্শ খুজে ফিরতাম। যখন টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতাম তখন সেই বৃষ্টির সঙ্গীতের মাঝে তোমার হাসির সদৃশ খুজে পেতাম।সমুদ্রের গর্জনের মাঝে তোমার ডাক শুনতে পেতাম। গাছের পাতার রিনিঝিনি শব্দের মাঝে তোমার হাতের কাঁচের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দের এক অদ্ভুত মিল খুজে পেতাম।
একদিন তুমি আমায় বলেছিলে,"তোমাকে না পেলে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। আমাকে সেদিন চিরনিদ্রার জন্য কবরে ঘুমাতে হবে।সে ঘুম থেকে কেউ আমাকে জাগাতে পারবে না।সেদিন শুধু তুমি আমার কবরে একগুচ্ছ ফুল দিয়ে যেও। অবশ্যই তোমার প্রিয় রজনীগন্ধা দিও। একজনকে ভালবেসে তাকে পাবনা ,এই হিসাবটা আমার কাছে অনেক জতিল।তাই ফুলসজ্জার রাতে তুমি ছাড়া অন্য কোন পুরুষ আমি কল্পনাও করতে পারি না। প্লিজ সোনা কখনও আমাকে ছেড়ে যেও না যেন । তাহলে আমি বাচব না।"
কিন্তু আজ সেই তুমিই আমাকে ছেড়ে চলে গেছো। চলে গেছো অন্য কারো হাত ধরে। তোমার ফুলসজ্জার রাতে ভিন্ন কোন সঙ্গী তোমার পাশে ছিল।কই তোমার শাস-প্রশাস তো বন্ধ হয়নি?বরং আমার শাস-প্রশাস বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে কয়েকবার।একজন কে ভালবেসে অন্য মানুষের ঘর করার মতো জটিল সমীকরণ করতে তো তোমার একটু ও কষ্ট হয়নি?বরং অন্য কাউকে সঙ্গী হিসাবে তো আমিই খুজে নিতে পারিনি আজও।
এখন আমার সময় কাটে পরম একাকীত্ব আর চরম অশান্তির মাঝে। নির্ঘুম কত রাত যে আমার কেটে যায় তোমায় ভেবে ভেবে। সেই নির্ঘুম রাতগুলো শেষ একাকী শহীদ মিনারে বসেথেকে নতুবা এস এম এস হল এর ছাদে অথবা আমার প্রিয় গোলচত্তর বা পুকুরপাড়ে অথবা মাঠে ।কখনও সময় কাটে অন্ধকার রাতের সাথে গল্প করে। নতুবা চাঁদনী রাতের শোভা দেখে। কখনও বা শিশিরবিন্দুর সাথে গল্প করে।
এখন সিগারেট অনেক বেশী খওয়া হয়,কারন আমি সেই উষ্ণতার মাঝে তোমার ঠোঁটের উষ্ণতা অনুভব করতে চাই। এছাড়াও একটা কারন এখন আর তোমার মতো করে আর কেও সিগারেট খেতে নিষেধও করে না। এখনও আমি বাতাসের মাঝে মেহেদিপাতার গন্ধ খুজে ফিরি। কারন তাতে তোমার চুলের গন্ধ মিশে আছে।তারপর নতুন একটা দিন শুরু করি তোমার কল্পনায়। কিন্তু দিনশেষে ............ সবকিছুই বৃথা হয়ে ফিরে। তাইতো আজ কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। কারন তুমি যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়ে চলে যেতে পারো। তাহলে আর কাকে বিশ্বাস করব?আমাকে দেয়া একটা কথাও তুমি রাখনি। তাহলে কি এই দুনিয়ার সবকিছুই মিথ্যা ? তবে কি চার্লস মিত্থা?বিচার মিত্থা?বিচারক মিথ্যা?
জানি তুমি আর কোনদিনও আমার হবে না।জানি তুমি আর কোন জোছনা রাতে চাঁদের আলো আমার সাথে উপভোগ করবে না।কনদিন রাতে আর আমার জন্য জেগে অপেক্ষা করবে না।তবুও জানতে ইচ্ছা করে,জোছনা ধোয়া কোন রাতে বা বৃষ্টি ভেজা কোন দুপুরে একবার ও কি বিষণ্ণ মনে আমাকে স্মরন করবেনা?আমার দিন এখনও কাটে তোমার কল্পনায়।বাতাসে মেহেদী পাতার গন্ধ পেলে এখনও আমি জোরে করে শ্বাস নিয়ে তোমার চুলের গন্ধ অনুভব করার চেষ্টা করি। জোছনা ভেজা রাতে আমি এখন ও তোমার কথা ভেবে বিষণ্ণ হই, কষ্ট পাই । যদিও জানি তুমি আর কোন দিনই আমার হতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




