প্রতারণার শেষ ফল ভালো হয় না =
মাত্র বিশ বছর বয়সেই এইচএসসি পাশ কালাম পরিবারের হাল ধরতে চলে গেলেন মিডলইস্টের এক দেশে। অসম্ভব পরিশ্রমী মানুষ। কিছুদিন চাকুরী করে ছোটখাট একটা ব্যবসা শুরু করলেন সেখানে। ব্যবসায় উন্নতি হলো। প্রায় বারো বছর একটা টানা বিদেশ করার পর দেশে এসে বিয়ে করলেন এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর মেয়েকে। দেশে থাকতে ওই ব্যবসায়ীর সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। বিয়ে করে বউ দেশে রেখে যুবক কালাম আবার বিদেশে পাড়ি জমালেন।
মেয়ের মাধ্যমে নতুন জামাই'র সহায়তায় শ্বশুর বাংলাদেশে তাঁর ব্যবসার পরিধি আরো বাড়ালেন। এক পর্যায়ে কন্যাকে দিয়ে কালামের কাছে প্রস্তাব দিলেন একটা প্লট কিনে সেখানে ভবন করতে। কয়েকবছরের চেষ্টায় একটা পাঁচতলা ভবনও কালামের অর্থে নির্মাণ করা হলো। নিজ টাকার পাশাপাশি কালাম এ কাজে ব্যাংক হতেও বিস্তর লোন নিলেন। ভবন নির্মাণ হয়েছে শ্বশুরের তত্বাবধানে।
কথা ছিল ভবনটির মালিকানা হবে কালাম এবং তাঁর স্ত্রীর। কিন্তু, বাস্তবে দেখা গেলো শ্বশুরের নামও মালিকানায় যুক্ত হয়েছে। ফলে, শ্বশুরের অপর তিন সন্তানও আইনগতভাবে এ ভবনের অংশীদার হয়ে যায়। অথচ, পুরো অর্থই কালামের। এমন কিছু ঘটবে কালাম স্বপ্নেও ভাবেননি।
ঘটনা জেনে কালাম ভেঙে পড়েন। একসময় হতাশায় ব্যবসা বেচে দিয়ে দেশে ফিরে এলেন। টানা ছয় বছর দেশে তিনি। একপ্রকার গৃহবন্দী। মানে, ঘরের বাইরেও যান না তেমন। রীতিমতো মানসিক রোগী। আর, এ ছয় বছরে শ্বশুরের কি অবস্থা হয়েছে জানেন? একমাত্র কালামের স্ত্রী ছাড়া অন্য তিনসন্তান একেএকে ক্যান্সারাক্রন্ত হলে দেশে বিদেশে তাদের চিকিৎসার খরচ জোগাতে তিনি অনেকটাই পথের ফকির। প্রতারণা ও শোষণের শেষ ফল দেখলেন তো?
পরিবারটির দুরাবস্থা সইতে না পেরে স্ত্রীর অনুরোধে গেল সপ্তায় কালাম আবারো বিদেশ পাড়ি জমালেন।
[পুনশ্চঃ সত্য ঘটনা; তবে, ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।]
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:১৮