স্কুলে পড়াকালীন আমার এক সহপাঠী-বন্ধু ছিল। বড়োলোকের ছেলে। কারে (car) চড়ে স্কুলে আসতো। কারের ড্রাইভার ছিল অল্পবয়সী এক তরুণ। ওই তরুনের কাছে কিছু 'বই' ছিল। বই না বলে চটি বলাই ভালো। আমার স্কুলের সহপাঠীদের যারা আমার সাথে ফেইসবুকে কানেক্টেড তাদের এ বিষয়টা ভোলার কথা নয়।
বন্ধুর সাথে ড্রাইভারের অতিশয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে 'বইগুলো' সেও পড়ার সুযোগ পেতো। সে আমাদের আরো কয়েক বন্ধুর সাথে এই অতি গোপন বইগুলোর কথা শেয়ার করায় আমাদের অনেকেই ওই বন্ধুর ভক্ত হতে হতে রীতিমতো বন্ধুসভা তৈরী হলো। ধীরে ধীরে বইগুলোর চাহিদা বেড়ে হলো আকাশচুম্বী। ড্রাইভার সমানে ওই বইয়ের কপি বিক্রী করতে লাগলো আড়ালে।
আমি মূল বই না পেলেও বইয়ের অংশবিশেষের ফটোকপি পেয়েছিলাম। খুব সম্ভব তখন আমরা ক্লাস এইটে পড়ি। তবে এই বইয়ের বিশেষত্ব হলো, এগুলো এতটাই রসালো ছিল যে বইগুলো পড়াকালীন নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মনে হতো। মনে হতো, অনেক বড়ো হয়ে গেছি। আমার ধারণা, এ ধরণের বই গ্রন্থমেলায় বিক্রির যোগ্য বিবেচিত হলে এগুলোই সর্বাধিক বিক্রিত বই বিবেচিত হতো। ...
সেই থেকে শিখেছি, বই বিক্রির সংখ্যা যে সবসময় বইয়ের কোয়ালিটি নির্দেশ করে তা কিন্তু না। আপনি একটা সিন্ডিকেট তৈরী করে যে কোন পণ্যের মতো বই বিক্রির সংখ্যাও বাড়াতে পারেন। এছাড়া আজকাল অনেকে কালো টাকা সাদা করতেও নাকি বই বিক্রির সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে বলেন।
তাই, বই কিনুন লেখার মান দেখে, বিজ্ঞাপনের মাত্রা বা, কে লিখেছেন তা দেখে নয়। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে দু'তিন পৃষ্ঠায় চোখ বুলালেই কোয়ালিটি বুঝা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:০৪