somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে আমার নিজস্ব মূল্যায়ন

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদেশে বসে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে আমি যেটুকু বুঝতে পেরেছি তা প্রিয় পাঠকবৃন্দের সাথে শেয়ার করি। আপনারা আমার সাথে দ্বিমত করতেই পারেন, তাতে সমস্যা নেই।

১। কিছু কেন্দ্রে ভোট সুষ্ঠূ হয়েছে বলা চলে। এসব কেন্দ্রে নৌকার যেসব প্রার্থী ছিলেন তাঁরা আওয়ামীলিগের হাইকমান্ডের আস্থা হারিয়েছেন কোন না কোনভাবে, বা এসব প্রার্থীরা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নন। ফলে, তাঁদের জেতা না জেতায় দলের উচ্চ পর্যায়ের তেমন আগ্রহ ছিল না। বলা বাহুল্য, এ ধরণের কয়েকটি কেন্দ্রে কোন ভোটই পড়েনি।

২। সিংহভাগ কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীকে জেতানোর জন্য যা যা করা দরকার সরকার বা তাদের অনুগত প্রশাসন তাই করেছে। এমনকি অবুঝ শিশুদেরও ভোট প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়েছে এসব কেন্দ্রে।

৩। বিরোধীদল সৃষ্টির প্রয়োজনে কিছু আসন স্বতন্ত্র বা ভিন্ন দলকে ছেড়ে দিতে গিয়ে সেখানে তাঁদের জেতাতে যা করা দরকার সরকার বা প্রশাসন তাই করেছে।

মোটকথা, ভোটানুষ্ঠান ছিল পুরোপুরি সাজানো। এখানে ছকের বাইরে কিছু ঘটেনি।

প্রশ্ন হলো, একদলীয় এ নির্বাচনের প্রয়োজন ছিল কি?

উত্তর: সংবিধান রক্ষার প্রয়োজনে নির্বাচন অবশ্যই দরকার ছিল। তবে, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন হলে খুবই ভালো হতো। প্রধান বিরোধী দল, বিএনপি'র নির্বাচন বর্জনের কারন কিন্তু এটি। ১৯৯৬ সালে সব দল মিলে সিদ্ধান্তে এসেছিলো পরবর্তী নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়কের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, যা থেকে আওয়ামীলীগ সরে এসেছে। সমস্যা সেখানেই।

সম্পর্কিত প্রশ্ন: আওয়ামীলীগ কেন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন করলো না?

উত্তর: এর কারণ একাধিক। সবচেয়ে বড়ো কারণটি হলো, এ সময়ে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগের পরাজয়ের সম্ভাবনা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। তেমন কিছু হলে নেতানেত্রীদের অনেকে দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগও হয়তো পেতেন না। এ ঝুঁকি তাঁরা নিতে চাননি।

তাহলে দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কি?

গণতন্ত্রের খোলসে চলমান একদলীয় শাসন খুব দ্রুতই বিদায় নিচ্ছে না বলা চলে। দেশের প্রধান বিরোধীদল, বিএনপি, ধারাবাহিকভাবে কূটনৈতিক অদক্ষতা বা অনভিজ্ঞতার পরিচয় দেয়ায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় জাতিকে আত্মসমর্পণ করতে হলো, এটাই এ সময়ের বাস্তবতা। অন্য ভাষায়, আওয়ামীলীগ কূটনৈতিক দক্ষতায় বিএনপির চেয়ে অনেক এগিয়ে। দলটি নিজেদের প্রয়োজনে যেভাবে কিছু পরীক্ষিত (বিদেশী) বন্ধু তৈরী করতে পেরেছে তা বিএনপি পারেনি।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে কিছু নির্ভরযোগ্য বিদেশী বন্ধু থাকতেই হয়। ক্ষমতায় গিয়ে কেবল নিজেদের আখের গোছানোর চিন্তায় মগ্ন থাকলেই চলে না, পরবর্তীতে কিভাবে ক্ষমতায় আসতে হবে সে চিন্তাও মাথায় রাখতে হয়।

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কি দেশের চেহারা বদলে যেত?

এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। তারাও সম্ভবতঃ তত্ত্বাবধায়কের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানে ফিরে যেত না। কারণ, কোন সরকার অগ্রহণযোগ্য বা খারাপ কাজের নমুনা রেখে গেলে পরের সরকার তা সংশোধন করে নেয় এমন দৃষ্টান্ত বাংলদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দেখা যায় না। যেমন, বিএনপি কুখ্যাত RAB পয়দা করেছিল, যা আওয়ামীলীগ বিলুপ্ত করেনি নিজেদের প্রয়োজনে।

তাহলে আওয়ামীলীগের পরিবর্তনে দেশের লাভ কি?

লাভ হলো, চেক এন্ড ব্যালেন্স। অর্থাৎ, নিয়মিতভাবে সরকার পরিবর্তন হলে এক দলের ভয়ে অন্য দল ক্ষমতা চর্চায় কিছুটা হলেও সংযমের পরিচয় দেবে; যার সুফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ।

আবারো বলছি, উপরের পর্যবেক্ষণ আমার একান্ত নিজস্ব ভাবনা। এর সাথে আপনাকে একমত হতে হবে কথা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০২
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।"

লিখেছেন এমএলজি, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৩০

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।" বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ কাজটি করা হয়নি বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।

বিষয়টি সত্য কিনা তা তদন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৪

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

ইয়াতিমদের সাথে ইফতার অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া, ছবি https://www.risingbd.com/ থেকে সংগৃহিত।

তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রীও তিনি। তাকেই তার বৈধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বছরশেষের ভাবনা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮


এসএসসি পাস করে তখন একাদশ শ্রেণিতে উঠেছি। সেই সময়ে, এখন গাজায় যেমন ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে, তখন বসনিয়া নামে ইউরোপের ছোট একটা দেশে এরকম এক গণহত্যা চলছিল। গাজার গণহত্যার সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উৎসর্গ : জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৮



খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল “হাঁসজারু” কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে—“বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।”
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা—
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×