বাংলাদেশের জন্ম হয় ১৯৭১ সালে যার লক্ষ্য ছিল মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা।এই দেশের মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার বন্ধের জন্য নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন দেশকে ভালবাসে এমন প্রতিটি মানুষ।এদের অনেকে শহীদ হয়েছেন আর অনেকের দূর্ভাগ্য হয়েছে বেঁচে থেকে দেখার, কীভাবে তাদের সপ্ন গুলোকে খুন করা হচ্ছে একের পর এক।তাদের এক অংশ জীবন যুদ্ধের কষাঘাতে বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি।
যারা সপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন একটি স্বাধীন দেশের, তাদের মৌলিক চাহিদাটুকু মেটানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি দেশটির জন্য আজও। এদের একজন দীলিপ,ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে তার দেখা মেলে।তার বুকে ঝুলানো কাগজটিতে লিখা “ আমি যুদ্ধাহত একজন মুক্তিযোদ্ধা। আজ আমি গান গেয়ে পেটের ক্ষুধা মেটাই।দয়া করে একটি গান শোনাবার সুযোগ দিন। নিবেদক- দীলিপ।”তিনি ১১ নম্বর সেক্টরে শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধকরেন। তাকে প্রশ্ন করে জানা যায়, তিনি নিয়মিত পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, তবে তা দিয়ে তার নিজের খরচই চলে না। তবে রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে যাআয় হয় তা দিয়ে চলে যাচ্ছে ভালোই।মানুষ তাকে দয়া করে যা দান করে তাইতার আয় এর উৎস, সাথে আছে সরকারের বরাদ্দ নামমাত্র ভাতা। তার পরিবারের সদস্যছয়জন। তিনি একমাত্র সদস্য যার উপার্জনে নির্ভরশীল অন্যরা। ভালভাবে চললেও তিনি তার সন্তানদের শিক্ষা গ্রহনের পথ সহজ করে দিতে সক্ষম হননি। সন্তানদের কেউ এখন গাড়ির গ্যারেজে কাজ শিখছে, কেউ এখনও সক্ষম নয় তা শেখার জন্যও। দেশ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করে জানা যায় ওগুলো শিক্ষিত মানুষদের, জ্ঞানী মানুষদের চিন্তার বিষয়। যে তার জীবন যুদ্ধে এখনও পরাজিত প্রায়, তার ভাবার বিষয় ওগুলো নয়।
বাংলাদেশের একজন সূর্যসন্তান আজ গান গেয়ে মানুষের দয়ায় পাওয়া এক-দুই টাকা দিয়ে তার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে চলেছেন।অপরদিকে বাংলাদেশ সরকার আজ বিচার করছেন মানবতা বিরোধী অপরাধের। সেখানে তাদের বিচার করা হচ্ছে যারা এই মুক্তিযোদ্ধাদের উপর, তাদের পরিবারের উপর অত্যাচার করেছে।অনেক অর্র্থ ব্যয় করে গড়ে তোলা হয়েছে সে অবকাঠামো যেখানে সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। তবু কখনও এই সূর্য-সন্তানদের প্রতি অন্যায় এর বিচরে গঠিত হয়নি কোন বিচার ব্যবস্থা। এদের অধিকার আদায়ে কখনো গড়ে ওঠেনি গণজাগরণ মঞ্চ। কেউ চিৎকার করে বলেনি “ ছিঃ ছিঃ তুই সরকার, তুই সরকার”। তাহলে দেশের এই সূর্য সন্তানের সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার বিচার কী হবে? কে দাড়াবে সেই আদালতে অপরাধীর কাঠগড়ায়? দেশের সতের কোটি মানুষ নাকি সেই শিক্ষিত ও জ্ঞানী মানুষেরা যারা দেশ পরিচালনা করছে এবং দেশ নিয়ে চিন্তা করছে।
সরকারের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেশকে প্রকৃত ভালোবাসা এই মানুষগুলোর মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে তাদের উন্নতমানের জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে কখনও সম্ভব নয় দেশকে কলঙ্ক মুক্ত করা।তা না হলে অতীত ও ভবিষ্যত দুই প্রজন্মের কাছে অভিশপ্ত হয়ে থাকবে বাংলাদেশের বর্তমান দায়ীত্বশীল ব্যক্তিবর্গ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:০৮