somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আমিই সাইফুল
একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

বিজ্ঞানের মতে আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য আপনি যে সেরা চারটি জিনিস করতে পারেন।

২১ শে জুন, ২০২১ সকাল ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আচ্ছা আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন ভিবিন্ন খেলনা আপনার সন্তানের মস্তিস্কের জন্য ভালো কিনা? বা মস্তিস্কের বিকাশে গান কিংবা আপনার মুখের কথা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে? অবশ্যই করেছেন হয়ত। আর এ চিন্তা আপনি একা করেননি! পৃথিবীর ভিবিন্ন প্রান্তের মানুষ এটা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভাবে। এই যেমন আমি বাবা না হয়েও এ বিষয়ে পড়ার আগ্রহ খুজে পাচ্ছি। তো যাই হোক আজকে আমি ৪ টা বিষয় শেয়ার করবো যেগুলো আপনার সন্তানের বিকাশকে সহজতর এবং গতিশীল করে তুলবে।

1. যতটা সম্ভব বাইরে খেলতে দিন।

আচ্ছা কখনো কি ভেবে দেখেছেন একটা বনের পশুর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ কোনটা। আমাজনের জংগল নাকি আমাদের ঢাকার চিড়িয়াখানা? চিড়িয়াখানা অবশই না নিশ্চই। তাহলে আমাদের সন্তানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ কি হতে পারে? এক্ষেত্রে দুইটা বিষয় হয়ত আপনার মাথায় আসবে খেলা আর প্রকৃতি। এগুলি একটি শিশুর মস্তিষ্কের প্রত্যাশা, এবং একটি শিশুর বিকাশের প্রয়োজনীয় অংশ। এটাই আমাদের সন্তানের জন্য সবচেয়ে স্ট্যান্ডার্ড পরিবেশ।

কিছুদিন আগে কোন একটা গভেষনায় যেন দেখলাম, যে বাচ্চারা তাদের চারপাশে সবুজ জায়গা নিয়ে বেড়ে ওঠে মানে যেটাকে আমরা গ্রাম্য পরিবেশ বলি আরকি। সেসব শিশুদের পরবর্তী জীবনে মানসিক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৫৫% কমে যায়। এবং এদের মস্তিষ্কের বিকাশ দ্রুত সময়ে হয়।

আরো একটি গভেষনায় দেখা গেছে বাহিরে খেলাদুলা বাচ্চাদের ADHS হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। ADHS মানে Attention deficit hyperactivity disorder(এক ধরনের মানসিক রোগ যা শিশুর উচ্চ রক্তচাপ এবং ইম্পালসিভ আচরণের কারণ হতে পারে।)

আর বাহিরে খেলাদুলা বাচ্চাদের মেজাজের জন্যও ভালো। সারাক্ষন বদ্ধ পরিবেশে থাকলে এমনিতেই বাচ্চাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তাই যতটা সম্ভব বাচ্চাকে বাহিরে খেলতে দিন।

২. খেলনা এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ন্ত্রনে রাখুন।

যদিও শিশুরা প্রযুক্তি থেকে নতুন নতুন জিনিস শিখতে পারে কিন্তু গভেষনায় দেখা গেছে শিশুর বিকাশে প্রযুক্তি নিগেটিভ ইফেক্ট ফেলতে পারে। ইলেকট্রনিক স্ক্রিন যেমন ফোন, ট্যাব, টিভিতে আপনার শিশু কতক্ষন সময় দিচ্ছে এবং সে কি ধরনের ভিডিও বা শো দেখছে কিংবা কি ধরনের গেমস খেলছে সে দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। এবং যেকোনটা তাদের নেশায় পরিনত হওয়ার আগেই নিয়ন্তনে আনতে হবে।

৩। শিশুর বন্ধু হয়ে উঠুন

এটি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন । গভেষনায় দেখা গেছে মা বাবার সাথে একটি ভালো সম্পর্ক সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আর এটা শুধু মানষিক নয় বরং শারীরিক বিকাশেও সহায়তা করে। ড ওয়াল্ডিংগার একবার টেডের আলোচনায় বলেছিলেন, একটি ভালো সম্পর্ক শুধু আমাদেরকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেনা বরং এটা ব্রেনকে রক্ষ্যা করে এবং একাকীত্ব দুর করে। একাকীত্ব স্মোকিং কিংবা নেশার চেয়েও বেশি খারাপ হিউম্যান লাইফের জন্য।

৪। আপনিই আপনার সন্তানের জন্য সেরা ‘খেলনা’

সন্তানের সাথে কথা বলা, গান গাওয়া, তাকে জড়িয়ে ধরা তার সাথে ভিবিন্ন বিষয়ে কথা আলোচনা করা তাকে শিখতে এবং বড় হতে সাহায্য করে। মজার বিষয় কি জানেন? ইদুর নিয়ে একদল গভেষক রিতিমত গভেষনা করে ফেলেন। গভেষনায় দেখা যায়, যেসব ইদুরকে মা ইদুর বেশি আদর করে, গায়ে লেগে থাকে, মুখ দিয়ে আদর করে দেয় তাদের গ্রোথ অন্যান্য ইদুরের চেয়ে বেশি হয় এবং এরা অন্য ইদুরের তুলনায় চালাক হয়।

সুতরাং, আপনার সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে উঠার পরিবেশের একটি প্রয়োজনীয় অংশ হচ্ছেন আপনি নিজে আর এটা কোনভাবেই ভুলে যাবেন না। তারা শুধু আপনার সাথে থাকা থেকে অনেক কিছু শিখবে। কথা বলা, হাটা, খাওয়া প্রত্যকটা জিনিসই আপনার বাচ্চা আপনার কাছ থেকে শিখবে। তাকে নিয়ে গান গাওয়া, ছবি আকা , ধর্ম চর্চা করা এসব আপনার সন্তানকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।

পরিশেষে বলতে চাই, উপরের সব গুলি জিনিস করা প্রয়োজন এটা মনে করবেন না। আপনার বাচ্চাদের দরকার আপনাকে, বন্ধু, স্বাস্থ্যকর খাবার, কিছুটা তাজা বাতাস এবং অবাধে খেলাদুলা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০২১ সকাল ৮:৫১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×