somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আমিই সাইফুল
আমি একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের ঝড়-ঝাপটায় পাক খেয়ে গড়ে ওঠা আজকের এই আমি। ব্লগে তুলে ধরি মনের গভীরে লুকানো আবেগের রং, যা সোশ্যাল মিডিয়ার চটকদার আলোয় মেলে না। আমি অনুভূতির এক ফেরিওয়ালা, শব্দে বুনে যাই জীবনের অলিখিত গল্প…

ব্যারিস্টার সুমন ও চুনারুঘাটবাসীর দায়বদ্ধতা: পাপ-পূণ্যের হিসাব

২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চুনারুঘাটবাসীর জীবনে ব্যারিস্টার সুমন এক উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি কেবল আইনের মানুষই নন, সমাজসেবক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর প্রভাব চুনারুঘাটসহ সিলেট অঞ্চলে সুদূরপ্রসারী। তিনি উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজের সময়, শ্রম, এবং মেধা উৎসর্গ করেছেন। তাহলে এমন একজন ব্যক্তিকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে এর পেছনের কারণগুলোর মূল্যায়ন করা কি চুনারুঘাটবাসীর দায়িত্ব নয়?

ব্যারিস্টার সুমন একজন সমাজসেবক হিসেবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ নির্মান, স্বাস্থ্য সেবায় ভূমিকা—এই সব কিছু তিনি করেছেন তাঁর নিজস্ব প্রচেষ্টায়। তবে মানুষের জীবনে কিছু ভুল-ত্রুটি তো থাকতেই পারে। এর জন্যই কি তাঁর ভালো কাজগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত? আমাদের সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি যে একজন ব্যক্তি যদি কোনো অপরাধে জড়ায়, আমরা তাঁর আগে করা সকল ভালো কাজ ভুলে যাই।

চুনারুঘাটবাসীর উচিত হবে তাঁর ভালো কাজগুলোকে স্মরণ রাখা এবং মূল্যায়ন করা। সুমনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। কিন্তু যদি দেখা যায় যে তাঁর পূণ্যের সংখ্যাই বেশি, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটি সমাজের দৃষ্টিতে কেমন হওয়া উচিত, তা ভাবার সময় এসেছে।

ব্যারিস্টার সুমনের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চুনারুঘাটবাসী কী ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে, তা নিয়ে চিন্তা করা উচিত। একদিকে, সমাজের আইন ও বিচারব্যবস্থা আছে যা তার কাজ করবে। অন্যদিকে, জনগণের মতামত এবং জনগণের শক্তিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। চুনারুঘাটবাসী যদি মনে করে যে ব্যারিস্টার সুমনের কাজগুলো তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, তাহলে তাদের উচিত এই বিষয়টি উত্থাপন করা।

ধারণা করা যাক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চুনারুঘাটের পাশ দিয়ে চলে গেছে। সেই মহাসড়ক দিয়েই প্রতিবাদ মিছিল বা মানববন্ধনের আয়োজন করে এলাকাবাসী তাঁদের মতামত তুলে ধরতে পারে। এর মাধ্যমে তাঁরা নিজেরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে এবং সুমন মিয়ার মুক্তির দাবিতে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে।

একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইনের শাসন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জনগণের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। আইন তার কাজ করবে, কিন্তু জনগণের বিবেককে তো উপেক্ষা করা যায় না। ব্যারিস্টার সুমন যদি সত্যিই এমন কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে সেটি প্রমাণ হবে এবং বিচার হবে। কিন্তু যদি চুনারুঘাটবাসী মনে করে যে তার অপরাধ যতটা গুরুতর বলা হচ্ছে, ততটা নয়, তাহলে এলাকাবাসীরও কিছু বলা উচিত।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিস্থিতিও বদলায়। ব্যারিস্টার সুমন যদি জেল থেকে মুক্তি পান, তাহলে তাঁর ভবিষ্যৎ আবার সমাজসেবায় কেমন হবে? তার করা কাজের স্বীকৃতি এবং তাঁর প্রতি জনগণের আস্থা তখন কেমন হবে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

যদি সুমন মিয়া আবার সমাজে ফিরে আসেন এবং তাঁর কাজের ধারা অব্যাহত রাখেন, তাহলে সেইসব ব্যক্তিরা যারা তাঁর সেবার সুফল ভোগ করেছেন, তারা কি তাঁর সামনে দাঁড়ানোর সাহস রাখবেন? কৃতজ্ঞতা এবং নৈতিকতার ভিত্তিতে আমাদের উচিত হবে সৎ ও সত্যিকারের মূল্যায়ন করা।

ব্যারিস্টার সুমনের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা বা ভালোবাসা থাকা উচিত কি না, সেটি নির্ভর করে তার কাজের ফলাফল এবং তার পাপ-পূণ্যের পরিমাপের উপর। একটি সুস্থ সমাজে আমাদের উচিত সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো, এমনকি সেটি আমাদের ব্যক্তিগত ভাবাবেগের বিরুদ্ধে গেলেও।

চুনারুঘাটবাসী এবং সিলেটের মানুষদের কাছে ব্যারিস্টার সুমন কেবল একজন আইনের মানুষ নয়, বরং একজন সমাজসেবক এবং একজন সংগ্রামী। তাঁর কাজের প্রভাব অনেকের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। তাঁর গ্রেপ্তারের পেছনের কারণ নিয়ে চিন্তা করা, পাপ-পূণ্যের মূল্যায়ন করা এবং তাঁর মুক্তির জন্য যদি প্রয়োজন হয় তাহলে প্রতিবাদ করা, এটি চুনারুঘাটবাসীর নৈতিক দায়িত্ব। সমাজে ভালো কাজের স্বীকৃতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি অন্যায়ের বিচারও। সুতরাং, আমাদের উচিত বাস্তবতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি সম্মান রেখে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া।
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×