বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের কারণে জামায়াত এবং বামাতিরা পরিস্থিতির সুবিধা নিচ্ছে। বিশ্লেষণ থেকে জানা যাচ্ছে, যদি এই দুই পক্ষ যথেষ্ট জনসমর্থন অর্জন করে, তবে তারা বিএনপিকে সাইডলাইনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তারা কি সেই সমর্থন পেতে সক্ষম হবে?
ছাত্রদের আন্দোলনে যে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপিত হয়েছিল, তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং ছাত্রলীগ নিষিদ্ধকরণের দাবি উল্লেখযোগ্য। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে বাংলাদেশ নতুন সাংবিধানিক সংকটে পড়বে, যা বিএনপির নির্বাচনী পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করবে। এজন্য বিএনপির নেতৃত্ব চুপ্পু সাহেবের দিকে ঝুঁকছে।
রাষ্ট্রপতি চুপ্পু সাহেব ও সেনাপ্রধান ওয়াকার সাহেবের অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী রাখতে কঠোর চেষ্টা করছেন। যখন ছাত্ররা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে, তখন তাদের প্রধান দাবি ছিল রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা।
এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ঠেকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জামায়াত তাদের ইনফ্লুয়েন্সের মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা জামায়াত ও বামাতিদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। জামায়াত ও বামাতিরা সরকারকে লম্বা সময় দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যাতে তারা আগামী নির্বাচনে প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
বর্তমানে বিএনপির অবস্থান দুর্বল। যদিও বিভিন্ন স্থানে বিএনপির লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তা মূলত জামায়াত ও বামাতির সদস্যদের অভাবের কারণে। বিএনপি নির্বাচনের দাবি জানালেও জামায়াত ও বামাতিরা নির্বাচনে আগ্রহী নয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বর্তমান সরকারকে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় রেখে নিজেদের অবস্থান শক্ত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশে মাল্টিপোলার গভর্নমেন্ট কার্যকর। রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে, এবং জামায়াত ও বামাতিরা উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ছাত্রদের মধ্যে জামায়াতের প্রভাব বাড়ছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ অনেকটাই অনিশ্চিত। যদি রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী নিজেদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে পারে, তাহলে আওয়ামী লীগ টিকে থাকতে পারে। অন্যদিকে, জামায়াত ও বামাতিরা যদি আরও শক্তিশালী হয়, তবে তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দুদলকেই রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার একটা বড়সড় চেষ্টা চালাবে।
সবশেষে বলতে চাই, যদি জামায়াত ও বামাতিরা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে, তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভূপ্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


