(Universal Cataclysm)
মহাবিশ্বের ধ্বংস হবে কি হবে না তা নিয়ে অবিশ্বাসীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে এবং অবিশ্বাসের ঘোরে তারা এ ব্যাপারে সব সময়েই দ্বন্দে ভোগে। তবে আল্লাহতায়ালার প্রতিশ্রুত কিয়ামত যে অবশ্যই সংঘটিত হবে এবং অবিশ্বাসীরা অচিরেই তা জানতে পারবে, এবিষয়টি আল-কোরআনে প্রদত্ত ঐশী তথ্যসমূহে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মহাবিশ্বের ধ্বংস যে অবশ্বম্ভাবি, বর্তমান বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার আলোকে এর পক্ষেই বেশী সমর্থন পাওয়া যায়। তবে এই ঘটনা বৃহৎ সংকোচনের মাধ্যমে ঘটুক অথবা বস্তু ও প্রতিবস্তু জগতের মধ্যে সংঘর্ষের ফলেই ঘটুক না কেন, এর ফলে যে মহাবিশ্বের বর্তমান অবয়বের আমুল পরিবর্তন সাধিত হবে তাতে কোনই সন্দেহ নেই।
পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত বৈজ্ঞানিক তথ্যসমৃদ্ধ আয়াতগুলোর মধ্য থেকে কিয়ামত বা মহাপ্রলয় সম্পর্কিতকয়েকটি উল্লেখযোগ্য আয়াতের বাংলা আনুবাদ এই আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসাথে কিয়ামত সম্পর্কে বর্তমান যুগের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও ধ্যান-ধারণা { স্টিফেন ডব্লু হকিং-এর সাড়া জাগানো গবেষণা-ধর্মী (A Brief History of Time) এবং (Blackhole And Baby Universes And Other Essays) -শত্রুজিত দাশগুপ্ত- কর্তৃক বাংলায় অনুবাদকৃত (কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস) ও (কৃষ্ণগহ্বর এবং শিশু-মহাবিশ্ব ও অন্যান্য রচনা)} নামক পুস্তক দুটি থেকে সংগৃহিত এবং পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ্ প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক তথ্য ও ইংগিতের সাথে সমন্বয় সৃষ্টির সাথে সাথে আমার নিজস্ব কিছু বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-ভাবনার বহিঃপ্রকাশই এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। প্রকৃত খবর মহাজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালাই ভাল জানেন। সত্যের স্বরূপ উদঘাটনে যতটুকু সফলতা অর্জন করতে পেরেছি তার সবটুকুই আল-কোরআনের ঐশীবাণীসমূহের মর্ম সঠিকভাবে অনুধাবনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আর ব্যর্থতার জন্য একজন অতি সাধারন মানুষ হিসেবে আমার অযোগ্যতা ও অজ্ঞতাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী। হে বিশ্ববিধাতা করুণাময় মহান আল্লাহ, সর্বপ্রকার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তির জন্য সর্বদা অবনত মস্তকে ক্ষমাভিক্ষা চাই।
(১ম পর্বের পর).........
আল-কোরআন (Al-Quran)-
সূরা ওয়াকিয়া- (56.Al-Waqia //The Event) -আয়াত নং-৭৫ ও ৭৬
.75فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ
(৫৬ : ৭৫) ফালা - উক্বছিমু বিমাওয়া- ক্বি‘ইন নুজূম।
{মাওয়াকিউন = (অর্থ)-পতিত হওয়ার স্থান-‘কোরআনের অভিধান’-মুনির উদ্দীন আহমদ-৩৪০পৃঃ }
(৫৬ : ৭৫) অর্থ:- আমি শপথ করছি নক্ষত্রসমূহের পতিত হওয়ার স্থানের।
(56 : 75) Then I swear by the places where the stars are fallen down.
.76وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ
(৫৬ : ৭৬) অ ইন্নাহূ লাক্বাছামুল লাও তা’লামূনা ‘আজীম।
(৫৬ : ৭৬) অর্থ:- অবশ্যই এটা এক মহাশপথ, যদি তোমরা জানতে।
(56 : 76) And if you know that is mighty oath.
সূরা তাকভীর- (81.At-Takwir //The Overthrowing) -আয়াত নং-১৫ ও ১৬
.15فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ
(৮১ : ১৫) ফালা - উক্বছিমু বিল খুন্নাছিল।
{খান্নাছুন = (অর্থ)-যেসব তারকা গোপন হয়ে যায় ---- ‘কোরআনের অভিধান’ - মুনির উদ্দীন আহমদ-১৮৪পৃষ্ঠা }
(৮১ : ১৫) অর্থ:- আমি শপথ করি- গোপন হয়ে যাওয়া তারকা বা নক্ষত্রের,
(81 : 15) Then I swear by the hiding stars;
.16الْجَوَارِ الْكُنَّسِ
(৮১ : ১৬) জ্বাওয়া- রিল কুন্নাছ।
(৮১ : ১৬) অর্থ:- যা অদৃশ্য হয়ে প্রত্যাগমণ করে।
(81 : 16) Which become invisible and then coming back.
আলোচনা-
বর্তমানে মহাকাশে অসংখ্য ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পাওয়া গেছে। আল-কোরআনে ব্ল্যাকহোল প্রবন্ধ থেকে আমরা জেনেছি যে, বিজ্ঞানীরা ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে চব্বিশটি কৃষ্ণগহ্বর এবং পৃথিবীর পাশে বিরাট ব্ল্যাকহোলের সন্ধান পেয়েছেন। আমাদের এই সৌরজগতের আশে পাশে অজ্ঞাতসারে যে অসংখ্য কৃষ্ণগহ্বর ছড়িয়ে আছে এবং ক্রমাগত সৃষ্টি হচ্ছে সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আমরা আরও জেনেছি যে, কোন নক্ষত্র যখন ব্ল্যাকহোলের প্রচন্ড আকর্ষণ সীমার মধ্যে আসে তখন তা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ও কৃষ্ণগহ্বরে গিয়ে পড়ে। কোন কিছুই তার আওতায় এলে রেহাই পায় না। সাধারনভাবে আমরা জানি তারকা চুপসে গিয়ে কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। কিন্তু বিজ্ঞান এই মহাবিশ্বে বেশ কিছু অধিকতর ক্ষুদ্র কৃষ্ণগহ্বর ছড়িয়ে থাকার কথা জনিয়েছে যেগুলো তারকা চুপসে গিয়ে সৃষ্টি হয়নি। মহাবিশ্ব সৃষ্টির স্বল্পকাল পরে যে উত্তপ্ত ঘন মাধ্যম ছিল, সেই উত্তপ্ত ঘন মাধ্যমের অত্যন্ত উচ্চচাপগ্রস্ত অঞ্চল চুপসে যাওয়ার ফলেই আদিম কৃষ্ণগহ্বরগুলো সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। মহান আল্লাহতায়ালা ‘সূরা ওয়াকিয়া’-এর (৫৬:৭৫) ও (৫৬:৭৬) নং আয়াতে যেহেতু ‘নুজূম’ অর্থ ‘নক্ষত্রসমূহ’ এবং ‘মাওয়াকিউন’ অর্থ ‘পতিত হওয়ার স্থান’ অর্থাৎ ‘নক্ষত্রসমূহের পতিত হওয়ার স্থান’ কে নিয়ে মহাশপথ করছেন, সুতরাং অবশ্যই মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদি পর্যায়ে সৃষ্ট ‘আদিম কৃষ্ণগহ্বরগুলো’ সর্বজ্ঞ আল্লাহতায়ালার আদেশে অনেক আগেই সৃষ্টি হয়ে গেছে। এছাড়াও সূর্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ভরসম্পন্ন কোন কোন তারকা চুপসে গিয়ে এত ক্ষুদ্র হয়ে যায় যে, তাদের মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রগুলো আলোককে বাঁকিয়ে সেই তারকাতেই ফিরিয়ে আনে অর্থাৎ আলোক বা কোন কিছুই সেখান থেকে পালাতে পারে না। অবশেষে এই তারকাগুলো কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। যেহেতু তারকাগুলো সংকুচিত হয়ে অতি ক্ষুদ্র অবস্থা প্রাপ্ত হয় এবং কোন আলোক আপাতদৃষ্টিতে সেখান থেকে পালাতে পারেনা। সুতরাং সেগুলো দৃষ্টির আড়ালে গিয়ে (৮১:১৫) নং আয়াতে উল্লেখিত ‘খান্নাছুন’ অর্থ ‘গোপন হয়ে যাওয়া তারকা’ হিসেবে ‘নব কৃষ্ণগহ্বরে’ রূপান্তরিত হচ্ছে। আর এই ‘আদিম” ও ‘নব’ উভয় শ্রেণীর কৃষ্ণগহ্বরগুলো এদের মধ্যে পতিত নক্ষত্র সহ সব কিছুকে ধ্বংস করছে এবং (৮১:১৬) নং আয়াতে প্রদত্ত ইংগিত অনুসারে বিপরীত কণিকা উৎসর্জনের মাধ্যমে অবশেষে ‘ভরশুন্য’ অর্থাৎ ‘অদৃশ্য’ হয়ে এই মহাবিশ্বের কোন অজ্ঞাত অঞ্চলে অর্থাৎ বিজ্ঞানে বর্ণীত তথাকথিত শিশু-মহাবিশ্বে প্রত্যাগমন (to return back) করছে।
বিজ্ঞান-
ব্যাপক অপেক্ষবাদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে - গুরুভার বস্তুপিন্ড চলমান হলে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সৃষ্টি করে। স্থানের বক্রতায় সৃষ্ট তরঙ্গগুলো আলোকের দ্রুতিতে পরিভ্রমণ করে। আলোক তরঙ্গের মত এই তরঙ্গগুলোও যে সমস্ত বস্তুপিন্ড থেকে নির্গত হয় সেগুলো থেকে শক্তি বহন করে দূরে নিয়ে যায়। তার কারণ, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্গত হওয়ার ফলে যে কোন গতির শক্তি দূরে পরিবাহিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় মহাকর্ষীয় তরঙ্গ উৎপন্ন হয় এবং শক্তিক্ষয় হয়। ফলে পৃথিবীর কক্ষের পরিবর্তন হওয়ায় তা সূর্যের নিকটতর হতে থাকে। পৃথিবীর কক্ষের পরিবর্তন অত্যন্ত ধীরে হওয়ায় তা পর্যবেক্ষণ করা বেশ কঠিন। তবে PSR (Pulsar) 1913+16 নামে তন্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, এই তন্ত্রে দুটি নিউট্রন তারকা আছে এবং এরা পরস্পরকে প্রদক্ষিণ করে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্গত হওয়ার দরুণ এদের যে শক্তিক্ষয় হয় তার ফলে এরা পরস্পরকে প্রদক্ষিণ করে ও সর্পিল গতিতে পরস্পরের নিকটতর হয়। ১৯৬৩ সালে মার্টেন স্পিড্স নামে একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্বল্পপ্রভ তারকার মত একটি বস্তুর আলোকের লোহিত বিচ্যুতি (Red shift) মাপেন। তিনি দেখলেন মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের বিচ্যুতির তুলনায় এ বিচ্যুতি অনেক বেশী। এটা মহাকর্ষীয় লহিত বিচ্যুতি হলে বস্তুটি এত বৃহৎ এবং আমাদের এত নিকটে হত যে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষের গোলমাল সৃষ্টি হত। গতানুগতিক সৌরমন্ডলীয় পরিবেশে সূর্য ও পৃথিবীর ক্ষেত্রে শক্তিক্ষয়ের হার অত্যন্ত অল্প এবং এ অবস্থায় সূর্যের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হতে এক হাজার মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন বৎসর লাগবে। {“কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস” - ‘কৃষ্ণগহ্বর’- অধ্যায় থেকে সংগৃহিত }
Black holes and Earth-
(http://www.halfvalue.com/wikipedia.jsp)
Black holes are sometimes listed among the most serious potential threats to Earth and humanity.[29][30]There are two principal ways in which they could affect Earth.
• There is evidence that some black holes are not stationary, rather, they "wander" through space.[31] There is only a very slim possibility that a rogue black hole might pass near, or even through our Solar System.[32] At a typical speed of stars' relative motion in the Milky Way, it would take a few decades for a black hole to traverse the Solar System, during which time it would wreak havoc on planets' orbits, and possibly affect Earth and Sun directly if it passes near them.
Fortunately, any black hole with mass that is large enough to cause problems for Earth would be detected well in advance, possibly hundreds of years before its arrival, by its effect on outer planets' orbits. Small black holes would be much less destructive and would pass through the Solar System relatively unnoticed unless they happen to hit one of the planets.
আল-কোরআন (Al-Quran)-
সূরা ক্বিয়ামাহ্- (75.Al-Qiyama // The Resurrection) -আয়াত নং-(৬ - ৯)
.06يَسْأَلُ أَيَّانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ
(৭৫ : ০৬) ইয়াছআলু আইয়্যা-না ইয়াওমুল ক্বিয়া-মাহ্ ,
(৭৫ : ৬) অর্থ:- সে প্রশ্ন করে, “কখন কিয়ামত দিবস আসবে ?”
(75 : 6) He asks, when will be the Day of (Qiyamah) universal cataclysm?
.07فَإِذَا بَرِقَ الْبَصَرُ
(৭৫ : ০৭) ফাইজা-বারিক্বাল বাছারু
{বারিক্বা = (অর্থ)-উজ্জ্বল হলো-৯৬ পৃষ্ঠা। বাছারুন = (অর্থ)-চক্ষু-৯৮ পৃষ্ঠা- ‘কোরআনের অভিধান’-মুনির উদ্দীন আহমদ }
(৭৫ : ০৭) অর্থ:- তখন, যখন চোখ উজ্জ্বল হয়ে (ধধিয়ে) যাবে।
(75 : 7) Then, when the eyes will be dazzled.
.08وَخَسَفَ الْقَمَرُ
(৭৫ : ০৮) ওয়া খাছাফাল ক্বামারু
{খাছাফা = (অর্থ)-চন্দ্রগ্রহণ লাগলো -’কোরআনের অভিধান’-পৃষ্ঠা-১৮০ - মুনির উদ্দীন আহমদ।}
(৭৫ : ০৮) অর্থ- এবং চাঁদ জ্যোতিহীন হয়ে পড়বে বা চন্দ্রগ্রহন লেগে থাকবে।
(75 : 08) And the moon is eclipsed.
.09وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ
(৭৫ : ০৯) ওয়া জুমি’আশ্বাম্ছু ওয়াল কামারা।
{জুমিয়া = (অর্থ)-একত্রিত করা হলো-‘কেরআনের অভিধান’-১৬০পৃষ্ঠা -- মুনির উদ্দীন আহমদ।}
(৭৫ : ০৯) অর্থ:- এবং সূর্য ও চাঁদকে একত্রিত করা হবে।
(75 : 09) And the sun and the moon will be brought together.
সূরা তাকভীর- (81.At-Takwir // The Overthrowing) -আয়াত নং-৬
.06وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَتْ
(৮১ : ০৬) ওয়া ইজাল বিহা-রু ছুজ্বজ্বিরাৎ
(৮১ : ০৬) অর্থ:- সমূদ্র যখন স্ফীত হবে।
(81 : 06) And when the seas will be swollen,
আলোচনা-
আমরা বিজ্ঞানের বর্ণনায় দেখেছি যে, কক্ষপথে বিচরনরত গ্রহ, উপগ্রহগুলো শক্তিক্ষয়ের কারণে ধীরে ধীরে সূর্যের নিকটতর হচ্ছে। তবে এই নিকটে আসার মাত্রা এত অল্প যে এর জন্য অনেক অনেক বেশী সময় লাগবে। যেমন সূর্যের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হতে হলে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন, মিলিঃ, মিলিঃ, মিলিঃ, বৎসরের একটা বিরাট সময়ের হিসাব দেখানো হয়েছে। তবে আমরা এটাও জেনেছি যে, সৌরজগতের নিকটে ভবিষ্যতে যদি এমন কোন মহাজাগতিক বস্তুর উদ্ভব ঘটে এবং তা থেকে মহাকর্ষীয় লোহিত বিচ্যুতি নির্গত হতে থাকে, তাহলে তার প্রভাবে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষের গোলমাল সৃষ্টি হতে পারে । তাছাড়া বিজ্ঞানীগণ ছায়াপথে অসংখ্য কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন। ভবিষ্যতে এরূপ বাড়তি কোন কিছুর প্রভাবে সূর্যের সঙ্গে পৃথিবীর ও অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহগুলোর নিকটতর হবার গতানুগতিক মাত্রা যে অনেক বৃদ্ধি পাবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। সুতরাং দূরতম সময়েই হোক অথবা নিকটতম সময়েই হোক সূর্য ও পৃথিবী পরস্পরের নিকটে এলে সেই সময় পৃথিবীতে আগত সূর্যের আলোর ঔজ্জ্বল্য এখনকার তুলনায় অনেক বেড়ে যাওয়ায় (৭৫:৭) নং আয়াত অনুসারে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। (৭৫:৬) নং আয়াতে যেহেতু ‘কখন’ কিয়ামত দিবস আসবে ? এই প্রশ্নের উত্তরে (৭৫:৭)নং আয়াতে ‘যখন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, সুতরাং এর দ্বারা কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ের কথাই বোঝান হয়েছে। চাঁদের তুলনায় পৃথিবী সূর্য থেকে বেশ কিছুটা দূরে অবস্থিত। সুতরাং ‘যখন’ সকল গ্রহ, উপগ্রহগুলো সূর্যের নিকটে আসবে তখন সভাবতই পৃথিবী অপেক্ষা চাঁদ সূর্যের নিকটতর হবে। ফলে পৃথিবীর মহাকর্ষীয় বল অপেক্ষা সূর্যের মহাকর্ষীয় বল চাঁদের উপর অনেক বেশী প্রভাব ফেলবে। এ অবস্থায় চাঁদ তার গতানুগতিক কক্ষপথ থেকে কিছুটা সরে গিয়ে প্রথমত এমনভাবে অবস্থান গ্রহন করতে পারে যে তখন গুণগত ও অবস্থানগত কারণে চাঁদের উপর সূর্যের প্রতিফলিত আলোক পৃথিবী থেকে দৃষ্টিগোচর হবে না অর্থাৎ এখন চন্দ্রগ্রহণের সময় যেরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তখন হয়ত সেই অবস্থা দীর্ঘ সময় স্থায়ী হবে। সূরা কিয়ামাহ্ -এর (৭৫:৯) নং আয়াত অনুসারে অতঃপর কিয়ামতের পূর্বক্ষণে আল্লাহতায়ালার আদেশে কোন অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে অর্থাৎ সম্ভবত সৌরজগতের নিকটবর্তী মহাকর্ষীয় লহিত বিচ্যুতি নির্গতকারী কোন বস্তু অথবা কৃষ্ণগহ্বরের প্রভাবে সূর্য ও চাঁদ একত্রে মিলিত হবে। বর্তমানে চাঁদের আকর্ষণে যেমন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাগর স্ফীত হয়ে জোয়ার আসে এবং আবার ভাটা হয়। তেমনি কিয়ামতের পূর্বে যখন সূর্য ও চাঁদকে একত্রিত করা হবে, তখন এদের সম্মিলিত আকর্ষণের প্রভাবে (৮১:৫) নং আয়াত অনুসারে সমূদ্র স্ফীত অবস্থায় বিরাজ করবে।
এখানে সূরা ইয়াসিন-এর (৩৬:৪০) নং আয়াতটি উল্লেখ করা প্রয়োজন-অর্থ- {সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা; এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সঞ্চালমান।} এই আয়াতটির মাধ্যমে মহান আল্লাহতায়ালা গতানুগতিক প্রাকৃতিক নিয়মের কথা অর্থাৎ সৌরমন্ডলীয় পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন। তাই বলে কিয়ামতের সময়েও যে এই নিয়মের মধ্যে কোন ব্যতীক্রম ঘটবে না, তা কখনই বলেন নাই। বরং কিয়ামতের পূর্বক্ষণে এবং কিয়ামতের সময় সকল প্রকার গতানুগতিক নিয়মের মাঝে যে কিছু কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হবে, এমনকি আমুল পরিবর্তণ ঘটে যাবে এবং তা যে আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাতেই হবে সেটা বিশেষ করে (৭৫:৯) নং আয়াত ও অন্যান্য অনেক আয়াত থেকে সহজেই বুঝে নেয়া যায়। (ক্রমশঃ চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






