somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (শেষ পর্ব)

০৬ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
তথাকথিত দাসপ্রথা ও ইসলামে যুদ্ধবন্দী এককথা নয়। ইসলাম যে দাস প্রথাকে একদমই প্রমোট করেনি- তা আমি খুবই বিশ্বাস করি। কিন্তু হাদিছ গ্রন্থে হাদিছ বাদেও জুড়ে দেয়া কিছু খাপছাড়া বক্তব্য আমার খুবই খারাপ লাগে। আমাকে ভুল বুঝবেন না, প্লিজ। এ বিষয়ে আল-কোরআনে প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিলকৃত মক্কি-সূরার সাথে পরবর্তীতে মদীনায় অবতীর্ন সূরার বক্তব্যকে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন না করার কারনে সাধারন পাঠকগণ প্রায়ই বিষয়টি বুঝতে পারেন না। তাই যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে আল-কোরআনে নাজিলকৃত সূরা গুলোর সাথে সহী হাদিছ গুলো ধারাবাহিকভাবে পেশ করলে আসল বক্তব্য স্পষ্ট হবে এবং সবারই বুঝতে সুবিধা হবে। ......[বিস্তারিত জানতে যারা আগের পর্বগুলো দেখেন নাই তারা-
১/ ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (১ম- পর্ব)
২/ ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (২য়- পর্ব)
৩/ ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (৩য়- পর্ব)
৪/ ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (৪র্থ- পর্ব)]
৫/ ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (৫ম- পর্ব) -দেখে নিলে বুঝতে সুবিধা হবে।
.................................................................................................
ইসলাম কি দাসপ্রথাকে আদৌ সমর্থন করে? (শেষ পর্ব)

আপনার মন্তব্যের ২য় অংশ-
এবার আপনার আশঙ্কামূলক বক্তব্যের //এটা সত্য হলে, জিনার অপবাদ আসতে পারে সাহাবীদের ওপরে এবং তাদের ওপরে যিনি আছেন তার ওপরও// উত্তর দেবার চেষ্টা করছি-

আমি রসূল (সাঃ) এর জীবনকে আলে-কোরআনের বাস্তব প্রতিফলন হিসেবেই বিশ্বাস করি। যদি গোড়াতেই গলদ ছিল বলে আমি ভাবতাম, তাহলে নিজেকে অহেতুক মুসলিম হিসেবে পরিচয়ই দিতাম না। আমি এও বিশ্বাস করি যে, রসূল সোঃ) এর জীবনে এমন কিছু বিষয় ঘটেছে যা আল-কোরআনের নির্দেশ অনুসারেই ঘটেছে এবং এমন কিছু নির্দেশ আছে যেগুলো একান্তভাবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। পবিত্র কোরআনই তো রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ ও পবিত্র চরিত্রের বাস্তব প্রতিফলনের প্রকৃত রূপকে তুলে ধরে। নিঃসন্দেহে রসূল (সাঃ) এবং তাঁর প্রকৃত অনুগত অনুসারিদের উপর কোনরূপ অপবাদ লাগবার কোন প্রশ্নই আসেনা। কারন আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সম্প্রদানের পর ডান হাতের অধিকারভুক্তদের মধ্যে কেউ ইমান আনলে তার সম্মতিতে স্বয়ং রসূল (সাঃ) যখন তাকে মনোনীত করবেন তখন সেটাই তাঁর ক্ষেত্রে বিবাহের সামিল। তেমনি সাহাবাগণের ক্ষেত্রেও সাক্ষী হিসেবে স্বয়ং রসূলের (সাঃ) উপস্থিতিতে ও কিছু শর্ত সাপেক্ষে এবং তাঁর মাধ্যমে সম্প্রদানকৃত ডান হাতের অধিকারভুক্ত ইমানদার কোন নারীর সম্মতিতে আল্লাহতায়ালার নাম নিয়ে তাকে গ্রহন করাও বিবাহের সামিল ছিল।

আমি বিশ্বাস করি যে, যতদিন পর্যন্ত রসূল (সাঃ) উপস্থিত ছিলেন, ততদিন পর্যন্ত আল্লাহর বিধানের একচুলও অন্যথা হয় নাই এবং তারপরও অর্থাৎ রসূলের (সাঃ) অনুপস্থিতিতে তাঁর অনুগত ও প্রকৃত অনুসারি সাহাবাগণ নিশ্চয় ডান হাতের অধিকারভুক্তদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনরে ক্ষেত্রে রসূলের (সাঃ) প্রদর্শিত বিবাহের বিধানই কার্যকর করেছিলেন।

সুতরাং ডান হাতের অধিকারভুক্তদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিবাহ করার প্রযোজন নেই!!! - এরূপ উদ্ভট মতবাদ কেন এবং কখন থেকে চালু হলো এবং পবিত্র কোরআনের অনুবাদ ও ব্যাখ্যার ক্ষেত্রেও ধোঁয়াটে ও খাপছাড়াভাবে তা সংযোজিত হতে শুরু করল তা মহান আল্লাহতায়ালাই ভাল জানেন।

যখন থেকে ডান হাতের অধিকারভুক্তদের সাথে তাদের অভিভাবকদের অভিভাবক সুলভ সম্পর্ক নয়, বরং প্রভু ও দাসির সম্পর্কের বন্দিশালায় বিবাহ ছাড়াই যৌন সম্পর্ক করা জায়েজ মনে করা শুরু হয়েছে, সেই সময়টাকে আমি ইসলামের অন্ধকার সময় হিসেবে মনে করি। আমাদের সেই অন্ধকার থেকে আবার আলোর পথে চলার সময় এসেছে। আল-কোরআন ও রসূল (সাঃ) এর আদর্শকে চিনে নিয়ে সকল অন্ধকার দূর করতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই।

মাঝে মাঝে মনে হয়- কোন এক অজ্ঞাত মোহ ও ভীতির ঘোরে অজ্ঞ, বিজ্ঞ ও আমরা সকলেই যেন আবদ্ধ হয়ে পড়েছি!! মহান আল্লাহর প্রতি ভালবাসা, আনুগত্য, ভয়-ভীতিও কি এর কাছে কিছু নয়?

সূরা আ আ'রাফ (মক্কায় অবতীর্ণ ক্রম-৩৯)
(০৭:২৮) অর্থ- তারা যখন কোন অশ্লীল কাজ করে, তখন বলে আমরা পূর্বপুরুষদেরও এমনই করতে দেখেছি এবং আল্লাহতায়ালাও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন; তুমি বল, আল্লাহ অশ্লীল কাজের আদেশ দেন না; তোমরা আল্লাহর প্রতি এমন কিছু আরোপ করছ, যা তোমরা জান না।
(০৭:২৯) অর্থ- তুমি বল, আমার প্রতিপালক তো শুধু ন্যায় ইনসাফ করারই নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি ইবাদতে তোমরা তোমাদের লক্ষ স্থির রাখবে; তাঁকেই তোমরা ডাক, নিজেদের জীবন বিধানকে একান্তভাবে তাঁর জন্য খালেস কর; তোমাদেরকে তিনি প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেন, পূনর্বারও সৃজিত হবে।
(০৭:৩০) অর্থ- একদলকে পথ প্রদর্শন করেছেন এবং একদলের জন্যে পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং ধারণা করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।
(০৭:৩৩) অর্থ- তুমি বলে দাও, আমার পালনকর্তা যাবতীয় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন, গোনাহ এবং অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করা, আল্লাহর সাথে অংশীদার করা, তিনি যার ব্যাপারে কখনো কোন সনদ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে তোমাদের এমন সব কথা বলা, যার ব্যাপারে তোমাদের কোন জ্ঞানই নাই।

একজন অমুসলিমের জুলুম করা, আর একজন মুসলিম যখন জুলুম করে- তা কখনই এক হতে পারে না। প্রকৃত অর্থে জালিম রূপী মুসলিমদের মহান স্রষ্টা পার্থিব যুদ্ধক্ষেত্রে কখনই বিজয়ী করবেন না। আপাত দৃষ্টিতে তারা বিজিত মনে হলেও ইতিহাস তাদেরকে ঠিকই আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে। শুধু তাই নয়, পরকালেও তাদের কোথায় নিক্ষেপ করা হবে তা সহজেই অনুমেয়। আল্লাহর বিধান সঠিকভাবে জানা ও মানার নির্লিপ্ততার কারনে যতদিন পর্যন্ত না আমরা নিজেদেরকে এবং অন্যকে জালিম ও জুলুমের হাত থেকে রক্ষা করার মত যেগ্যতা অর্জনের জন্য স্বচেষ্ট হবনা, ততদিন আমাদের বিজয় মিলবে না, মুক্তিও নেই। ইহকালে তো নেই, পরকালেও মুক্তি মিলবেনা কিনা তা মহান আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই (সাঃ) ভাল জানেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫
২৯টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×