ধর্মের ব্যপারে জোরজবরদস্তি নেই-
আল-কোরআন-
সূরা আল বাক্বারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ
(০২:২৫৬) অর্থ- দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে সুপথ প্রকাশ্যভাবে কুপথ থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যে ‘তাগুৎ' কে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, নিশ্চয় সে এমন সুদৃঢ় হাতল ধারণ করে নিয়েছে যা ভাঙবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।
সূরা ইউনুস (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১০:৯৯) অর্থ- আর তোমার প্রতিপালক যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীতে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান আনত সমবেতভাবে। তবে কি তুমি ঈমান আনার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবে?
(১০:১০০) অর্থ- আর কারও পক্ষে ঈমান আনা সম্ভব নয়, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। পক্ষান্তরে যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না (অনুধাবনের চেষ্টা করে না), তাদের তিনি কলুষ-লিপ্ত করেন।
সূরা আল-ফুরকান (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২৫:৫৬) অর্থ- আমি আপনাকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।
(২৫:৫৭) অর্থ- বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর কোন বিনিময় চাই না, সুতরাং যে ইচ্ছা করে, সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।
সূরা ক্বাফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৫০:৪৫) অর্থ- তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি। আপনি তাদের উপর জোরজবরদস্তিকারী নন। অতএব, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কোরআনের মাধ্যমে উপদেশ দান করুন।
…………………………………………………………
কেন যুদ্ধ আর কখন সন্ধি?
আল-কোরআন-
সূরা আল বাক্বারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:১৯০) অর্থ- আর লড়াই কর আল্লাহর পথে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। তবে কারও প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না।
(০২:১৯১) অর্থ- আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে, যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে বের করেছে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এটাই তো অবিশ্বাসীদের পরিণাম।
(০২:১৯২) অর্থ- আর তারা যদি বিরত থাকে, তাহলে তো আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু।
(০২:১৯৩) অর্থ- আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু যদি তারা নিবৃত হয়ে যায়, তাহলে অত্যাচারী ছাড়া কারও উপর কোন হস্তক্ষেপ করবে না।
(০২:১৯৪) অর্থ- সম্মানিত মাসই সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বিনিময় রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবরদস্তি/আক্রমণ করে, তোমরাও তাদের উপর জবরদস্তি/আক্রমণ করবে, যেরূপ জবরদস্তি/আক্রমণ তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার/ধর্মপরায়ণ, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:৮৮) অর্থ- অতঃপর তোমাদের কি হল যে, বিশ্বাসঘাতকদের সম্পর্কে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারনে! তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেন? আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না।
(০৪:৮৯) অর্থ- তারা চায় যে, তারা যেমন অবিশ্বাসী, তোমরাও তেমনি অবিশ্বাসী হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধু-রূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। কিন্তু যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় (বিশ্বাসঘাতকতা করে), তবে তাদেরকে গ্রেফতার কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে অভিভাবক এবং সাহায্যকারী রূপে গ্রহণ করবে না।
(০৪:৯০) অর্থ- কিন্তু তাদের ছাড়া- যারা এমন সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যে, তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে চুক্তি আছে অথবা তোমাদের কাছে এভাবে আসে যে, তাদের অন্তর তোমাদের সাথে, এমনকি স্বজাতির সাথেও যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক। যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেন, তবে তোমাদের উপর তাদেরকে প্রবল করে দিতেন। ফলে তারা অবশ্যই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতএব যদি তারা তোমাদের থেকে পৃথক থাকে, তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের সাথে সন্ধি করে, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কোন পথ রাখেননি।
(০৪:৯১) অর্থ- অবশ্য তুমি আরও এক সম্প্রদায়কে পাবে, যারা তোমাদের কছে ও স্বজাতির কাছেও শান্তি চায়। যখনই তাদেরকে ফ্যাসাদের/বিপর্যয়ের প্রতি মনোনিবেশ করানো হয়, তখনই তারা পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়, অতএব তারা যদি তোমাদের থেকে নিবৃত্ত না হয়, তোমাদের সাথে সন্ধি না রাখে এবং স্বীয় হস্ত সংবরণ না করে, তবে তোমরা তাদেরকে গ্রেফতার কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। আমি তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি-প্রমাণ দান করেছি।
সূরা আল-আনফাল (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৮:৫৫) অর্থ- সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা অবিশ্বাস করেছে এবং আর ঈমান আনেনি।
(০৮:৫৬) অর্থ- তাদের মধ্যে যাদের সাথে তুমি চুক্তিতে আবদ্ধ, তারা প্রতিবার নিজেদের কৃতচুক্তি লংঘন করে এবং সাবধান হয় না।
(০৮:৫৭) অর্থ- সুতরাং তোমরা যদি কখনো তাদেরকে যুদ্ধে পেয়ে যাও, তবে তাদের এমন শাস্তি দাও, যেন তাদের উত্তরসূরিরা তাই দেখে পালিয়ে যায়; তাদেরও যেন শিক্ষা হয়।
(০৮:৫৮) অর্থ- তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের আশংকা হয়, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে, যেন হয়ে যাও তোমরা ও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোঁকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।
(০৮:৬১) অর্থ- আর যদি তারা সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে তুমিও সে দিকেই আগ্রহী হও এবং আল্লাহর উপর ভরসা কর। নিঃসন্দেহে তিনি শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।
(০৮:৬২) অর্থ- পক্ষান্তরে তারা যদি তোমাকে প্রতারণা করতে চায়, তবে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনিই তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন স্বীয় সাহায্য ও বিশ্বাসীদের দ্বারা।
(০৮:৬৩) অর্থ- আর প্রীতি স্থাপন করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সবকিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু রয়েছে যমীনের বুকে, তাদের অন্তরে প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে প্রীতি স্থাপন করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(০৮:৬৪) অর্থ- হে নবী, আপনার জন্য এবং যে বিশ্বাসীরা আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
সূরা আত তাওবাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৯:০৪) অর্থ- তবে মুশরিকদের (অংশীবাদীদের) সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ হাবার পরে যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সাথে কৃত চুক্তিকে তাদের দেয়া নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত পূরণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন।
(০৯:০৫) অর্থ- অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(০৯:০৬) অথৃ- আর মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দেবে, যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেবে। এটি এজন্যে যে তারা অজ্ঞ লোক।
(০৯:১২) অর্থ- আর তারা যদি চুক্তিতে আবদ্ধ হবার পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে অবিশ্বাসীদের প্রধানদের সাথে যুদ্ধ করবে। কারণ, এদের প্রতিজ্ঞা প্রতিজ্ঞাই নয়, যাতে তারা ফিরে আসবে।
(০৯:২৯) অর্থ- তোমরা যুদ্ধ কর ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন তা নিষিদ্ধ করে না এবং সত্য-ধর্ম অনুসরণ করে না, যতক্ষণ না আনুগত্যের নিদর্শন স্বরূপ তারা ‘জিযিয়া’ প্রদান করে।
(০৯:৩৬) অর্থ- নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে, তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ করবে সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ সাবধানীদের সাথেই রয়েছেন।
(০৯:১২৩) অর্থ- হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের নিকটবর্তী অবিশ্বাসীদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ সাবধানীদের সাথেই রয়েছেন।
ধর্মের ব্যপারে জোরজবরদস্তি নেই। কিন্তু তাহলে কেন যুদ্ধ আর কখন সন্ধি?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'
আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন