somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সঞ্চয় করা কি হারাম?

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল-কোরআন-
সূরা বনী ইসরাঈল (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১৭:২৯) অর্থ- তুমি একেবারে ব্যয়কুন্ঠ/বদ্ধমুষ্ঠি হয়ো না এবং একেবারে মুক্ত হস্তও হয়ো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃত, নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।
সূরা আল-ফুরকান (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২৫:৬৩) অর্থ- আর পরমকরুণাময়ের বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন অজ্ঞরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে- 'সালাম'।
(২৫:৬৭) অর্থ- এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অপচয় করে না আর কার্পণ্যও করে না, বরং তাদের পন্থা হয় এ দুয়ের মধ্যবর্তী।
সূরা আত তাওবাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৯:৩৪) অর্থ- হে ঈমানদারগণ! পন্ডিত ও সংসারবিরাগীদের মধ্যে যারা লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে গ্রাস করে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের ফিরিয়ে রাখে, আর স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর শাস্তির সংবাদ শুনিয়ে দিন।
সূরা আত-তাগাবুন (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৬৪:১৬) অর্থ- অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় করো, আর শুনো, আনুগত্য করো এবং ব্যয় করো। এটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।
সূরা আল মা’আরিজ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৭০:১৯) অর্থ- মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অস্থির চিত্ত রূপে।
(৭০:২০) অর্থ- যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন হা-হুতাশ করে।
(৭০:২১) অর্থ- আর যখন সচ্ছলতা প্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়।
সূরা আল লায়ল (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৯২:০৫) অর্থ- অতএব, যে দান করে এবং (স্রষ্টাকে) ভয় করে,
(৯২:০৬) অর্থ-এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে,
(৯২:০৭) অর্থ-আমি তার জন্য সুখকর পথ সহজ করে দেব।
(৯২:০৮) অর্থ-আর যে কৃপণতা করে ও বেপরোয়া হয়
(৯২:০৯) অর্থ- এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে,
(৯২:১০) অর্থ- আমি তার জন্য কষ্টকর পথ সহজ করে দেব।
(৯২:১১) অর্থ-যখন সে অধঃপতিত হবে, তখন তার সম্পদ কোনই কাজে আসবে না।
সূরা হুমাযাহ্ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১০৪:০১) অর্থ- দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে;
(১০৪:০২) অর্থ- যে অর্থ পুঞ্জিভূত করে রাখে এবং তা বার বার গননা করে,
(১০৪:০৩) অর্থ- সে ধারনা করে যে তার অর্থ তাকে অমর করে রাখবে;
(১০৪:০১) অর্থ- কখনো না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়;

আল্লাহর পথে ব্যয় করা অর্থাৎ আল্লাহতায়ালা যে সব খাতে ব্যয়/ দান করতে বলেছেন সাধ্যমত তা পালন করা সালাত আদায় করার মতই ফরজ। (১৭:২৯), (২৫:৬৭) এবং (১০৪:০২, ০৩) নং আয়তের বক্তব্য থেকে প্রথমত ব্যয়/ দান করার ক্ষেত্রে কৃপণতা ও অপব্যয় পরিহার করে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে, অর্থাৎ সব সময় সাধ্যমত এমনভাবে ব্যয়/ দান করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে যেন নিঃস্ব হয়ে নিজেকেই অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। সুতরাং এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কৃপণতা নয় বরং নিজের পরিবার পরিজনদের জন্য কিছু সঞ্চিত রাখার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমরা কোন খাতে কতটুকু ব্যয়/ দান করব। আল্লাহতায়ালা মানুষকে বিবেক দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমেই তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কার প্রয়োজন কতটুকু এবং তিনি কতটা সঞ্চয় করবেন এবং কতটা ব্যায়/ দান করতে পারবেন। সঞ্চিত রাখার অর্থ আবার এই নয় যে আমারা অর্থকড়ি পুঞ্জিভূত করে রেখে তা বার বার গননা করব এবং আলাহতায়ালা যে সব ক্ষেত্রে ব্যয়/ দান করতে বলেছেন তা ভুলে গিয়ে কৃপণতার পথ বেছে নেব। যারা রাশি রাশি স্বর্ণ, রূপা ও সম্পদ জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদেরকে কঠোর শাস্তির সংবাদ দেয়া হয়েছে। এভাবে টাকাকড়ি, ধন-সম্পদ জমিয়ে রেখে এর মাধ্যমে অমরত্ব লাভের বৃথা স্বপ্নে বিভোর থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং কৃপণের মত কিংবা অমরত্ব লাভের নেশায় যেনতেন উপায়ে সম্পদ আহরণ ও গচ্ছিত করে রাখা হারাম এবং যারা এমনটি করে তাদেরকে হুতামা-দোজখের শাস্তি ভোগ করতে হবে। পরিনামে অশান্তিতে তাদের অন্তর জ্বলে পুড়ে যে ছারখার হয়ে যাবে সে ব্যাপারে সাবধান করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাই বলে পরিবারের স্বাভাবিক চাহিদা পুরণের জন্য কিছুই সঞ্চয় করে রাখা যাবেই না- বিষয়টি এমন নয় বলেই মনে হয়।

এই সাথে নিচের লিংকের লেখাটি দেখে নিলে ভাল হয়-
বিলাসিতা/বৈরাগ্য, কৃপণতা/অপচয় নয়; মধ্যপন্থা অবলম্বনই শ্রেয়-
..............................................................

*সামুর এ ধরনের অদ্ভুদ ব্যবহার সত্যি আমাকে অবাক করেছে!!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×