কবিতা -০১
পাতাবাহারের সারি ধরে কাদামাখা পথে প্রিয় শব্দেরা বিলাপরত।
এপথ থেকে যতই তাকাই আকাশে, শুধুই দীগন্ত বিস্তৃত আকাশ।
হাজার গাছেদের সশব্দ ক্রন্দনে আকাশে চোখ স্থির নয়।
দুচোখ বুজে আসে এই পাতাবাহার ঘেরা সরু কাদার গ্রাম্য রাস্তায়।
দূরে বাড়ির সাদা প্রাচীর।
সাধারন দেয়াল ঘড়ি জীবনে তখন বিকাল সাড়ে চারটা।
গুল্মবুকে শুয়ে পড়ে এতক্ষনে প্রিয় শব্দের মৃত্যু হল।
ঘুরপাক খায় বাতাস পাতাবাহারের কর্দমাক্ত বাহারি দেশে।
প্রিয় শব্দের লাশ নিয়ে কবি থাকে একলা বসে।
দুরথেকে অতি পরিচত কন্ঠে ভেসে আসে "বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি মধ্যে ক্ষীর নদী
উইড়া যাবার সাধ আছিল, পাঙ্খা দেয়নাই বিধি। "
দোতালার বারান্দায় আলো লক্ষ্য করছি আমি।
তবে কি অতি সাধারন দেয়াল ঘড়ি জীবনে সন্ধ্যা নেমেছে?
সবুজ ডালপালা অন্ধকার হবার ভীষন একাকী সন্ধ্যা।
ব্যাক্তিগত নদীর ক্লান্ত সঙ্গীত শুনে একাকীত্ব কাটেনা।
প্রিয় শব্দের লাশ খালপাড়ে রাখা আছে, জোয়ারে ভেসে যাক।
খালপাড়ে এককালে বেজেছিল নারকেল পাতার বাশি।
এখন রাত হয়ে গেছে অতি সাধারন দেয়াল ঘড়ি জীবনে!!
অস্থির স্নায়ুতন্ত্র সাহায্যপ্রার্থী।
কবিতা ০২
তীব্র গভীর অথচ কোমল তোমার আলতা ঠোটে দীর্ঘচুম্বনে
কয়েক হাজার মাইল চলার পর রাস্তার বুক চিরে আমার শৈশব এর
মখমল প্যান্টের স্মৃতিমাখা গন্ধ নাকে এসে লাগে।
তিক্ত কটু গন্ধ আসে।
জলপাই সবুজের গভীর দিন ফুড়ে বিশাল কাচের বয়াম ভর্তি দমকা
হাওয়া নিয়ে আসে।
আমায় উথাল পাথাল করে তোলে হাওয়া এবং ছিন্ন পথ।
আমার সম্বল শুধু এই পচে যাওয়া শরীরের মাংস।
উজ্জল রোদে ঝলমলিয়ে থাকা উত্তরের বারান্দায় বসে তোমার
ওষ্ঠে ফের চুম্বন করি।
আহারে আমার মখমল প্যান্ট!
আহারে কান্নার বারান্দায় বসে তোমার চুমু।
তোমার প্রতি ইঞ্চিতে লেগে থাকা প্রবলভাবে এবং তন্ময়
দৃষ্টি।
কবিতা ০৩
এইখানে রক্তের বীভৎসতার ছাপ নেই লেগে।
আকুল ঢেউ ওঠেনা ধমনীতে।
রুক্ষগাছের পাতারা দিনভর গাইছে প্রতিশ্রুতির গান।
প্রেমের আশ্লেষে তৃপ্তির শীৎকার ওঠে রাতের উঠোনে।
ঝড়ের আভায় আলোকিত রেনুমাখা ওই চোখে যুদ্ধের সমস্ত নিষ্ঠুরতা।
শরীরের রাজধানী চুম্বন শেষে চেয়ে থাকি ওই চক্ষুপানে।