ইসলাম নারীকে চারদেয়ালে বন্দি করে রাখে। এই দাবীটার মুল উৎসই হল ইসলামে পর্দার বিধান। এই পর্দার বিধান নিয়ে যুক্তিতর্কের শেষ নেই। ইসলামে পর্দার বিধানটাকে সবাই কম বেশী ঘসামাজা করে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে। অনেকে পর্দাটাকে নির্দিষ্ট কিছু পোশাকের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলেছে। অনেকে পর্দার সাথে পোশাকের কোন সম্পর্কই নেই বলে গলা ফাটিয়ে চেচাচ্ছে। পর্দার বিধান কি? বা ইসলাম কি পর্দার বিধান দিয়ে নারীকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে (নাউজুবিল্লাহ)? ইসলামে নারীর জন্য পর্দা কি শুধু সমাজকে পশ্চাৎপদতার দিকে ধাবিত করে? ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন যদি আপনার মনে ঘুরপাক খায় তবে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আপনাকে আমি পরামর্শ দিব আগে আপনার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুন। তারমানে আপনি কি মুসলিম? নাকি স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন না?
আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তবে আমার উত্তর গুলো লক্ষ্য করতে পারেন। আর যদি আপনি নাস্তিক বা অন্য ধর্মাবলম্বী হয়ে থাকেন তবে আপনাকে আমি প্রশ্ন করব, "নারীকে তার সৌন্দর্য্য প্রকাশে নিষেধ করে নারীর ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে দাবী করে আপনার সেই লেভেলের গাত্রদাহ হয় তবে আপনি কেন পুরুষের দৃষ্টি নিম্নমুখী করতে বলা হয়েছে বিধানটা শুনলে বলেন না আরে এতেতো পুরুষদের ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে!" নাকি আপনার চুলকানিটা লেজকাটা শিঁয়ালের মত যে নিজের লেজ হারাইছে তাই অন্য সবার লেজ দেখলে ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে।
এবার আসি যারা নিজেকে মুসলিম দাবী করছেন তাদের কাছে। আপনার চয়েজের অপশন আছে, সেটা হচ্ছে আপনি মুসলিম হবেন কি হবেন না? কিন্তু ইসলাম চয়েজ করার পর আপনার ক্ষেত্রে আর "মাই বডি মাই চয়েজ" রুলস এপ্লিকেবল না। কারন নিজের জান, মাল, ইচ্ছা সব কিছু সমর্পণ করার নামই ইসলাম। নিজ থেকে ঘোসনা দিচ্ছেন যে, "আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মহানবী (সাঃ) আল্লাহর শেষ রাসুল। " অর্থাৎ নিজেই ইসলামী জীবন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন আবার নিজেই এই জীবন ব্যবস্থার নীতিকে অস্বীকার করছেন! হাউ ফানি! নিজেকে মুসলিম / মুসলিমাহ দাবী করার অর্থ হচ্ছে আপনি এখন আল্লাহর বিধান এবং রসুলুল্লাহর (সাঃ) নির্দেশিত পথে চলতে বাধ্য। আর আল্লাহর নির্দেশ এবং রাসুলের (সাঃ) দেখানো পদ্ধতি অনুসারে আপনি মুমিন হলে আপনার দৃষ্টি অবনত করতে আপনি বাধ্য এবং আপনি মুমিনাহ হলে আপনার সৌন্দর্য্য পরপুরুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে আপনি বাধ্য। ইউ হ্যাভ নো চয়েজ এট অল নাউ।
এখন আপনার দিকে আসি। আপনার মন্তব্য হচ্ছে আপনাকে পুরুষ সমাজ পর্দা করতে বাধ্য করছে এতে করে আপনার উপর পুরুষতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। এটা আপনার বাবা, ভাই কিংবা স্বামী হতে পারে। আপনি নিজ ইচ্ছায় আপনার সৌন্দর্য্য হেফাজত না করলে আপনি নিজে গুনাহগার হবেন। কিন্তু আপনার ভাল মন্দের দায়িত্ব আপনার অভিবাবকের উপর অর্পন করা হয়েছে। অর্থাৎ আপনি নিজে গুনাহগার হওয়ার পাশাপাশি আপনার অভিভাবকও এই গুনাহের অংশিদার হচ্ছেন। এটা পুরুষ সমাজ কর্তৃক নারীকে দমিয়ে রাখার জন্য নয়। এটা আল্লাহর বিধান পালনের জন্য। একইসাথে একটা ছেলের জীবনের সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদকে (মা, বোন, স্ত্রী) রক্ষনাবেক্ষনের জন্যও।
এখন আপনাকে প্রশ্ন করি। আপনি অফিসে চাকরী করছেন। আপনার কম্পানির এমডি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিল যে, আগামীকাল থেকে সবাইকে শরীর আপাদমস্তক ঢাকা মোটা কাপড়ের ইউনিফর্ম পরে আসতে হবে। না পরলে জরিমানা এমনকি চাকরিও চলে যেতে পারে। যেমনটা, ডিফেন্সে কর্মরত কর্মকর্তাদের পোশাক হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে কেন আপনি প্রশ্ন তুলেন না যে, "এতে ব্যাক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে? কিংবা কেন বলেন না যে, এভাবে নারীকে দমিয়ে রেখে দেশকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারমানে আপনার চুলকানিটা শুধু ইসলামের বিধানে! আমরা মুসলিম মুসলিমারা আল্লাহকে আমাদের রব হিসাবে মানি। সো তিঁনি আমাদের জন্য যেটা নির্ধারণ করেছেন সেটাই আমাদের জন্য চূড়ান্ত। আপনি আজকে আপনার নফসের গোলাম, কালকে টাকার গোলাম, পরশুদিন ক্ষমতার গোলাম, তরশুদিন বিজ্ঞানের গোলাম কিন্তু আমরা সেই মালিকের গোলাম যিঁনি আপনাকে এবং আপনার উপাস্যকে সৃষ্টি করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯