somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মামুন রেজওয়ান
আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

"অস্তিত্বের গল্প"

০৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এথিস্ট (নাস্তিক):- এই সৃষ্টিজগত তৈরির পিছনে কোন সত্ত্বার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে।
এগনস্টিক (অজ্ঞেয়বাদী) :- কোন সত্ত্বা আছে নাকি নেই এই সম্পর্কে সৃষ্ট হিসাবে আমাদের জানা সম্ভব নয় অথবা সৃষ্টির পিছনে কোন স্বত্ত্বার অস্তিত্ব আছে নাকি নেই সেব্যাপারে নিশ্চিত নয়।

আমি, আপনি এই পৃথিবীতে এক্সিস্ট করছি। এই পৃথিবীও আমাদের চোখের সামনে এক্সিস্ট করছে। প্রশ্ন ধরে ধরে এগিয়ে যাই।
এই পৃথিবী বা আমি কিভাবে অস্তিত্বে আসলাম? তিনটা অপশন হতে পারে যৌক্তিকভাবে।
১. নাথিংনেস বা পরম শুন্যতা থেকে
২. এমনি এমনি এসে গেছে (বাই চান্স)
৩. সামথিং থেকে
এর বাইরে কি আর কোন অপশন আছে? ভেবে দেখুন।
এই তিনটা অপশনকে যৌক্তিকভাবে পর্যালোচনা করা যাক।

১. নাথিংনেস বা পরম শুন্যতা থেকে
পরমশুন্যতা বলতে বুঝায় এবসোল্যুটলি নাথিং। পরম শুন্যতা থেকে সামথিং আশা সম্ভব না। কেন সম্ভব না? উদাহরন সেই, এক বক্স আপেল আছে। আমি সেখান থেকে কিছু আপেল আনতে পারব। এখন যদি আপেলের কোন বক্স না থাকে সেখান থেকে কি কোন আপেল আসবে? সম্ভব না। তারমানে প্রথম অপশন বাতিল।

২. এমনি এমনি এসে গেছে (বাই চান্স)
বাই চান্স বা এমনি এমনি র‍্যান্ডমলি এসে গেছে। র‍্যান্ডমনেস বা অধারাবাহিকতা কখনও ইউনিফর্ম হয়না। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখবেন প্রত্যেকটা এক্সিসটেন্স একটা ইউনিফর্ম রুল ফলো করে। গ্রাভিটেশন ল সব সময় বস্তুকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকেই আকর্ষন করে। সূর্য, পৃথিবী নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুর্নায়মান, এর ব্যাতিক্রম কখনও ঘটেনা। যদি সব কিছু র‍্যান্ডমলি এক্সিসটেন্সে আসত তাহলে আমাদের ভৌত জগতের মধ্যেও অধারাবাহিকতা দেখা যেত। এই অপশনও বাতিল।
কিছু আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যেমন Quantum Fluctuation বা Multiverse Theory বলছে, এই মহাবিশ্ব হয়তো এমনি এমনি এসেছে বা অসংখ্য বিকল্পের মধ্যে একটি। কিন্তু এদের যুক্তির গভীরে গেলে দেখা যায়, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন আসলে কোনো “পরম শূন্যতা” নয়, বরং একটি বিদ্যমান ক্ষেত্র যেখানে নিয়ম ও এনার্জি আছে—এটা “Nothing” নয়, “Something”। অন্যদিকে মাল্টিভার্স থিওরি, যদিও জনপ্রিয়, তবুও তা পর্যবেক্ষণযোগ্য নয় এবং “সেইসব মহাবিশ্ব কোথা থেকে এলো?”—এই মূল প্রশ্নকে পাশ কাটিয়ে যায়।
সুতরাং, আমরা যৌক্তিকভাবে বলতে পারি: এমনি এমনি বা বাই চান্স মহাবিশ্বের অস্তিত্বে আসা অসম্ভব এবং অযৌক্তিক।

৩. সামথিং থেকে
কিছু থেকে কিছু রুপান্তর সম্ভব। অর্থাৎ আগে থেকেই এক্সিসটেন্সে বা অস্তিত্বে কিছু একটা আছে যার দ্বারা এই রুপান্তর ঘটেছে এবং ঘটছে। তাহলে পরবর্তী প্রশ্ন চলে আসে যেই এক্সিসটেন্স আছে সেটার এক্সিসটেন্স কিভাবে আসল? ধরে নিলাম “ক” এক্সিসটেন্সে আছে। তাহলে “ক” কার মাধ্যমে এক্সিসটেন্সে আসল? ধরে নিলাম “খ” থেকে। আবার প্রশ্ন তৈরী হয় তাহলে “খ” কিভাবে এক্সিসটেন্সে আসল? এভাবে প্রশ্ন করে করে আপনি অসীম পর্যন্ত যেতে থাকবেন যা ইনফিনিটি রিগ্রিস নামে পরিচিত। এভাবে অসীম পর্যন্ত গেলে এই পৃথিবী কখনও এক্সিসটেন্সে আসতনা। মানে আপনাকে থামতে হবে একটা পর্যায়ে গিয়ে। উদাহরন দেই। আপনাকে কেউ যদি বলে , “আপনি ইনফিনিটি সংখ্যক মার্বেল গুননা শেষ করে আমাকে একটা কল করেন।“ আপনি কি আদৌ আমাকে কল করতে পারবেন? পারবেন না। কারন আপনি মার্বেল গননা শুরু করার পর এই গননা শেষ হবেনা কারন এটা ইনফিনিটি বা অসীম সংখ্যক।
যেহেতু আমরা এক্সিস্ট করি এই পৃথিবী এক্সিস্ট করে। সুতরাং যৌক্তিকভাবে সেখানে একটা এক্সিসটেন্স থাকতে হবে যা অনাদী অনন্ত। যার শুরু কিংবা শেষ নেই। এই সত্ত্বাকে বলা হচ্ছে নেসেসারি এক্সিসটেন্স। অর্থাৎ আপনি আল্লাহ বা গড বা এনার্জি যাই বলেননা কেন “Something must need to be there before of all”

আপনি যদি ধাপে ধাপে এই যুক্তিগুলো অনুসরন করেন তাহলে আপনাকে একজন সত্ত্বার অস্তিত্ব স্বীকার করতেই হবে। যদি আপনি অস্বীকার করতে চান তাহলে এই যুক্তিগুলোর সাউন্ডনেস বা ভেলিডিটিতে সমস্যা আছে কিনা সেটা ব্যাখ্যা করবেন অথবা এই যুক্তিকে খন্ডন করে এরকম একটা কাউন্টার আর্গুমেন্ট আনবেন।

এই যুক্তিকে খন্ডন করার মত কোন যুক্তি আপনি যদি না পান। এরপরও যদি আপনি আপনার পজিশন ধরে রাখেন (এথিস্ট / এগনস্টিক) তাহলে সেটা আর ইন্টেল্যাকচুয়াল ডিসিশন হয়না। সেটা হয়ে যায় ইমোশনাল ডিসিসন। অন্ধ বিশ্বাস, ধর্মান্ধ বলে বলে মুখের ফেনা তুলে ফেলা গোষ্ঠী যদি অন্ধবিশ্বাসী হয় ব্যাপারটা খুব প্যাথেটিক।

আমরা পরবর্তীতে এই এক্সিসটেন্সের পরিচয় জানব এবং কি কি গুণ থাকতে হবে জানার চেষ্টা করব ইন-শা-আল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৪৮
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×