somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় উগ্রবাদ বনাম ঈমানী দায়িত্ব

২৭ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশের এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত সমালোচিত ইস্যু মোদীর সফর। বাংলাদেশের ৫০ বছর ফুর্তি ও বঙ্গবন্ধুর শত জন্মবার্ষিকী। প্রশ্ন হল মোদীর এই সফর কে নিয়ে কেন ৫ জন লোক মরতে হল? কেন এতো ধর্মীয় উগ্রতা? মোদীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কি আমরা আমাদের পরিপূর্ণ হক আদায় করতে পেরেছি? নাকি শুধুমাত্র নিজেদের মধ্যে চরম বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজটি হয়েছে? এইভাবে যদি কেন খুজি তাহলে হয়ত দিন চলে যাবে কোথাও মনে হয় সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে না।

তবে আমাদের দেশে ধর্মীয় দলগুলোর (সব না) মোদীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করা ফরজ, না হলে ঈমান থাকবে না এইরকম বয়ান করেছেন নিয়মিত। এর কোন সঠিক দলিল আমি পাইনি। ধরুন আমি মোদীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলাম তাহলে কি আমি ইমানদার? তাহলে কি আমি জান্নাতে চলে যাব? এর কোন সঠিক দলিল আছে কি? হয়ত আমাদের দেশের আলেমদের মতে (সবাই না) আছে। প্রশ্ন হল মোদী কি শুধু মুসলিম বিরোধী না আরও এইরকম রাষ্ট্র বা রাষ্ট্র প্রধান রয়েছে? যদি থেকে থাকে তাহলে তারা যখন এই দেশে সফর করে তখন কি এই রকম উগ্রতা ছড়িয়েছে বা চড়াবে? আমার মনে হয় হবে না। অনেক মুসলিম দেশ রয়েছে যেখানে শরিয়া আইন রয়েছে সেসব দেশে মোদী অনেক সফর করছেন। সেখানে কি মুসলিম নেই সেইসব দেশের সব মানুষ কি বেইমান? অবশ্যই না। তাহলে কেন এই উগ্রতা আমাদের দেশে? আমি কখনও উগ্রতাকে সমর্থন করি না।

চীনে প্রায় ২০ লক্ষ উইগুর মানুষকে ধর্মহীন করেছে। আমার জানামতে চীনের প্রেসিডেন্ট আসার আগে বা পড়ে কোন আন্দোলন হয়েছে কি না জানা নেই। এমনকি চীনের রাষ্ট্রদূত কোন একটি ইসলামি দলের নেতাদের বরিশালের জামাই আদরের আপ্যায়ন তার দেওয়া উপহার সাদরে গ্রহন করেছেন আমি এই উপহার নেওয়াকে খারাপ চোখে দেখি না। প্রশ্ন হল এইখানে কি ঈমানী পরিচয় দিচ্ছি? মুঠেও না তাহলে এই উগ্রতা কি আমার দেশের বিরুদ্ধে হচ্ছে না?

আমাদের বাংলাদেশের মানুষ যাকে সবচেয়ে সম্মান দিয়ে থাকি সেই এরদগান কোন কথা বলেনি এমনকি উইগুর ইস্যুতে। পারলে এরদগান কে এই দেশের শাসক বানিয়ে দেয় তারা। এই এরদগান কে বর্তমান সময়ের উমর ও বলেছেন অনেকেই। অথচ এই এরদগান নিজেও লক্ষ লক্ষ কুর্দি দের হত্যার নির্দেশ দিয়েচেন সিরিয়া যুদ্ধে কেও তো কোন কথা বলেনি। সেও এসেছিল এইদেশে কোন আন্দোলন হয় নি।
সব বাধ দিয়েও যদি বর্তমান সউদিয়া আরাবিয়া কথা বলি প্রতিদিন ইয়েমেন যে মানুষ মারছে এরা কি ইহুদি, নাছাড়া যে এদের হত্যা করতে হবে, না খেয়ে মানুষ মরছে, গাছের পাতাও পাচ্চে না খাওয়ার কোন আলেম তো কোন ফতুয়া দেন না তাদের বিরুদ্ধে।

আসলে কি সঠিক কাজটি আমরা করছি এই প্রশ্ন আসে বারে বার। ফেসবুক একটি পোস্ট একজন লিখল হাটহাজারিতে একজন পুলিশ কে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সাথে সাথে শত শত ভক্ত, আলেম এমনকি মুফতি সাহেবরা আলহামদুলিল্লাহ বলছেন। আমি কমেন্ট করেছিলাম পুলিশ জাহান্নামে গেছে কিভাবে আপনি জানলেন? আমাকে কি বলেছে নাই বললাম। তাহলে কি আমাদের ঈমান এই? এই কি ঈমানী দায়িত্ব?

ব্যাক্তিগতভাবে আমি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি প্রায় ৮ বছর। অনেক ধরণের গবেষণা কাজ করেছি সেইসাথে ধর্মীয় উগ্রাবাদ নিয়েও কাজ করেছি। রাজশাহীতে বাংলাভাই এর আবির্ভাবের সময় ওই বাগমারায় কাজ করেছি অনেক ঝুকি নিয়ে। ঐসময় দেখেছি এইসব উগ্রবাদকে কিভাবে ঈমানী কাজ বলে ঝাহির করত। অতচ এই ক্ষুদ্র জীবনের যতটুকু ইসলাম সম্পর্কে জেনেছি কোথাও এই রকম উগ্রতার কথা পাইনি। তাহলে কেন এই বিভক্তি?

এই সময়ের একটি গবেষণার বিষয় বলতে চাই, তা হল বর্তমান সময়ে কোভীড এর কারনে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্চে এইদেশের সম্পদ যাদের বলা হয় সেই ছাত্র সমাজ। সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকার একটা বিষয়ে দেশের তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা কাজ পরিচালনা করেছে যেখানে এমন একটি সংঘটনের কথা তারা বলেছে যার নাম কোন দিন শুনিনাই সে সংঘটন শুধু বাংলাদেশ না ব্রিটেন ও জঙ্গি দলের সদস্য সংগ্রহ কাজে লিপ্ত। সেখানে পড়াশুনা করছে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কার্যক্রম ও গতিবিধি চিহ্নিত করেছে তার সূত্র খুজতে তাদের এই গবেষণা। মজার বিষয় হল কাজ করতে গিয়ে তার কিছু আলামত পেয়েছি। প্রশ্ন হল ওই সংঘটনটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়নি তবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে গোপনে তাদের দলীয় নেতাদের বিচারের কারনে।
প্রশ্ন হল দেশের মধ্যে খারাপ কাজ করেন ভালো কথা রাজনৈতিক ভেদাভেদ রয়েছে সেই জন্য কিন্তু ধর্মের নাম করে এইসব কাজ বাহিরেও করছেন সেটা কততুকু ঈমানী হচ্ছে তার কি কোন জবাব আছে?
সর্বত্র এই ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি করা হচ্ছে। মতের না মিল হলে জাহান্নামি, মুরতাত, কাফের ফতুয়া দেওয়া হচ্ছে মুসলমান মুসলমানকে এক্ষেত্রে কতটা ঈমানী দায়িত্বের পরিচয় দিচ্ছি তা কি আমরা ভাবি কখনও?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২৯
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×