মানুষ বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে থাকেন। বাহ্যিক কাজকর্মে মানুষকে কখনোই শতভাগ চেনা বা বোঝা যায় না। এর কারণ হচ্ছে পৃথিবীতে মন বোঝার কোনো রোবোটিক বা স্বয়ংক্রিয় ইকুইপমেন্ট এখন অবধি আবিষ্কার হয় নি। যদি হয়েও থাকে থাকে তা ১০০% সঠিক নয়।
মানুষের নিজেকে উপস্থাপন করার একটি মাধ্যম হচ্ছে তার মনুষ্য গলা কে জিরাফের মতো লম্বা ভেবে নিয়ে একতরফা বাড়াবাড়ি করা। এতে যদি তিনি সঠিক কথাও বলেন, তারপরও মানুষ তাকে সহ্য করতে পারেন না। বিরক্তিকর মনে করেন।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর একটা বাস্তব উদাহরণ দেই। জোয়ার এবং গণজোয়ার এর প্রার্থক্য আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি। দেশের এই মুক্তি জোয়ারে যদি ১০% রাজনৈতিক লোকবল আসে তবে ৯০% এসেছেন সাধারণ মানুষ, কারণ আগে কখনোে এতো ছাত্রী, শিশু, বাবার সাথে মেয়ে,মায়ের সাথে ছেলে এসেছেন প্রতিবাদী রূপে এরকম দেখা যায়নি। তাই এটাকে গণ জোয়ার বলেছি , গণ জোয়ার কে কোন কিছু দিয়ে মিথ্যা প্রমান করা যায় না বা আটকানোও যায় না। তারা এসেছেন তাদের অধিকার আদায় করার স্বপ্ন নিয়ে, মৃত্যুর লাল রক্তের নিরস্ত্র বদলা নিতে,যেখানে জীবনের মায়া তুচ্ছ। অনেকেই দেশের এই পরিস্থিতিকে জামাত, শিবির, বিএন পি র তান্ডব লীলা বলে তাদের মত প্রকাশ করে এসেছিলেন কয়েকদিন যাবৎ, এখনো করেই যাচ্ছেন। এটা হচ্ছে গলাবাজির নিকৃষ্ট উদাহরণ।
ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি সাপের খোলস বদল করার কথা। কোনোদিন সচক্ষে দেখা হয়নি। হবে কিনা তাও জানিনা । তবে একই রকম পদ্ধতি দেখছি চোখের সামনে কিছু মানুষের বদলে যাওয়ার ধরণ দেখে। প্রথমেই বলেছিলাম মানুষের মন বোঝার কথা। জানিনা এদের মনের ভেতর কি আছে। তার পরেও বলি , কেউ হয়তো এই গণ জোয়ারের বিজয়ের শেষ মুহূর্তে এসে নিজেকে তাদেরই একজন বলে মিশে যাচ্ছে, কেউ হয়তো পরবর্তী সুবিধাভোগের আশায় রং বদলাচ্ছেন, কেউ হয়তো সেফজোনের মানুষ। তবে একটা কথা স্পষ্ট মনে রাখা উচিত, যে রং নিয়ে এতদিন গলাবাজি করে গেছেন সে রংটাও মানুষ ভুলে যাবে না।
বিজয় আসুক নতুন এক বাংলাদেশের। কোটি কোটি মানুষের মনের আশা পূরণ হোক এই মুক্তির গণজোয়ারের মাধ্যমে। যারা আত্মত্যাগ করলো বুক রাইফেলের সামনে পেতে দিয়ে, তারা অমর হয়ে থাকবে নতুন বাংলাদেশের মানুষের বুকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:২৪