somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর নয় শিশুহত্যা; আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট থাকতে মাঝেমধ্যেই মাকে
কাঁদতে দেখতাম।দাদি মাকে বলত
মাগীর বেটি তোর পাঁচটা সন্তান তো
সব খেয়ে ফেলছে তুই আবার কি খাবি।
প্রসংঙ্গক্রমে বলে রাখি দাদার
দরিদ্রিত যৌথপরিবারে
চাচা,চাচি,ফুফু, কাজিন কৃষাণসহ মোট
বাইশ জনেরর মুখ একবাড়িতে ছয়টি ঘরে
বসবাস করত। মা রান্না করত শশ্বুর
বাড়িতে
আর খাবার খেতে মায়ের সাথে
আমরা
যেতাম নানীর বাড়িতে। কৈ মা তো
আমাদের মেরে ফেলে দেই নি? বড় দুই
ভাই নানীর বাড়িতে ঘুমাতে যেত আর
বড় দুই বোন আর মা একটি খাটলাই আর
আমি আর আব্বা চৌকিতে ঘুমাতাম।
রাতে যখন ঘুমাতাম দু একদিন পরপরই
আব্বা আমাকে কোলে করে নিয়ে
বোনদের পাশে শুয়ে দিত।পাঁচ সাত
মিনিট পর হঠাৎ মার কেমন জানি
কান্নার শব্দ
পেতাম, তখন আব্বার উপর আমার খুব রাগ
হত।কৈ মা-বাবা তো আমাদের মেরে
ফেলে দেইনি।এখনকার বাবা
মায়েরা তাদের সন্তান কান্নাকাটি
করলে বলে ওরে আমার চমচম,আমার
রসগোল্লা ব্লা ব্লা কাঁদে না, কাঁদে
না।তারপরে ও সন্তানরা কাঁদতে
থাকে। তারপর যখন দেখে বাবা-
মায়েদের ভয়ংকর রূপ তখন তারা কান্না
থামিয়ে দেই।আমরা যখন কাঁদতাম তখন
এ রকম ছিল না। এই কাদিস না ভুত
আইলো,কাদলে ভুত চলে আসবে..... বলে
কান্না থামাতো।একদিন এমন
কান্নাকাটি করতে লাগলাম যে ভুত
দেখিয়েও আমার কান্না থামাতে
পারল না।তখন বাবা আমার দুই হাত আর
দুই পা ধরে নিয়ে পুকুর পাড়ে চলে
আসলো। কান্না না থামালে আমাকে
পুকুরে ফেলে দিবে। তারপরেও জেদ
করে কেদেছিলাম। কৈ এখন ও তো
বেচে আছি।ছোট থাকতে স্কুলে
যাওয়ার চেয়ে গরু চড়াতে মাঠে
যেতে ভালো লাগতো। কৈ আমার
মধ্যে কোন স্বপ্ন দেখতে না পেয়ে
বাবা- মা আমাকে তো মেরে
ফেলে দেইনি। এখন আমরা তিনভাই
একজন প্রফেসর,একজন
বিজনেস ম্যান, আর আমি
ইন্জিনিয়ার।দুই বোনের একজন
ডাক্তার,একজন ব্যাংকার।
.
.
এবার একটু ইতিহাসের দিকে তাকাই।
আমরা যাকে বাংলাদেশের
রত্নাগর্ভা বলি সেই আয়েশা ফয়েজ
কত কষ্ট করে হুমায়ূন আহমেদ,জাফর ইকবাল
আর আহসান হাবীবদের মানুষ করেছেন
সেটা আয়েশা ফয়েজের "জীবন যে
রকম" বা হুমায়ূন আহমেদের
"ছেলেবেলা" বই দুটি পাট করলেই
বুঝতে পারি।একবার হুমায়ূন আহমেদ তার
মাকে জিঙ্গেস করেছিলেন আমাদের
প্রতি আপনার কোন উপদেশ আছে কি
না? জবাবে তিনি ( আয়েশা ফয়েজ)
বলেছিলেন উপদেশ না তোমাদের
প্রতি আমার একটা আদেশ আছে আর তা
হল " কেউ যদি তোমাদের কাছে টাকা
ধার চাই,তবে কখনও না বলবে না।
আমাকে অসংখ্যবার মানুষের কাছে
ধারের জন্য হাত
পাততে হয়েছে। ধার চাওয়া যে কি
লজ্জা এবং অপমান আমি তা জানি।"
.
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস"জোসনা ও
জননীর
গল্প "তেও তাদের দুর্দশার করুন
চিত্র আমরা লক্ষ করি। এপি জে আব্দুল
কালামের আত্বজীবনী উয়িংস অব
ফায়ার পড়লে বুঝতে পারি তাকেও
মেরে ফেলা উচিৎ ছিল। বোনের
বিবাহের হাতের বালা বিক্রি করে
সে পড়ালেখা চালিয়ে গেছে।
.
বনশ্রীতে দুই ভাই বোনকে শ্বাস রোধ
করে তাদের মা মেরে ফেলল।যুক্তি
তাদের ফিউচার খারাপ,দারিদ্র্যতা ।
এই খোড়া অজুহাতে পিতা - মাতারা
যদি তাদের সোনামনিদের মেরে
ফেলত তাহলে আজ ও আমরা অন্ধকারে
থেকে যেতাম,কারন আমরা পেতাম
না টমাস আলভা
এডিসনকে।আমরা পেতাম না বিখ্যাত "
মা "
উপন্যাসের মাক্সিম গোর্কি কে।আমরা
পেতাম
না বিদ্যারসাগর ইশ্বর চন্দ্রকে।আমরা
পেতাম না বিদ্রোহী কবি কাজী
নজরুল ইসলাম কে।আমরা পেতাম না
বাংলাদেশ বাংকের গর্ভনর আতিয়ার
রহমান কে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:২৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×