আজ ব্লগ খুলিয়া চাঁদগাজীর ছিঁচকাঁদুনে পোস্ট পড়িয়া আমার ছেলে বেলার এক ঘটনা মনে উদয় হ্ইল। তাই আর না লিখিয়া পাড়িতেছিনা। আমাদের বাড়ির পাশের খাল পার হইলেই তাহাদের বাড়ি। সম্পর্কে তিনি কাকা হন। তাহার তিন ছেলে মেয়েকে মানুষ করিবার নিমিত্তে একজন লজিং মাস্টার রাখা হইল। তা মাষ্টারটি যেমন হেংলা-পাতলা তেমনি ছিঁচকাঁদুনে।
মাস্টারটি আবার ভূমি অফিসে ছোট পোস্টে সরকারী চাকরি করিতো। লজিং বাড়ি হতে তাহার অফিস দুই মিনিটের পথ। সেই কাকার ছেলে মেয়েদের পড়া শুরু হইতে না হইতেই মাস্টার মশাই তাহার ছাত্র ছাত্রীদের উপর মহা খ্যাপ্পা হইয়া তাহাদের অভিবাবকদিগকে নালিশের পর নালিশ করিতে লাগিলেন।
বাপ-মার কাছে এহেন নালিশের কারণে মুখ ঝামটা, চোখ কটাক্ষ, রাগারাগি, বকাবকি খাওয়ার পরিমাণ যখন বেড়েই চলল তখন মাস্টারকে নাস্তানুবাদ করার ফন্দি আটতে লাগলো তাহার গুনধর ছাত্রছাত্রী। তাহারা রাত্রি বেলায় মাস্টারের খাবার পরিবেশনের সময় তাহার বিছানায় পানি ফেলে ভাসায়া দিল। রাতে ঘুমাতে পারবেনা বলিয়া মাস্টার কাদো কাদো গলায় বলিলেন-হায়! হায় একি করিয়াছ! আমি এখন সারা রাত্রি ঘুমাইবো কোথায় ?
ব্যস আর যায় কোথায়। পরদিন ছাত্র ছাত্রীর মুখে মুখে রাষ্ট্র হইয়া গেল তাহাদের মাস্টার ছিঁচকাঁদুনে। এর পর থেকে মাস্টারের পিতৃপ্রদত্ত নাম বিলুপ্তি ঘটিলো। ছিঁচকাঁদুনে নামের আড়ালে তাহার প্রকৃত নাম চাপা পড়িল।
অনেক বৎসর পর্যন্ত সেই ছিঁচকাঁদুনে মাস্টার লজিং বাড়িতে টিকিয়া ছিল ? গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই তাকে ছিঁচকাঁদুনে বলিয়া ডাকিতো তথাপিও সে কি করিয়া বছরের পর বছর টিকিয়া রহিল সেইটাই পরম আশ্চার্যের বিষয়!
ছিবি-নিজের আঁকা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:১১