সময়টা ৯৮ কিংবা ৯৯ সাল হবে প্রতিদিনের মত স্কুলে পৌছলাম। বৃষ্টির দিন। ছাত্র-ছাত্রীরা তেমন আসেনি। সবে আসতে শুরু করেছে। ক্লাসে গাল গল্প চলছে। যে যার মত করে এটা সেটা করছে। এক জাগয়ায় কয়েকজন বাংলা মুভি নিয়ে তুমুল আলোচনায় লিপ্ত। গতকাল আনোয়ার নাকি সালমান শাহ, শাবনূরের তোমাকে চাই মুভিটা দেখেছে। এই মুভির একটি গান-
আমার নাকেরই ফুল বলেরে তুমি যে আমার
আমার কানেরই দুল বলেরে তুমি যে আমার
আমার নাকেরই ফুল বলেরে তুমি যে আমার
আমার কানেরই দুল বলেরে তুমি যে আমার
আমার মন বলে রে
যা কিছু আমার সবই যে তোমার........................................
এই গানে নাকি নায়িকা শাবনূর নাচের ঝড় তুলেছে। যেমন নাচ, তেমনি গান, তেমনি কন্ঠ ও সুর, তেমনি অভিনয় .......এটা বলে সে এই গানটা গাওয়া শুরু করলো এবং এক পর্যায়ে নাচতে শুরু করলো। নাচতো নাচ, সে যা করলো সেটা আর এ জীবনে ভুলবার নয়। নাচতে নাচতে সে বেঞ্চের উপর উঠে গেল এবং তার হেংলা, পাতলা শরীরটাকে এমনভাবে দোলাতে লাগলো এবং অঙ্গ ভঙ্গি করতে লাগলো শাবনূর বা যে কোন নায়িকাই ফেল। আমরা সবাই হাসছি এবং এক প্রকার আতঙ্কিত হচ্ছি এই ভেবে যে ও কখন বেঞ্চ থেকে পড়ে যায়। নিয়মিত চর্চা করলে ও যে সময়ের সেরা ব্রেকড্যান্সার হতে পারতো সে আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
তারপর কেটে গেছে অনেক বছর......................স্কুল ছাড়ার পর আর তেমন দেখা স্বাক্ষাৎ হয়নি আনোয়ারের সাথে। পরে জেনেছি আমাদের এই ব্রেকড্যান্সার যাযাবর জোনাকির মত এদেশ থেকে সেদেশ ঘুড়ে ঘুড়ে, উড়ে উড়ে বেড়ায়। ক’বছর আগে দেখা হয়েছে ওর সাথে বেশ ভরাট স্বাস্থ্য, হাসিটা আগের মতই। আমার তখন চোখের সামনে ভাসছে আমার নাকেরই ফুল বলেরে তুমি যে আমার..... গানের সাথে ছিপ ছিপে আনোয়ারের তুমুল নৃত্য।
সময়-ই সময়ের হন্তারক তাইতো যে হতে পারতো ব্রেকড্যান্সার সে হয়ে যায় যাযাবর জোনাকি।
ছবি-নিজের তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:০৫