somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হঠাৎ দেখা

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এমন অবস্থায় কত ভালো ঘুম হয় সেটা সবারই জানা। আমারও খুব ঘুম পাচ্ছে কিন্তু ঘুমাতে পারছি না। কেন পারছি না সেটা ভাবার চেষ্টা করছি অনেক্ষণ থেকে কিছুই বের করতে পারলাম না। নীলাকে একটা ম্যাসেজ করলাম, 'কোথায় তুমি? কি করছ?' নীলার উত্তর পেয়ে একটু কেমন যেন লাগছিল। উত্তর টা ছিল, 'আমি কোথায় আছি, কি করছি শুনে হয়তো রাগে ফেটে পড়বা।' আমি জানতে পারলাম আমার অসুস্থতার কথা শুনে নীলা একাই সাহস করে বাসা থেকে বেড়িয়েছে আমাকে দেখতে আসবে বলে। কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। কিছু না বলে ভালোমত আসতে বললাম। আমি গোসল করে রেডি হতে বেড়িয়ে পড়লাম। বাস স্ট্যান্ডের কাছে যাবো। ঈদ চলে গেছে ৫ দিন হয়ে গেল তাও রিক্সা ভাড়া ১০ টাকা বেশি। কেন বেশি জানতে চাইলে কোন উত্তর পেলাম না।

অনেক্ষণ থেকে দাঁড়িয়ে আছি নীলার জন্য। মেয়েটা রাস্তা ঘাট তেমন চিনে না তাই ওকে একা কোথাও বের হতে দেইনা। আজ না করবো, আবার ভাবলাম মন খারাপ করবে, তাই না করতে পারিনি। কদিন আগে নীলা বলেছিল স্পঞ্জের মিষ্টি আর দই খেতে ইচ্ছে হয়েছে। আমি ভাবছি আজ দেখা হলে ওকে খাওয়াবো। অনেক রোদ উঠেছে, গরমও ভীষণ। নীলা বাস থেকে নেমে আমার হাত টা ধরে সুন্দর সবুজে ঘেরা এক বাগানের ধারে পুকুর পাড়ে নিয়ে গেল। সেখানে দুজন বসলাম। অনেক কথা বলছিল, আমি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে কথা শুনছিলাম। গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। আমার ক্ষুধা পায়নি, নীলার পেয়েছে। ওকে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে তেলাপিয়া মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ালাম। নীলাকে নিয়ে খেতে গেলে আমার ওকে রোজ রোজ বকা লাগে। ভাত খায় মনে হয় ৩ টাকার, মাছ, মাংস, সবজি ৫ টাকার। এই ৮ টাকায় খাওয়া শেষ। বুঝতে পারলেন না তো?? মানে একদম অল্প খায়। এত এত এত কম খায় যা বলারও বাহিরে। মাঝে মাঝে তো বকাবকি করি যে, বাসায় কিছু খাওয়ায় নাই কখনো? আমার কথা শুনেই হেসে দেয়। আরেক কথা বলতেই ভুলে গেছি। নীলা অনেক হাসে! কারণে অকারণে হাসে। হাসলে ওকে ভালোই লাগে। গোমরা মুখে থাকলে আমার ভালো লাগে না। ওকে হাসি খুশিতেই ভালো লাগে।

নীলা বসে আছে আমার পাশে। আমি নীলাকে বললাম, একটা নাটক দেখবে? সে হ্যা সম্মতি জানালো। ফোন টা পকেট থেকে বের করে নাদিয়া আর জোভানের 'আলো আধারের কাব্য' নাটক টা প্লে করে দিলাম। দুজন পাশাপাশি কাছাকাছি পুকুর পাড়ে সবুজ ঘাসের উপর বসে নাটক দেখছি। এমন সুন্দর মুহুর্তের কথা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চললো। নীলাকে বললাম চলো কিছু হালকা খাবার খাই। নীলা কিছুতেই যেতে রাজী হচ্ছিল না তাও এক রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলাম। হালিম ওর্ডার দিলাম। অনেক দিন থেকে খাওয়া হয়নি। আমার মোটামুটি খেতে ভালোই লাগে। হালিম খাওয়া শেষ করে দই অর্ডার দিলাম। দই শেষ করে দুজনে একটা ঠান্ডা খেলাম। নীলার সাথে একসাথে খেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। ও হ্যা, ওর হাতের রান্না আমার খুব ভালো লাগে। তবুও মেয়েটাকে খেক্ষাই মাঝে মাঝে। এটা কম হইছে, এভাবে রান্না করবা, এটা দিবা এটা দিওনা। যখন আমি এগুলো বলি হয়তো মনে মনে বলে তুমি ছেলে মানুষ তুমি এগুলোর কি বুঝবা।

নীলা বাসায় চলে যাবে। আমার অসুস্থতার কথা শুনে পাগলের মত ছুটে এসেছে। আমার একটু কিছু হলে ও পাগল হয়ে যায়। এমন মায়া, ভালোবাসা, মহব্বত কজনেরই বা আছে। আমি অনেক ভাগ্যবান ওর মত মেয়েকে পেয়ে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা হাজার বছর অটুট থাকুক আমাদের ভালোবাসা। নীলাকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম যতক্ষণ না বাস ছাড়ে। দাঁড়িয়ে থেকে ওর চলে যাওয়া দেখলাম। নীলাও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো যতক্ষণ পর্যন্ত আমায় দেখা যাচ্ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×