somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুষ্টু ছেলে আর মিষ্টি মেয়ের

১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গাড়িতে উঠে ঠাস করে দরজাটা আটকে দিয়েই চিলের মত চিৎকার শুরু করলাম, “কেন তুমি সবার সামনে আমাকে এইরকম বললা? এইরকম অপমান আমি জীবনেও হই নাই… ছি ছি ছি, তুমি কথা বলার আগে কখনো চিন্তা কর না, তাই না? আমার য়ার ভালো লাগতেসে না, আমাকে হোস্টেলে নামায় দাও প্লীজ।” বলেই মুখ ঘুরিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকলাম। ড্রাইভিং সীট থেকে কাকুতি মিনতি শুরু হয়ে গেছে ততক্ষনে। কিন্তু আমার যেই রাগ, যেই জেদ- সেও জানে সহজে ঠান্ডা হব না। রাগ হলেও তার জন্য আমর ভালোবাসার কমতি ছিলো না।
ভালোবাসার
চার দিন ধরে কথা বন্ধ। খুব ভাল হইসে, শয়তানটা বুঝুক ঠেলা। হুহ! আমার সাথে মামদোবাজি!!!! খুব ভাল হইসে, এখন বুঝুক আমি না থাকলে কেমন লাগে!! কিন্তু আমার তো আর ভাল লাগতেসে না। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কথা না বলতে পেরে। এই কয়দিনে কত গল্প জমে গেছে… ধুর! কেন শুধু শুধু এতো রাগতে গেলাম। বেচারাকে কষ্ট দিলাম চিৎকার চ্যাঁচামেচি করে। ভাল লাগতেসে না, কেন আমি এইরকম??? উফ! ফোনও তো দেয় না বেয়াদবটা! খুব মজায় আছে মনে হয়!!!! সামনে এত স্পেশাল একটা দিন……
৫ দিন পর… যাক বাবা, শেষ পর্যন্ত ফোন দিসে।
“হ্যা কি বল।”
“রাগ কমসে?”
“কি বলবা বল। আমি খুব ব্যস্ত।”
“আচ্ছা আমি স্যরি তো বাবু। আর রাগ করে থাইক না, বাসায় আসো।”
“এতোদিন পরে কেন ফোন করসো??? খুব তো মজায় ছিলা মনে হয়!!!! আমি আসতে পারব না, আমার প্রজেক্ট জমা দিতে হবে।”
“আচ্ছা প্রজেক্ট জমা দিও, কিন্তু আপাতত আমাদের বাসা তোমার পথ চেয়ে বসে আছে, সেই সাথে আমিও। আসো প্লীজ, আর রাগ করে থাইকো না। কি হয় রাগ করে?”
“দেখা যাক। যদি পারি আসব। তুমি কি আসবা আজকে?”
“না বাবু এই পুরা সপ্তাহ আমার কাজের চাপ খুব বেশি, ডিউটি পরসে, আসতে পারব না।”
“তাইলে আমি কেমনে আসব? তুমি জানো না আমার একলা আসতে ভাল লাগে না?”
“একটু কষ্ট করে চলে আসো। এই লাস্ট, আর একলা আসা লাগবে না, I promise!”
“আচ্ছা দেখি।”

বৃহস্পতিবার। আমার বাসায় যাওয়ার দিন। আমাকে নিতে আসতে পারে নি। হুহ! বাসায় ঢুকেই এই নিয়ে এমন একটা খোঁচা দিব না!!!!!!

একসাথে অনেকগুলো বেল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আবারো ঝগড়া করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি ততক্ষনে। কিন্তু বিধি বাম! শয়তানটা দরজা খুলেই আমার হৃদযন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়া ওর বিখ্যাত হাসিটা দিল, যে হাসি দেখলে আমার মাথা ঝিমঝিম করে, হাত পা অবশ হয়ে যায়, বুকে সুখের মত ব্যথা বাজে! কিসের কি খোঁচা আর কিসের কি ঝগড়া?? আমি দরজা থেকেই ওর বুকে ঝাপিয়ে পরলাম, সেই সাথে শুরু হইল আমার বিখ্যাত কান্না!
“এইরকম ক্যান তুমি??? কি মজা লাগে তোমার আমার চোখে পানি এনে???” শয়তানটা হাসতেই থাকল……
লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি। মা বাবা কিংবা সমাজ, কেউই আমাদের বিয়েটা মেনে নিত না, কিন্তু আমিও আমার ভালোবাসার অধিকার ছেড়ে দিতে পারছিলাম না। আমার ১৩বছরের ভালোবাসা…… জানি অনেকের চোখে হয়তো এটা গুরুতর অপরাধ, কিন্তু আমি আমার ভালোবাসার হাত কখনই ছাড়তে পারতাম না, উপরে বসে যিনি সব দেখেন উনি আমাকে এত সাহস দেন নি।
চাকরির কারনে আমার শয়তান মানুষটা একটুখানি দূরে থাকে। আর আমি পড়াশুনার খাতিরে শহরে, হোস্টেলে। একমাত্র সাপ্তাহিক ছুটিতেই বাসায় যাওয়া হয়, আমার আর আমার মানুষটার ছোট্ট বাসা। একটাই রুম, সাথে এক ফালি একটা বারান্দা, যে বারান্দায় ভালবাসায় মাখামাখি হয়ে আমরা দুই চাঁদ পাগল মানুষ হা করে পূর্ণিমা দেখি।আর আজকের চাঁদটা তো আরো সুন্দর লাগবে, না হোক পূর্ণিমা!
১৩ বছর পূর্ণ হল আজ আমার ভালোবাসার গল্পের। অপেক্ষা করে ছিলাম এই জীবনটার জন্যই, আমার ভালোবাসার মানুষ যেখানে অসীম মায়ায় আমাকে ডুবিয়ে রাখে, আমার রাগ, জেদ, অন্যায় আবদার সব মেনে নিয়ে গভীর মমতায় আমাকে বুকে টেনে নেয়। অনেক অপূর্ণতা থাকা সত্ত্বেও সব পূর্ণ করে দেয় আমার এই মানুষ…
কথায় কথায় হয়তো কখনই বলি না “আমি তোমাকে ভালবাসি”, কিন্তু যতক্ষন তোমার সামনে থাকি ততক্ষন আমার মাথায় একটা কথাই ঘুরতে থাকে ভাঙ্গা রেকর্ডের মত, “আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি তোমাকে ভালবাসি”………
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:২১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×