আমার রাজনীতিক দর্শক ভিন্ন মন মানসিকতা থাকতে পারে । তাই বলে অন্য রাজনীতিকে সহ্য করব না এই রকম হওয়াটা কি ঠিক ? আমার আপন ভাইটির সাথে ও মতের পার্থক থাকে, তাই বলে কি আমি উনার সাথে কথা বলব না ? বাস্তবে আমার ভাই ও আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত, থানা সেক্রেটারি । আমরা যাহারা বাহিরের দেশে বাস করি, তারা কত দেশের মানুষের সাথে দেখা হয়, তাদের সাথে আমাদের আচার গত কত সমস্যা হয়, কথার ধরণের সমস্যা হয়, রাজনীতি নিয়ে সমস্যা হয়, ধর্মের ব্যাপারে সমস্যা হয় - তাই বলে কি, তাদের সাথে আমরা কথা বন্ধ করে রেখেছি । আমাদের কাজ কর্ম কি থেমে আছে ? নাকি আমরা আমাদের আদর্শের নেত্রীদের চরিত্র আমরা এখানে ও নিয়ে দুইজন দুইদিকে চলে যাই । এতে কি আমার দেশের উন্নতি হচ্ছে, এটা কি আপনারা বলতে পারবেন ? তবে অন্ধ সাপোটার ছাড়া । তারা বলতে পারবে না, কারণ তারা তাদের পার্টি ছাড়া অন্য কাউকে উন্নতি হয়েছে বলে স্বীকার করতে রাজী না ।
কেউ ধর্মের নামে রাজনীতি করে, কেউ ব্যাক্তির নামে রাজনীতি করে, কেউ ক্ষমতার নামে রাজনীতি করে, কেউ আবার আপা-মেডামের রাজনীতি করে, কেউবা দেশের জন্য রাজনীতি করে । সবাই তাদের স্বার্থের রাজনীতি করে থাকে, তবে শেষ ব্যাক্তি ছাড়া । আর এই ব্যাক্তি যে কোন দলের লোক হইতে পারে । এমনকি সেই ব্যাক্তি, রাজনীতিতে নেতা নাও হইতে পারে । আমার জানা একজন লোক আমাদের এলাকার, পাকিস্তান আমলে উনার দুই কানি জমি বিক্রি করে আওয়ামীলিগের রাজনীতি করেছে এবং যাকে উনি এই টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে, উনি একজন সাবেক এমপি, কলেজ অধ্যক্ষ, আর আমার দেখা দেশকে ভাল বেসে যার জমি বিক্রি করেছে, উনি এই কলেজের একজন পিয়ন মাত্র । আমার রাজনীতিতে অন্যের সাথে ধন্ধ থাকতে পারে, মতের মিল নাও থাকতে পারে, তাই বলে, আমরা তাদের বর্জন করব, তাদের সাথে কথা বলব না, যেখানে পাই, সেখানে মারতে হবে, এই ধরণের ঘৃণ্য মন মানষিকতা পরিহার করতে হবে । আমার জামাত শিবির রাজনীতিকবিদদের সাথে রাজনীতিক ধন্ধ থাকতে পারে, কিন্তু তাদের সাথে বসতে পারব না, এইটা কেমন করে হতে পারে । তারা বাংলাদেশের মানুষ, তাদেরকে আমাদের কাছে আনতে পারা আমাদের স্বার্থকতা । তাদের মন মানষিকতা পরির্বতন হতে পারে । আমার বাম রাজনীতির অভিজ্ঞতা হল, কমিনিষ্ট পার্টি এবং ছাত্রশিবিরের ছেলেদের সাথে টেবিল টক করা যায় । হয়তোবা রাজনীতিতে আমার / আপনার আদর্শ বা মতের মিল হবে না, কিন্তু তারপর সাবজেক্ট অনুযায়ী কথা বলা যায় । কোন বুর্জোয়া রাজনীতির ছেলেদের সাথে কথা বলাও যায় না ।
আমি জানি না আপনি, আপনারা হয়ত একমত হবেন না কিনা । আমি বাংলাদেশের বর্জনের রাজনীতির বিরুদ্ধে । আর সেজন্য দেশের প্রধান দুই রাজনীতির আজকের এই অবস্হা । এক নেত্রী আরেক নেত্রীর সাথে কথা বলে না । কিছু দিন আগে সেনা কুন্জে গিয়ে একসাথে বসে থাকলে ও কাহারো চেহারা পর্যন্ত দেখতে নারাজ । মিটিং শেষ হওয়ার সাথে সাথে, দুইজন দুইদিকে চলে যায় । তাদের কর্মীরা ও এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছে । রাজনীতি মানে যুক্তি তর্কে বিশ্বাসী লোকদের জন্য । যারা এধরণের মন মানষিকতা ছড়ায়, তাদের মনে প্রাণে ঘৃনা করি । আমার একটা বিশ্বাস ছিল, আমরা ভিন্ন মনের, ভিন্ন চিন্তার মানুষ হতে পারি, সব শেষে আমরা বাংলাদেশী । আর আমার এই বিশ্বাসের কারণে আমাকে ছাগু বলে খ্যাতি রয়েছে । এইটা শুধু আমি না, বাংলাদেশে ড: পিয়াস করিম, ড: আসিফ নজরুল, আ স ম আব্দুর রব, কাদের সিদ্দিকী, ফরহাদ মজহার সহ অনেকে আজকে ছাগু বা রাজাকার । মেজর জলিল মুক্তিযোদ্ধা ৯ নং সেক্টর কমান্ডার হয়ে ও রাজাকার নাম নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিল । আর আমি তো নাম না জানা আমি -ই । মানুষ কত দিন চোখ বন্ধ করে রাখবে । আমেরিকা ও একসময় এই ধরণের ট্যাগ দিয়ে দুনিয়া ব্যাপি যুদ্ধ করেছে, কিন্তু আজকে মানুষ তাদের কে বুঝতে বাকী থাকে নাই ।
আজকে যদি মিশরের দিকে তাকাই, তারা আলোচনার জন্য কত ধরণের প্রস্তাব দিয়েছে, তারা ক্ষমতা থাকা অবস্হায় তাদের ৭ জন লোককে বিরুধিরা মেরেছে, তাদের অফিস তচনছ করেছে, তারপর পুলিশ বিরুধিদের কিছুই করে না । ক্ষমতা থেকে দেশকে শান্ত রাখতে সব কিছুই করে গেছে । ড: পিয়াস করিম এর কথাই আমি বলব, এভাবে তাদেরকে বাদ দিলে একবার জামাত-শিবির ব্যাক ফায়ার করবে । এইটা তাদের নেত্রী ও বুঝে না, তাদের কর্মিরা ও বুঝে না । এরা আমাদের সন্তান অথবা আমাদের প্রতিবেশি বা এলাকার লোক । আজকে তাদের অবস্হান বেশি হওয়ার কারণ ও এইটা । যে বি ন পি পারে নাই, সেইটা মনে জামাত-শিবিররা করে দেখাচ্ছে । আজকে আওয়ামী রাজনীতির কারণে রাজপথের প্রধান একটা দল করতে সহায়তা করেছে । আজকে বাংলাদেশের মানুষ বি ন পি কিছু না পারলে জা-শি করতে পারবে এই ধারণা করতে পারে । বিগত কিছু দিনের সমাবেশে তার প্রমাণ । বিনপি বা ছাত্রদলের চাইতে জামাত-শিবির উপস্হিতি লক্ষ করার মত ছিল । আমি আমার আদর্শ প্রচার করব কথা মাধ্যমে, যুক্তির মাধ্যমে, আচরণের মাধ্যমে । আর যারা বর্জনের রাজনীতি করেছে, আমরা আজকে তাদের ধারণার কুফল নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছি । বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জামাত-শিবির এখন বিরাট একটা অংশ । আর এইটা আওয়ামীলিগের রাজনীতি বিদরা ও বলতেছে, এমনকি আমাদের অর্থনীতিবিদরা স্বীকার করছে । আর সবই হচ্ছে বর্জনের রাজনীতির কুফল ।
আজকে আমার দেশের রাজনীতি একেক জনের মালিকা সিপের অর্জন, দেশকে আরো পিছনে নিয়ে যাচ্ছে । আমার দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার বলা হচ্ছে, যেমন জিয়াউর রহমান, কাদের সিদ্দিকীকে উদাহরণ দেওয়ার মত । (আমার দুই রাজনীতিবিদদের সাথে মতে প্রার্থক্য অনেক) এসব করে দেশকে বিভক্তি করে দেওয়া হচ্ছে । তাতে আমার দেশের জনসাধারণ ও বিভক্তি হয়ে যাচ্ছে । তাতে রাজনীতি সমর্থক ও কর্মীরা বিভক্তি হয়ে যাচ্ছে । তাতে আমরা হিংসাত্বক পরিবেশ দেখতে পাই ।
তাই আমার আকুল আবেদন, বাংলা ব্লক ডে উপলক্ষ্যে যে সব দেশে পালন করার প্রস্তুতি করা হয়েছে, তাদেরকে স্বাগত জানাই । এইটা একটা মহৎ উদ্দ্যেগ । কিন্তু রাজনীতি বিষভাস থেকে মুক্ত মণাদের নিয়ে করলে সবাই স্বাগত জানাবে । আর যারা রাজনীতি সাথে / পকেটে নিয়ে তাদের বাদ দিয়ে আপনাদের চিন্তা করা দরকার । তাহলে "বাংলা ব্লক ডে" সবার জন্য আনন্দ উপযোগী একটা অনুষ্টানে পরিণত হবে । এখানে সব ফান থাকবে, খাওয়া দাওয়া হবে, এদেশের সমাজ নিয়ে কথা হবে, অভিজ্ঞতা শেয়ার হবে । একজন আরেকজন জানবে । আমাদের যোগ্যতা একত্রে করলে দেশের জন্য হয়তবা কিছু একটা করা যাবে ।
কোন দলের পিছনে ব্যাগ নাই, সবারটা সবাই জানে । কিন্তু কারো গলা ফাটাইয়া বলতে পারে, কারো আবার মিথ্যা কথা বলতে পারাটা অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে । স্বাধীন বাংলাদেশে কোন দল কত খুন করেছে, তার হিসাব নিশ্চয় সবার জানা । আর আমাদের বিভক্তি রাজনীতির কুফল হল, বিশ্বজিৎ, যা সর্বশেষ হিসাবে আমাদের নিকট উদাহরণ । আপনারা কেহ বলতে পারবেন, এই ধরণের হিংসাত্বক হত্যা কিভাবে সম্ভব হয়েছে ?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:০৮