আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব সংস্থার ২০১৯ সালের উদ্ভাবন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই খারাপ এমনকি নেপালেরও নিচে। অস্বাভাবিক নয় কারণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা একেবারেই হয় না। অনেকসময় হাস্যকর ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বহীন আবিষ্কার নিয়েও আমাদের মিডিয়া হইচই করে। যেমন পাথরকুচি পাতা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে অনেক হইচই হল। এতে যদি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ৫০০০/- টাকা করে হয় তবে সে আবিষ্কার অর্থহীন। আমরা শুনেছিলাম পেট্রোল থেকে পলিথিন উৎপাদনের এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের কথা। তাতে প্রতিকেজি পলিথিনের দাম পড়বে ১০,০০০/- টাকা। এমনসব আবিষ্কারের পেছনে পৃথিবীর কোন বিজ্ঞানীই ছুটবে না। আবার বলতে পারি এসব নিয়ে বহু আগেই বিজ্ঞানীরা ভেবে অর্থনৈতিক বিষয় বিবেচনা করে বাতিল করে দিয়েছে।
আমাদের সেরা বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম তত্ত্বকে কাজে লাগাতে যায় কোয়ান্টাম মেথডে! আমাদের সেরা পদার্থবিদ বলতে চান, আংটিতেই ভাগ্য ফিরে এবং নিজের হাত অলঙ্করণ করেন পাথর বসানো আংটি দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যত ধর্ষণের সংবাদ আসে তত কৃতিত্বের সংবাদ আসে না। এখানে শিক্ষক ছাত্রীর শ্লীলতাহানী করছে- বিচার পাচ্ছে না শিক্ষার্থী। ছাত্র নেতারা দলবেঁধে ধর্ষণ করছে স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিয়ে। বুয়েটের মতো স্থানে একজন ছাত্রকে হত্যা করতে ঝাপিয়ে পড়ে ২১জন মেধাবী(?) নেতা। কে কিভাবে দালালি করবেন, কিভাবে আখের গুছিয়ে নিবেন সে চেষ্টার কথাই দেখে/পড়ে আসছি। কিভাবে হবে। বরং আমাদের জন্য নকল করাই মঙ্গল জনক। শুধু নকল যেনো এমন না হয়-
ক্লাসের মেধাবী ছাত্র মনন লিখল ‘যুদ্ধে হারিয়া হুমায়ুন ভাঙ্গিয়া পড়িলেন না। তিনি পিতা ও গুরু বাবরের কথা স্মরণ করিলেন। বাবর কি যুদ্ধে হারিয়া কখনও ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছেন? পড়েন নাই। বরং উল্লসিত হইয়া সহস্র সঙ্গী জোগাড় করিয়া আবার যুদ্ধ করিয়াছেন। যুদ্ধ-জয়ের জন্য ভালো সঙ্গী প্রয়োজন।’
পেছনে বসা নকলবাজ নকিব দেখে দেখে লিখল ‘যুদ্ধে হারিয়া হুমায়ুন জাঙ্গিয়া পড়িলেন না। তিনি পিতা ও গরু বাবরের কথা স্মরণ করিলেন। বাবর কি যুদ্ধে হারিয়া কখনও জাঙ্গিয়া পড়িয়াছেন? পড়েন নাই। বরং উলঙ্গ হইয়া সহস্র লুঙ্গি জোগাড় করিয়া আবার যুদ্ধ করিয়াছেন। যুদ্ধ-জয়ের জন্য ভালো লুঙ্গি প্রয়োজন।’
বাস্তবিক আমাদের লুঙ্গিই প্রয়োজন। ইজ্জত ওপেন হয়ে গেছে। লজ্জা ঢাকতে লুঙ্গিই ভরসা।
বি.দ্র.: ডিমের ছবিটি দিয়েছি কারণ আমাদের গবেষকগণ বহুবার, বহুভাবে প্লাস্টিকের ডিমের তথ্য জানিয়ে বহুভাবে সতর্ক করার পরে তা নিয়ে পত্রিকা/মিডিয়ায় ব্যাপক লেখালেখির পরে জানা গেল- প্লাস্টিকের ডিম বলে কিছু নেই।
পুনশ্চ-১: বিশ্বের ১২৯ দেশের উদ্ভাবনী সক্ষমতা নিয়ে পরিচালিত ২০১৯ সালের গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স-এ বাংলাদেশের অবস্থান ১১৬তম। ২০১৯ সালের তালিকায় ভারতের অবস্থান হয়েছে ৫২তম। জ্ঞান ও প্রযুক্তি দক্ষতায় ভারতের পয়েন্ট যেখানে ৩৩.৫, সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট ১৬.১।
পুনশ্চ-২: আমাদের চেয়েও খারাপ দেশ আছে। বাংলাদেশের পরে থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসো, মালাউয়ি, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া, জিম্বাবুয়ে, বেনিন, জাম্বিয়া, নাইজার, ইয়েমেন ইত্যাদি দেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০২