somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

আমাদের প্রগতিশীল বন্ধুরা, কতটা প্রগতিশীল?

২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিপিবির মঞ্জুরুল আহসান খান, ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন এবং জাসদের হাসানুল হক ইনুর হজ্বব্রত পালন করা নিয়ে বিভিন্ন কথা প্রচলিত ছিল। কমিউনিস্ট নেতাদের বস্তুবাদী হতেই হয়। সেই নেতারা কেন শেষ পর্যন্ত তওবা পড়ে সৃষ্টিবাদে ফিরে আসেন? অবশ্যই অনুশীলনের অভাব রয়েছে। আধুনিক শিক্ষা ও বিজ্ঞানমনষ্কতার অভাবতো রয়েছেই। অনেক আগে এরা হয়তো মার্কসবাদ অধ্যয়ন করেছিলেন। হয়তো বিবর্তনবাদ, বস্তুবাদ, বিজ্ঞানচেতনা ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যয়ন করেছেন। কিন্তু সুদীর্ঘকাল তারা অনুশীলন করেন নি এটাই সত্য। বাম সংগঠনের নেতা এক বন্ধু জানিয়েছিলেন, মঞ্জুরুল আহসান খান মাজারে যেতেন। ওই বন্ধু নাকি বিষয়টি নিয়ে ঊষ্মা প্রকাশ করেছিলেন, এতে মঞ্জুরুল আহসান খান বিরক্ত হয়েছিলেন। বর্তমান বিভিন্ন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা মনে করেন আজ যে, পার্টিগুলোর দুরবস্থা তার জন্য দায়ী- কমিউনিস্টদের বস্তুবাদী হিসাবে চিহ্নিত হওয়া। ফলে ধর্মবিশ্বাসী মানুষ কমিউনিস্ট পার্টিগুলোতে আসে না। নরওয়ে-সুইডেনের ৮০-৮৫ ভাগ মানুষ মূলত নাস্তিক। তারাও কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টিতে আসেনি। আবার কমিউনিস্ট চীন-ভিয়েতনামের ৮০-৯০% মানুষ নাস্তিক/ধর্মহীন। আবার আমাদের মতোই অর্থনৈতিক এলাকা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও কেরালায় কিন্তু কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়েছে। বৃটিশবাংলাতেও কমিউনিস্টদের দাপট ছিল। অসংখ্য তরুণ ঝাঁকে ঝাঁকে ছাত্র ইউনিয়ন করতো, কমিউনিস্টপার্টি করতো। তখন ধর্মীয়বিশ্বাসের বিপরীতে বস'বাদকে গুরুত্ব দিয়েই তরুণদের আকৃষ্ট করা হতো। একদিন একজন প্রগতিশীল দাবীদার ব্যক্তির কাছে আরেকজন জানতে চাইলেন, এতো ভিন্নভিন্ন ধর্মের মানুষ কোথা থেকে আসলো? উত্তরদাতা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রগতিশীল, তাই সে ব্রহ্মা আর শতরূপার কথা বলল। আমরাতো জানি, দেবতা ব্রহ্মা একদিন তার নিজের মেয়ে শতরূপাকে দেখে আর নিজেকে সামলাতে পারেন নি। ব্রহ্মা আর শতরূপার সেই মিলনেই আদি মানুষ মনুর জন্ম হয়। দেবতারা এসব করেনই। দেবতা প্রজাপতিও তার নিজ কন্যা ঊষার রূপে কামাসক্ত হয়ে মিলিত হন। কেতাবী ধর্মগুলোতেও দেখি এডাম-ইভ বা আদম-হাওয়াকে। আমিতো ধর্মগুলোকে মিলাতে গিয়ে প্রচুর মিল পাই। তবে বিজ্ঞানের সাথে মিলে না কিছুই। যেমন- কোন ধর্মগ্রন্থেই বলে নি- পৃথিবী গোলাকার, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরে, ডাইনোসর উদ্ভব-বিলুপ্তি ইত্যাদি। আবার সূর্যগ্রহণ, চন্দ্র গ্রহণ, মানুষের শরীর, সূর্যের গতি ইত্যাদি বিষয়ে ভুল বলেছে। কথিত প্রগতিশীল বন্ধুদের মূল সমস্যা বর্তমান পাঠবিমুখতা। অর্থাৎ তারা আপডেট থাকেন না, অনুশীলন করেন না। আর বাইরে বের হলেই বাতাস পান প্রতিক্রিয়াশীলতার। তারা ভুল শুনতে শুনতে সমাজ সম্পর্কেও ভুল উপলব্ধি করেন। বাংলাদেশের প্রগতিশীল দাবীদার নেতারাও অনুশীলনের অভাবে ভিতরে থাকেন প্রতিক্রিয়াশীল হিসাবেই। অনেকেই হয়ে থাকেন ছদ্ম প্রগতিশীল। দেখবেন আপনার কোন প্রগতিশীল হিন্দু বন্ধু নিয়মিতই ইসলাম ধর্মের বিরূপ সংবাদগুলো আপনার ইনবক্সে দিচ্ছে আবার কোন প্রগতিশীল মুসলিম বন্ধু নিয়মিত হিন্দুবিদ্বেষী সংবাদগুলো আপনাকে দিচ্ছে। তারা কোন দিনই নিজ ধর্মের বিরূপ সংবাদগুলো পাঠান না। তারা অবশ্যই ছদ্ম প্রগতিশীল।


যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রেও আমরা দেখি উদারপন্থীদের উত্থান। স্কুলগুলো হতে তারা ধর্মান্ধতা ও বিজ্ঞানবিরোধী কথা সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। সমকামিতা ও গর্ভপাতের মতো বিষয়গুলোও বৈধতা পাচ্ছে। নারীরা সমানাধিকার পাচ্ছে, স্বাধীনতা পাচ্ছে, একাও চলতে পারছে, সিঙ্গেল মাদার হতে পারছে। নারীর শরীরকে আমরা পুত-পবিত্র মনে করি এবং তা গৃহাভ্যন্তরেই সুরক্ষিত রাখতে চাই। যৌনাঙ্গ নিয়ে আমাদের ভীতি রয়েছে যা একেবারেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। প্রাপ্ত বয়ষ্ক নারী-পুরুষের মিলন/সম্পর্ককে আমরা মেনে নিতে পারি না বিপরীতে শিশু বলাৎকারকে মেনে নিচ্ছি। আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে প্রগতিশীল আচরণ করলেও, এসব নিয়ে সোচ্চার হতে পারি নি। আমরা মনে করছি, এসব কথা বললেই মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে যাবে। আরে লড়াইটা শুরু করেই দেখেন না! প্রগতিশীলদের হারানোর কিছু নেই, সবই সামনে রয়েছে জয় করার। যতটুকু জয় হল, ততটুকুই বিজয়।

বি।দ্র।: প্রথম ছবিটি দেখে আপনারা বুঝতেই পারছেন ওগুলো হাত। হঠাৎ দেখলে ছদ্মবেশি প্রাণি মনে হবে। দ্বিতীয় ছবিটাতে মুখোশ রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৯
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×