শীলমের দৈনন্দিন জীবন (পর্ব-দুই)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আছ হৃদয় -মাঝে
কতই ব্যথা বাজে
একি তোমার সাজে
ও মোর দরদিয়া
দুয়ার দেওয়া ঘরে
আধার নাহি সরে
আছ তারি পরে
ও মোর দরদিয়া
আসন হয়নি পাতা
মালা হয়নি গাথা
লজ্জাতে হেট্ মাথা
ও মোর দরদিয়া
রবীন্দ্র নাথ এর এই কবিতা টি লিখল আজ ফেস বুকে। মজার ব্যাপার হলো। সবাই ভেবে নিল এই কবিতা টি তার লিখা। সে কিছুক্ষণ মজা করে কমেন্টস না করে চুপ করে বসে রইলো। প্রথমে একটু অস্বস্তি বোধ করছিল সবার ভুল ধারণা ভাঙ্গাতে।
খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেল আজ তার। মার ঘরে এসে হাত দিয়ে জ্বর টা দেখল। হাতের স্পর্শে মা চোখ খুলে তাকালো মা।
কিরে এত তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে গেল ? মা উঠে বসতে চেষ্টা করলেন। মা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
তাড়াতাড়ি কিচেন এ এসে এক চুলায় আলু সিদ্ধ আরেক চুলায় ভাত বসিয়ে দিল। বুয়া আসছেনা বেশ কিছুদিন হলো। সব কাজের ভার এখন তার উপর। সব রান্না বান্না শেষ করে সবার জন্য বক্স এ রেখে অফিসের জন্য রওয়ানা হলো। অফিস এ যেতে যেতে কিছুক্ষণের জন্য ব্লগ এ ঢুকলো। চমত্কার সব লিখা পড়তে পড়তে আবেগ এ ভেসে গেল কিছুক্ষণ। চিঠি প্রতিযোগিতা চলছে ব্লগ এ তুমুল আয়োজনে। সব বড় বড় কথা মানব মানবী রা প্রতি দিন চমৎকার চিঠি লিখে চলেছেন। চিঠি যেদিন থাকে সেদিন সবাই শুধু চিঠি পড়তে থাকে। চিঠির উত্তর প্রতিউত্তর চলতে থাকে। সে নিজেও লিখল চিঠি প্রেমের চিঠি আবেগের চিঠি। খুব হেলায় ফেলায় লিখা চিঠি সবাই বেশ ভালো বেসে আবেগ নিয়ে পড়ল প্রতিউত্তর ও করলো। একটা চিঠি ছিল এক সহ ব্লগার তার মাকে নিয়ে লিখেছেন। কেদে ফেলেছিল চিঠি টি পড়ে।
সে নিজে লিখল এই কবিতা। কবিতায় আলোড়ন শুরু হয়ে গেল ব্লগ এ। ব্যাপার কি ?
সে ভাবিল
আজ যেইভাবে হোক
বলিবে তার হৃদয় কথা
যত ব্যাথা বেদনা
গাছের তলায় বসিয়া
ভাবিতেছিল আপন মনে
কোকিল ডাকিয়া উঠিল
কুহু কুহু কুহু কুহু।
কুহু কুহু কুহু কুহু।
ময়ুরী নাচিয়া উঠিল
পেখম তুলিয়া।
জিরাফ তাকাইল
গ্রীবা বাকা করিয়া।
আকাশ থেকে নামিল
ঝিরঝির বৃষ্টি
দেখা গেল
রঙীন রঙধনু।
তার বিবেচনায় তা
প্রকৃতির ই উচ্ছাস
তার প্রীতিতে আছে যেন
প্রকৃতির ই নির্যাস।
অফিসে এসে পরের কয়ঘন্টা কাটল অনেক ব্যস্ততায়। যদিও সকাল এ বসের সাথে কিছুটা মনোমালিন্য হয়ে গিয়েছে আজ কাজ নিয়ে। প্রথম ঘন্টা মন খারাপ করে ভাবছিল কাজ ছেড়ে দিবে নাকি। কাজের সময়টুকু তে আজকে আর ব্লগ এ ঢুকলো না যদিও মনটা সারাক্ষণ ব্লগ এ পড়ে ছিল। দুপুরে লাঞ্চ টাইম এ তাকে অবাক করে একজন অফিস এ আসল। দেখা করতে গিয়ে অবাক হয়ে হয়ে গেল যখন পরিচয় পেল সামি তার ফেস বুক এর একজন ফ্রেন্ড। অফিস এ একটা রুলস মেনে চলতে হয়। সে চায়না তার ব্যক্তিগত জীবনের কেও এসে অফিসে তার সাথে দেখা করে কোনো রকম জরুরী প্রয়োজন ছাড়া। অফিস এ মন খুলে কথা বলার পরিবেশ থাকেনা। তবু সামি যেন তার মনে কিছুক্ষণের জন্য দখিনা হাওয়ার পরশ বুলিয়ে গেল। যা ভেবেছিল কল্পনায় মোটেই সে দেখতে তেমন নয়। সাদা মাটা চেহারা সাধারণ পোশাকের সহজ সরল এক যুবক। তবে তার চোখ গুলি বেশ বুদ্ধি দীপ্ত উজ্জল যা প্রথম দর্শনে তার মন কেড়ে নিয়েছিল।
সে ও হই হই করে তার স্বভাসুলভ ফাজলামির ভঙ্গিতে বলে উঠলো
শীলম শীলা
কই গেলা
এত খুজি
তোমায়
পাইনা দেখা।
হাসতে হলো। কথা বলতে হলো। লাঞ্চ টাইম এ বাহিরে আসল বসের অনুমতি নিয়ে। দুজনে একটা রেস্টুরেন্ট এ ঢুকে খেল। অনেক কথা হলো দুজনের। ব্যক্তিগত অনেক কিছু শেয়ার করলো দুজনে। মা এর অসুখের কথা জানতে সামি বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
বিকাল এ আসছি তোমাদের বাসায়। মাকে সালাম করতে যাব উইথ মিষ্টি। তুমি চাইলে আংটি ফুল সহ আসা যেতে পারে। ভবিষ্যতের কথা ভাবা যেতে পারে।
আচমকা মনে কাপন তুলে বোমা ফাটানোর মত কথা বলে সামির প্রস্থান।
দোটানায় পড়ে গেল শীলম।
(পরবর্তীতে )
১৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…
১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন