somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ অন্যরকম একটা দিন

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ অন্যরকম একটা দিন।বছরের শেষ দিন।রিভিউ করছি।পুরানো একটি গল্প শেয়ার করছি সবার সাথে।অধিকাংশের পড়া সম্ভবত তবু ও আজ পুরানোতে দিলাম ডুব।সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা/ভালবাসা সহ গল্পটি পড়ার আমন্ত্রন রইল।
=============================================
মূল গল্প:
রোজ দিন তার এক হাঙ্গামার দিন।কাজ শেষে করে বের হতে যাবে কোথা থেকে আর ও কিছু উটকো কাজ এসে জুড়ে যায়।শিডিউল সময়ে কাজ শেষ করে কখন সে বের হতে পারেনা ।আজকে সাতটার মধ্যে বাসায় না পৌছলে স্ত্রীর সাথে বাকযুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনবছর হল তার বিয়ে হয়েছে।তার ফুটফুটে একছরের পুত্রসন্তান আছে।

সে এক বহজাতিক কোম্পানীতে কাজ শুরু করেছে কিছুদিন হল। এক্সপোর্ট প্রডাক্ট শিপিং দেখাশোনা করে।সবসময়ে বলা যায় দৌড়ের উপর থাকে।অত্যন্ত ব্যাস্ত মানুষ ।অফিসের কাজ আর তার জমিসংক্রান্ত আরও কিছু ব্যাক্তিগত কাজ শেষ করে যখন সে বাসায় ফিরে তখন সত্যি তার সময় শক্তি ইচ্ছা সবকিছুতে ভাটা পড়ে যায় স্ত্রী পুত্র কে নিয়ে বাহিরে যাওয়ার।সে খুব অপরাধবোধে ভোগে স্ত্রী পরিবারকে সময় দিতে না পারার জন্য।স্ত্রীর অভিযোগের জবাবে শুধু এটা বলে নিরুপায়ের মত আমাকে একবছরের সময় দাও।একটু ঘুচিয়ে নেই।এরপরে তোমার ইচ্ছমত সবকিছু হবে।

সে ভূল করে আজ অন্য রুটের বাসে উঠে পড়েছে।এক্সকারশান বাস।বাস যাবে সিতাকুন্ডু পাহাড় দেখতে।মনে মনে সে উৎফুল্ল হয়ে উঠল দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমী থেকে মুক্তিতে।তার মনে রইলনা তার স্ত্রী রেডী হয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে।প্রচন্ড ক্লান্তি ঘুমে তার চোখ ভেঙ্গে আসছে।ফোন অফ করে নিমিষে সে ঘুমিয়ে পড়ল বাসে।

দীর্ঘ জার্নির পর অবশেষে বাস এসে পৌছল পার্বত্য চট্রগ্রামের হালিশহর।ওখানে সব যাত্রীরা যে যার মত ভ্যান টাঙ্গা স্কুটারে করে পাহাড়ের কাছাকাছি এসে পৌছল।পাহাড়ের কাছাকাছি পৌছে অবাক হয়ে গেল।প্রথমে মনে হল একেবারে সে পাহাড়ের কাছে দাড়িয়ে আছে।যতই হাটছে পাহাড়ের কাছে আর পৌছতে পারছেনা।

অদ্ভুত তো মনে মনে সে বলে।

পাহাড়ের কাছে এসে লাফিয়ে অনেকটা উপরে উঠে পড়ে।
আহ মনে মনে ভাবে এখানে পরিবেশ অনেক পিসফুল।টেনশান নাই ।কোন দায়িত্ব যন্ত্রনা হেডেক নাই।

পাখীর পাখা ছড়ানোর মত করে হাত দুইপাশে ছড়িয়ে চোখ বন্ধ করে প্রকৃতির শব্দ শুনতে চেষ্টা করল।

সে স্পষ্ট যেন শুনল পাহাড় বলছে তাকে
তোমাকে আনন্দিত দেখে ভাল লাগছে।
আমার বুকে তোমাকে পেয়ে আনন্দিত হচ্ছি।

তাকিয়ে দেখে আকাশ হাসছে তার দিকে
গাছপালা বাতাস সব যেন তার দিকে তকিয়ে হাসছে।

কিছুক্ষন এভাবে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে তার বুকে চিনচিন করে পিন ফুটানোর বাথা অনুভব করল।শিশুপুত্রটির কথা মনে পড়তে লাগল স্ত্রীর কথা মনে হতে লাগল মা বাবা সবাইকে খুব মিস করতে লাগল।সে ভাবল আমি এভাবে একা স্বার্থপরের মত ঘুরতে চলে আসলাম।আশ্চর্য্য কেন?

আমি কি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি?

আপনজনদের মাঝখানে

জীবন যাপনের জটিলতায়

দায়িত্বের ভারে

যান্ত্রিক জীবনের যন্ত্রনায়

এই সবুজ শ্যামলিমা প্রাকৃতিক পরিবেশে অদ্ভুত ভাল লাগছে।

তার পাশে এক বাউলকে দেখা যাচ্ছে হাছন রাজার গান গাইতে গাইতে হাটছে।

পরের জায়গা পরের জমীন ঘর বানায়া আমি রই।
আমি তো সেই ঘরের মালিক নই।

হঠাৎ তার পাশে একটা মেয়েকে খিলখিল করে হাসতে দেখে চমকে তাকাল।

সে ভূত দেখার মত চমকে উঠল। ততুমি অবাক হয়ে বলে তুমি এখানে কিভাবে?

সে কি স্বপ্ন দেখছে?এটা কি কোন স্বপ্ন দৃশ্য।বিভ্রমের মত লাগছে।

আমার ও এক প্রশ্ন তুমি এখানে এই সময়ে?হাসতে হাসতে তার স্ত্রী গড়িয়ে পড়ছে।পিছনে মা বাবা মায়ের কোলে তার শিশু পুত্র।

তা তা বাবা আধো আধো ভাবে কথা বলে যাচ্ছে পুত্র।

মা বাবা তোমরা সবাই এখানে কিভাবে?

পাহাড়ের চুড়ায় দেখা যাচ্ছে মেয়েটিকে।গতকয়েকদিন ধরে এই অজানা অচেনা একটা মধুর মেয়েকে স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে ।মেয়েটির অবয়ব তার কাছে এখন ও ঠিক পরিস্কার নয়।সবসময় তাকে সাদা সালওয়ার কামিজ ওড়নায় দেখা যায়।ওড়নাটটি ঘোমটা দেওয়ার মত করে পেচিয়ে পরা।

মেয়েটি উপর থেকে বলছে আর উপরে উঠনা।এখানে আগ্নেয়গিরির একটা জ্বালামুখ আছে ।

মা এসে হাত ধরলেন বললেন চল বাবা ঘরে যাই।

সে কি স্বপ্ন দেখছে?এটা কি কোন স্বপ্ন দৃশ্য।বিভ্রমের মত লাগছে।

এইযে এইযে ভাইজান ভাইজান।তাকে ঘিরে আছে তিনচার জন মানুষ।

এতঘুমাইতে পারে মানুষ।ভাইজান আমরা চারজন মিইলা ধাক্কাধাক্কি করি উঠাইছি।বাসের ড্রাইভার বলে।

আপনি কই যাবেন ভাই?জায়গা তো মনে হয় ফালাই আসছেন।

গুড গড স্বপ্ন দেখছিল সে।অনেকদিন পরে সে পরিতৃপ্তির একটা ঘুম দিল ।

ঘড়িতে সময় দেখল ৬:০০ টা এখন সময় আছে।ফোন করে স্ত্রীকে।দায়িত্বশীল স্বামীর মত খোজ খবর নিল বলল

তোমরা রেডী হয়ে থাক।বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে যাব তোমার কাজে এরপর কাজ শেষে মঞ্চ নাটক দেখব।

ওমা স্ত্রী বলে আজকে সূর্য কোনদিকে উঠল?এত সৌভাগ্য।

সৌভাগ্য সে একটু হাসল মনে মনে।আজকে চমৎকার এক অন্যরকম দিনপার করল সে স্বপ্নের জগতে ।

(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১২
৩৬টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×