somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)
নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার 'কলম'।

অন্ধকার লক্ষ্যে ধাবমান যুবসমাজ এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আরজু ,আজিবর ,জাকির হত্যাকান্ড।

২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আরজু ,আজিবর ,জাকির নামে তিন ফাইটার সরকারের কিলিং স্কোয়ার্ড(র্যাব)কর্তৃক হত্যার ঘটনায় স্বয়ং দলটির বিভিন্ন স্তরের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের প্রশিক্ষিত ফাইটারদের মধ্যে এক ঘোর আতংক বিরাজ করছে। এ নিয়ে দলের মধ্যেই চলছে দ্বিভক্তি আলোচনা সমালোচনা।

এমন পরিস্থিতিতে, আরজু ,আজিবর ,জাকির তোমাদের উদ্দেশ্য আজ কিছু কথা না বললেই নয়।জীবিত অবস্থায় তোমরা ছিলে আওয়ামেলীগ বা মুজিববাদী আদর্শের বীর সেনানী।বীরের মতই দম্ভ আর অহংকারে ভরা ছিলো তোমাদের জীবন।আওয়ামী জমিদারী শাসনতন্ত্রের এই আমলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিযন্ত্রনের জন্য অস্ত্র সস্ত্রে সুসজ্জিত করে তোমাদের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো।সেই দায়িত্ব তোমরা দলের কমান্ডারদের (নেতাদের) নির্দেশে ও দলের প্রচলিত ধারা অনুযায়ী খুবই সুচারুভাবে পালন করে যাচ্ছিলে। সরকারী অফিসে টেন্ডারবাজী করেছো ,পুলিশ প্রশাসনকে নিজেদের প্রতিরক্ষা বাহিনী মনে করে পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে গাধার মত ব্যাবহার করেছ ,বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি পেশী শক্তি দিয়ে ফাইটার নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে পন্ড করেছো ,দলের কর্মসূচির নামে চাঁদা তুলেছো ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম মৃত্যু বার্ষিকিতে কাঙ্গালী ভোজের নামে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা তুলেছো ।খেটে খাওয়া পিতার শিক্ষিত বেকার যুবকের পিয়ন ,ঝাড়ুদার ,কেরানী,শিক্ষক ,পুলিশের চাকুরি পাইয়ে দেবার জন্য স্থানিয় মান্যবর এম পির শ্নেহধন্য হিসেবে জনপ্রতি আট লক্ষ টাকায় মধ্যস্থ্য করেদিয়েছো।তোমরা দলের এমন সম্পদ ছিলে যে তোমাদের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ অস্ত্র চালানো হাতের বুলেট মায়ের পেট বিদির্ণ করে গর্ভস্ত শিশুকেও আঘাত হানতে সক্ষম ছিলো। তাই সময়ের পেক্ষাপটে বলা যায় তোমরা ছিলে দলের সময় উপযোগী শ্রেষ্ট সন্তান ।তোমাদের মৃত্যুকে তোমার নেতাদের কেউ বলছে তোমাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, আবার কেউ বলছে তোমারা অস্ত্র হাতে রাষ্ট্রের কিলিং স্কোয়ার্ডের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতে গিয়ে মারাগিয়েছ।দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তোমাদের এই মৃত্যু আপাতদৃষ্টিতে কাম্য ছিলোনা,এটাইতো আমরা স্বাভাবিক ভাবে ভেবে থাকি।কিন্তু তোমরা ছিলে দলের আদর্শে বলিয়ান একনিষ্ঠ কর্মী। তাই জীবিত থাকা অবস্থায় যৌবনের বুদ্ধিদীপ্ত শ্রেষ্ট সময় দলের প্রয়োজন অনুয়ায়ী ব্যায় করেছ। জমিদারি শাসন ব্যাবস্থায় মাঝে মাঝে গনতন্ত্র গনতন্ত্র ন্যায় শাসনের ভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য অন্য মতাদর্শীর মানুষের হত্যার পাশাপাশী কিছু নিজস্ব মতাদর্শের কর্মীর লাশও দলের প্রয়োজন হয়। তাই তোমরা আজ লাশ হয়ে দলের ন্যায় শাসনের ভাবমুর্তি বৃদ্ধিতে অবদান রেখে গেলে। কিন্তু তোমার মৃত্যুতে তোমার সহযোদ্ধাদের মধ্যে কিছুটা বেদনা,সহমর্মিতা,হাহাকার সৃষ্টি হলেও তোমার দলের নীতি নির্ধারনী মহল তোমাকে সন্ত্রাসির তকমা দিয়েছে ।তোমার জীবন ও তোমার লাশ দ্বারা দল উপকৃত হলেও তোমাকে এখন থেকে মানুষের স্মৃতিতে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে বেঁচে থাকতে হবে। যে পিতা মাতা তোমার সুন্দর জীবন কামনা করে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য ত্যাগ তিতিক্ষা করেছিলো আজ থেকে তোমার অর্জিত সন্ত্রাসী তকমার খ্যাতির দায় ভার তাদেরকেও বহন করতে হবে।তোমার অবিবাহিত বোনের সুন্দর জীবন তোমার জন্যই থমকে দাড়াবে। প্রতি বছর তোমার দলের বড় নেতাদের জন্মদিনে কেক কাটা হবে,মৃত্যু বার্ষিকীতে দলের কর্মীরা শোকের মাতম করবে,কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন হবে যে উৎসবগুলোতে তোমারও একসময় সরব উপস্থিতি ছিলো।কিন্তু তোমার মৃত্যু বার্ষিকীতে কোন শোক সভা হবেনা,কবরে কোন পুষ্পগুচছ অর্পন হবেনা,তোমার জন্য তৈরি হবেনা কোন স্মৃতিস্তম্ভ,তোমার নাম লেখা হবেনা কোন ব্রিজ কার্লবাট কিংবা সাকোঁর নাম ফলকে । কারণ দলের প্রয়োজনে তোমাকে সন্ত্রাসী বানানো হয়েছিলো এবং দলের প্রয়োজনেই তোমার জীবনটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন হয়তো কবরে শুয়ে শুয়ে ভাবছো,যে মহামূল্যবান জীবন একটি বারের জন্য নিয়ে এই ধরায় এসেছিলে তা বোঝার আগেই এক ধোকাবাজীর খেলায় চক্করে পড়ে বিলিয়ে দিয়ে আসতে হলো।
পরিশেষে বলতে চাই, আরজু ,আজিবর ,জাকির ওরা পবিত্র শিশু রুপে মাতৃগর্ভ থেকে বেড়িয়ে বাংলা আলো বাতাসে বেড়ে উঠেছিলো।ওদের মাতৃদ্বয় অপঘাতে মৃত্যুর জন্য তাদের সন্তানকে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরেছিলোনা। কিন্তু আজ দেশের করালগ্রাসী হাঙ্গর কুমির রুপি রাজনৈতিক দল ও নেতাদের স্বার্থানেষী ষড়যন্ত্রে আরজু ,আজিবর ,জাকিরের মত আমাদের যুবসমাজ আজ বিভ্রান্ত। হাজার হাজার মেধাবি তরুন আজ নাবুঝে এই অন্ধকার লক্ষ্যের দিকে ধাবমান। এই ধারা কি এভাবেই বহমান থাকবে ……………. ?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×