একদিন এক লোক বিশেষ কাজে গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলো।সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিলো।কিন্তু অবস্থা বেগতিক হলো তখনই,যখন সে প্রবল বেগে নিম্নচাপ অনুভব করলো। প্রবল বেগের যাতনা অসহ্য বলে প্রতীয়মান হলো তার কাছে । অতঃপর হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগলো সেই জায়গা যেখানে তার এই যন্ত্রণা লাঘব হবে।কোথাও সে খুঁজে পেল না এমন জায়গা। শহরে শুধু বড় বড় বিল্ডিং। ভেতরে ঢুকতে দেয় না। তাছাড়া তার চোখে পড়লো মানুষজন রাস্তার পাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কাজ সেরে নিচ্ছে।কিন্তু এই কাজ করতে তার কেমন যেন একটু লজ্জা লজ্জা লাগে। আশেপাশে মানুষ না থাকলেও হতো।কিন্তু শহর জুড়ে পঙ্গপালের মতো খালি মানুষ আর মানুষ।মানুষে গিজগিজ করছে রাস্তাঘাট।সবাই শুধু ছুটছে।কাওকে জিজ্ঞেস করার সাহস হয় না তার টয়লেটের ব্যাপারে।
সে মেইন রাস্তার পাশের এক গলিতে যায় নির্জনতার আশায়।একটু ভেতরের দিকে গিয়ে অবশেষে সে একটি ভগ্ন দেয়াল খুঁজে পায়।আশেপাশেও কেউ নেই।হাফ ছেড়ে বাঁচে সে।তৎক্ষণাৎ সে বিসর্জন করতে বসে পড়ে তার যন্ত্রণা লাঘব করতে লাগল।ভেবেছিল সে মুক্তি পেয়েছে যাতনা হতে, কিন্তু পরক্ষণেই দেখল তার ওপর নতুন যন্ত্রণার উদয় হয়েছে।পেছন থেকে কেউ একজন তার শার্টের কলার টেনে ধরলো।বলল,
"বেটা বেলাজ,বেহায়া, বেশরম। রাস্তাঘাটে পেশাব করস"।
বেচারা বলল,"ভাই আমার উপায় আছিল না"।
আগন্তুক অতিশয় রাগান্বিত হয়ে বলল,"হালা ধইর্যা এক্কালে কানের গোড়ায় দিমু,আবার কতা কয়?যা ভাগ।"
বেচারা লজ্জায় কাচুমাচু হয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো। কিন্তু সেই আগন্তুক আবার তার পথরোধ করে সামনে এসে দাঁড়ালো।
"তোর জরিমানা হইছে এইখানে মুতার কারণে।জরিমানা দিয়া যা।"
সন্ত্রস্ত লোকটি পকেট থেকে একশো টাকার একটি নোট বের করে দিয়ে দিলো। কিন্তু তাতে হলো না। মুত পরিস্কার করার খরচ,গন্ধ দূর করার খরচের নামে আরও দুইশত টাকা তার কাছ থেকে নিয়ে নিলো আগন্তুক। তার আর কিছু বলার ছিল না।মানসম্মানই আসল।অতঃপর বেচারা টাকা গচ্চা দিয়ে চলে গেল।
এরপর আগন্তুক বলতে লাগলো,"হালারা খালি করার আর জাগা পায় না।এগো লইজ্ঞাই সমাজ,দেশ নষ্ট হয়।"
এই কথাটা বলেই গ্রাম্য বেচারাকে যেখান থেকে মূত্র বিসর্জনের দায়ে আটক করেছিলো , সেই জায়গাতেই নিজের মূত্র বিসর্জন করে ক্ষয়ে যাওয়া সমাজের সংস্কার করতে লাগলো আগন্তুক মহাশয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৫