"হ্যালো, কে বলছেন?" " আমি আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই। আপনি কি আমার বন্ধু হবেন?" "নাহ।" বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিল মিতু। কোথা থেকে যে এসব মানুষ নাম্বার পায় আর নিজের টাকা খরচ করে মানুষকে ফোন করে মাথাতেই ঢুকে না মিতুর। শ্রাবণের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে মিতুর মনে হত যে মোবাইলটা ফেলেই দেওয়া উচিত। যার কথা শুনার জন্যে এত কষ্টে মোবাইল কিনল মিতু, সেই তো আর কথা বলে না। তবে শ্রাবণের মত বন্ধু পেয়ে ও ওর কষ্ট অনেকটা ভুলে যায়। শ্রাবণ নিজে অনেক ফাজিল, অনেক মেয়েকে সে ঘুরায়। কিন্তু মিতুর সাথে পরিচয় হবার পর কেনো জানি ওকে শুধুই বন্ধু হিসেবে দেখেছে। ওর সাথে ফ্লার্টিংও করে নাই। উল্টা ওকে বুঝিয়েছে। বলেছে, ছেলেরা কি ভাবে, কেমন চিন্তাভাবনা করে, কখন কিভাবে কাকে বোকা বানায়। ছেলেদের সম্পর্কে যা ধারণা ও পেয়েছে পরবর্তী জীবনে তার হাতেখড়ি শ্রাবণের কাছেই।
ঐ নাম্বার থেকে প্রতিদিনই ডিস্টার্ব করতে লাগল মিতুকে । একদিন রাগের মাথায় বলল সে, দেখেন ভাই , আমার বয়ফ্রেন্ড আছে তো। তারপর থেকেই ওপাশের লোকটা কেমন জানি ভদ্র আচরণ করতে লাগল ওর সাথে। ওকে বোন বানাতে চাইল। আশ্চর্য লাগল কেমন জানি মিতুর। কেনো জানি মনে হলো লোকটা ওকে চিনে। চারদিনের মাথাতেই অবশ্য নিজের প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেলো মিতু। লোকটা সায়েমের মেডিকেলের বর ভাই। সায়েমই ওকে দিয়ে মিতুকে ফোন করিয়েছিল জানতে যে মিতু কি এখনও সায়েমেই আটকে আছে নাকি অন্য কোথাও ডুব দিয়েছে। আশ্চর্য পুরুষ জাতি। একদিন নিজেই ফেলে চলে গিয়েছিল। আর আজ নিজেই ওর পরীক্ষা নিচ্ছে। এজন্যেই হয়তো সীতা মাটির ভিতরে চলে গিয়েছিল রামের দেওয়া অপমান সহ্য না করতে পেরে। নিজেই ভাবে আর হাসে মিতু। কিন্তু শ্রাবণের কথাগুলো ওর মনে দাগ কেটে রাখে। এই বার মিতু বের করবেই সায়েমের সব গোপন কথা। মনে মনে পরিকল্পনা করে ফেলে। সায়েমের বড় ভাই রাজীবের সাথে ভাব করে নেয় মিতু। আপন ছোটবোনের মতই ভাইয়ের খোঁজখবর নেয়। সুখ দুঃখের কথা বলে মিতু। রাজীব ভাইও অনেক আপন করে নেয় মিতুকে। মিতুর মত মিষ্টি মেয়েকে কে অপছন্দ করবে?
রাজীব ভাইয়ের কাছ থেকেই একদিন বিকেলে সায়েমের সব সত্যি বের করে আনে মিতু। রিমার কথা ঘুণাক্ষরেও কেনো ও টের পায়নি তা ভেবে নিজেকে বোকা বলে মনে হয়। রিমার সাথে সায়েমের প্রেম, সায়েমের সব বন্ধুরা জানে রিমাই সায়েমের জীবনের একমাত্র নারী এসব সত্য মিতুকে স্তব্ধ করে দেয় । নিজেকে অনেক একা মনে হয় মিতুর। শ্রাবণ ঠিকই বলেছিল। মিতুর ছেলেবেলার সাথী সায়েমকে ও একটুও চিনে না। আসলে মিতু ওর ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে ছিল। তাই বুঝেনি সায়েমের কাছে মিতুর আবাগের কোনো মূল্য নেই। আর আজ যখন ও সব হারিয়েছে তখন মিতুকে আঁকড়ে ধরে ও ভাসতে চায়। কিন্তু মিতুকে এত বড় ধোঁকা দিয়েছে ও , মিতু কি পারবে ওকে ক্ষমা করতে??
(তাড়াতাড়ি লিখার চেষ্টা করব। সবাই সাথেই থাকবেন। )
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৩"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১২"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১১"