somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

● চিন্তা নেই, আমিও একদিন বিসিএস ক্যাডার হব

০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিসিএস ক্যাডার হয়ে আমার প্রথম কাজ হলো, আমি ইন্টারমিডিয়েটের একটা মেয়েকে বিয়ে করবো। দেখুন, তখন আমার একটা আয়-রোজগার থাকবে তাই পরিবারে বাড়তি একজনের চাপ নিতে পারবো। তাছাড়া মেয়েদের স্বনির্ভর হতেই হবে কেন? এটা কোন সংবিধানে লিখা আছে!
এরপর আমি ইউটিউবে একটি মোটিভেশনাল চ্যানেল খুলবো। ওখানে আমি আপনাদের এটা প্রমাণ দিয়েই ছাড়বো যে, বিসিএস ছাড়া আপনার আর কোন গতি নেই। একমাত্র বিসিএস ক্যাডার হতে পারলেই আপনি স্বর্গীয় অনুভূতি পাবেন। যারা লেখালেখি করছেন, অথবা অভিনেতা/অভিনেত্রী হওয়ার চেষ্টা করছেন, অথবা ক্রিকেটার হবার চেষ্টা করছেন, অথবা ফরেক্সে ভাল ট্রেডার হবার চিন্তা করছেন, অথবা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার চেষ্টা করছেন তাদের সবাইকে আমি বুঝাবো যে, “একমাত্র বিসিএস সত্য তাহার উপরে কিছু নেই”। যিনি সাত জন্মেও চিন্তা করেননি ক্যাডার হবার, আমি তাকেও বলবো, "আপনার উচিত সাধারণ জ্ঞানের বইগুলো মুখস্ত করা"। প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু গণিত শিখতে হবে যেগুলো করার ইচ্ছে আপনার হয়তো কোনদিনই ছিলো না। তারপর যারা ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হবার স্বপ্ন দেখছেন তাদেরকে আমি ইংরেজি সাহিত্য পড়াবো। এলিজাবেথান পিরিয়ড থেকে টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি পর্যন্ত যত উপন্যাস, নাটক ও কবিতা আছে সেসবের উপর আলাদা ভিডিও নির্মাণ করবো। মনে মনে অবশ্য ভেবেছি যে, আমার চ্যানেলের নাম দিবো "ফিফটি মিনিট স্কুল"। কারণ লক্ষ্য যখন বিসিএস তখন আর দেরী কীসের! স্কুল পর্যায় থেকেই আপনার শুরু করা উচিত। আমি কিন্তু এখানেই থেমে থাকবো না। এরপর আমি যারা উদ্যোক্তা হতে চান বা কোন একদিন চেয়েছিলেন তাদের মাথাও সুক্ষ্মভাবে ধোলাই করবো। আমি তাদেরকে বুঝাবো, পাঁচ বছর এক ব্যবসার পিছনে শ্রম না দিয়ে কিছু সাধারণ জ্ঞানে শ্রম দিন। প্রয়োজনে আমি সেই বইগুলো তাদের বাসা পর্যন্ত কুরিয়ার মাধ্যমে পৌঁছে দিবো। এরপরে আমি বিভিন্ন জায়গায় মোটিভেশনাল স্পিচ দেবার জন্য যাবো। সেখানে গিয়েও আমি বুঝাবো "একজন বিসিএস ক্যাডারের আত্মকাহিনী"। সেখানে স্রেফ ও স্রেফ আমি আমার কথাই বলে যাবো। তাছাড়া কার বাবা-মা কি করতো! কত দরিদ্র ছিলো! তারপরেও তিনি বিসিএস পেয়েছেন। তাই এই যুদ্ধে আপনাকেও টিকতে হবে। সংখ্যা যদি এবার চার লক্ষাধিকও হয় তবুও তাদেরকে বুঝাবো কনফিডেন্স নিয়ে কীভাবে ঐ দুই হাজার এর মধ্যে থাকতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আমি আলাদা ইউটিউব চ্যানেল খুলবো, সেখানে শুধু মোটিভেশনাল কথা বলা হবে। তাছাড়া আমি বিসিএসের উপর একাধিক বই লিখবো, আশা করছি বাংলাদেশে সেসব বেস্টসেলার পর্যায়ের বই হবে।

নাহ্, আমি বোধহয় এই পর্যন্ত করে ক্ষান্ত হবো না। আমার বিসিএস কে ঘিরে যে আদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছে সেটাকে আমি আরো অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাবো। কিছু টাকা জমা করে আমরা কিছু বিসিএস ক্যাডার বন্ধু মিলে একটা "বিসিএস কলোনি" বানাবো। এবং ঐ কলোনীর নাম দিবো "বিসিএস প্ল্যানেট"। এখানে শুধু বিসিএস ক্যাডার এবং তাদের সন্তান-সন্ততি থাকতে পারবেন। এবং তাদেরকে এই বিসিএস প্ল্যানেটকে একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে এই দেশে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ছোট থেকেই হাতে কলমে আমরা শিখাবো। প্রয়োজনে একটি স্কুল খুলবো যার নাম হবে "বিসিএস ক্যাডার স্কুল"। এই স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ছোট থেকেই বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক পর্যায়ের গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও বিজ্ঞান, আইসিটি বিষয়গুলো বেশি প্রায়োরিটি পাবে। বাকি বিষয়ে ফেল করলেও চলবে, কিন্তু এসব বিষয়ে ফেল করলে তাকে পাশ হিসেবে ধরা হবে না। এরপর আমরা বাঙালী মায়েদের বুঝাবো, বিসিএস ক্যাডার ছাড়া আপনার মেয়েকে বিয়ে দিবেন না। ফলে মায়েরা নিজের মেয়ের ভবিষ্যৎ সুন্দর করার শর্তে বাধ্য হয়ে তারাও এই প্ল্যানেটের সাথে অনলাইনে যুক্ত থাকতে পারবেন। সর্বশেষ আমি এটাও বুঝাবো যে, আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার না হতে পারেন তবে আপনি ব্যর্থ একজন মানুষ।

ফেলে দিন চিরচেনা সেই গিটার, অথবা ঐ গিটার ধরেই গান ধরুন,
"ও...বিসিএস তোকে মিস করছি ভিষণ"। এবং একদিন যখন আপনার নামটি পত্রিকার হেডলাইন হবে, "ও... বিসিএস তোকে মিস করছি ভিষণ... গানের হিট শিল্পী এখন একজন বিসিএস ক্যাডার" - তখন আপনার চোখেও জল আসবে, ধন্যবাদ জানাবেন আমাকে এবং আমাদের বিসিএস প্ল্যানেটকে। কিন্তু আমরা বলবো, "এটা তো আমাদের দায়িত্ব ছিলো করিম সাহেব"। তাছাড়া লাভ-ক্ষতির অঙ্ক আপনি মনে হয় এখনো করেননি।

আরেহ্, চিন্তা নেই, আমিও একদিন বিসিএস ক্যাডার হব।




সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×