somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জার্মান সিরিজঃ TRIBES OF EUROPA (Chapter -০১)

১৭ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




জার্মান সিরিজঃ TRIBES OF EUROPA (Chapter-01)
জনরাঃ Science Fiction, Fantasy, Sci-Fi
মুক্তি কালঃ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ভাষাঃ জার্মান ও ইংরেজি
Netflix's Post-Apocalyptic Series 'Tribes of Europa'

জ্বলন্ত প্রশ্ন হচ্ছে, কী ঘটবে যখন ইউরোপ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে?

জার্মান ভাষার এই টেলিভিশন ওয়েব-সিরিজ সেটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে।

ধরুন,

"ক্রিকেট খেলা দেখার সময় সঙ্গত বা অসঙ্গত কারণেই আমরা একটি টিমকে সাপোর্ট করে থাকি, ব্যাপারটা বেশ কৃত্রিম। এবং শেষ অবধি উক্ত টিম জিতলে আমরা খুশি হই বা হারলে দুঃখ পাই।"

মজা এখানেই। ২০২৯ সালে হঠাৎ করে পুরো বিশ্ব ব্ল্যাক-আউট হয়ে যায়। টেকনোলজির ধস নামে। "ট্রাইবস্ অব ইউরোপা" - সিরিজে ক্রমাগত সেটা দর্শকদের মন কাড়বে। স্বঘোষিত ২০৭৪ সালের ডিস্টোপিয়ান একটি পৃথিবী নিয়ে কাজ করে গেছেন ডিরেক্টর। সেখানে দেখানো হচ্ছে, ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়া অসংখ্য ট্রাইব(গ্রুপ) কে। যারা একে অন্যর অস্তিত্ব নিয়ে লেগে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, সবাই চাইছেন সুপ্রিমেসি। ঠিক কতগুলো এমন গ্রুপ আছে সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানা নেই কারোও। নেই ইন্টারনেট, নেই বর্তমান নাসার মঙ্গলগ্রহ নিয়ে উৎসাহ কিন্তু তারা অতীত নিয়ে জানার চেষ্টা করছেন এবং ব্যাপারটা ভীতিকর যে, “তারা টেকনোলজির ব্যবহার পুরোপুরি ভুলে যাননি”।

এখানে একদল শান্তি চায়, একদল তাদের জায়গা বা অস্তিত্ব বৃদ্ধিতে ব্যস্ত আছেন আর আরেক দল সম্পূরক ভিলেন বেশে আছেন। এরা একে অপরের সাথে জঘন্য হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত হচ্ছে, ভেঙ্গে যাচ্ছে। আবার জোড়াও লাগছে। পুরোপুরি অসভ্যদের খেলা চলছে, নোংরামি চলছে। মানুষের মৃত্যুতে পড়ছে হাততালি।

বাস্তব পৃথিবীর সাথে পুরো মিল খেলে যাওয়া এই নতুন "ট্রাইবস্ অব ইউরোপা(সিরিজ)" আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছে। ইংরেজির ক্রমাগত মিশ্রণ স্বচ্ছ ছিলো না, দূর্যোগ ছিলো আমার উপর। জার্মান শব্দে বুঝতে গিয়ে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। ইংরেজি সাব-টাইটেল ছিলো মাত্র ভরসা।

ন্যায় করার জন্য অরিজিন গ্রুপের নাম প্রেডিক্টেবল এবং তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়াটাও প্রেডিক্টেবল তাই "ব্লেড রানার" মুভি সিরিজ বেশি কথা বলবে একটি ডিস্টোপিয়ান পৃথিবী সম্পর্কে। যদি প্রথম দিকের ব্যাপারটা লক্ষ্য করা যায় তাহলে দেখা যাবে, লিভ, ইজা এবং কিয়ানো এই তিন ভাই-বোন গল্পের প্রোটাগনিস্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন বা যাবেন। এবং ক্রো'দের নিঃসন্দেহে এন্টাগোনিস্ট বলা যেতে পারে যারা মূলত প্রতিনিধিত্ব করছেন "ব্রাহটক" ট্রাইবের জন্য। এদের আবার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এরা পেইন(ব্যাথা) কে ভয় পায় না, এমনকি মৃত্যুকেও না। এরা সাহসী যোদ্ধা এবং কখনোই মিথ্যে বলে না। বলাবাহুল্য, ক্রো'রা হচ্ছে ওয়েল-ট্রেইন্ড যোদ্ধা। কিন্তু পুরো সিরিজ ধরে এদের সম্পর্কে খুব সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দর্শকদের ধৈর্য্যে আঘাত করতে পারে। অবশ্য কিয়ানো আসার পর সেই শৃঙ্খল ক্রমাগত ভাঙতে শুরু করে। কিয়ানোর এই উক্তিটি বিখ্যাত হতে পারে,

"আমরা প্রিয় হলেও হতে পারি। তবুও আমরা দাস এবং এর বেশি কিছুই নই।"

অথচ লর্ড ভারভারা(একজন সম্মানিত এবং কঠোর হৃদয়ের মহিলা, ব্রাহটক ট্রাইবের) এর সাথে রাত্রি যাপন করা সংক্ষেপে বিছানায় যাওয়া তার প্রিয় দাসদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু কিয়ানো কে হতাশ থাকতে দেখেছি। এবং খুব সম্ভবত এটাই ভারভারার দূর্বল দিক, কারণ শুভ্র দেহ এবং সুসজ্জিত পোষাক তাছাড়া মিষ্টি কন্ঠও কিয়ানোর জন্য যথেষ্ট পড়ছে না। বাধ্য হয়েই বোধহয় জোরপূর্বক সেক্সে লিপ্ত হওয়া। অথবা ভারভারার কিয়ানোর প্রতি আগ্রহ আছে বলেই তার অতীত সম্পর্কে জানতে চাওয়া, ক্রমাগত একটা অসহনীয় যন্ত্রণায় ফেলে দেওয়া।

বিক্ষিপ্ত চোর ভূমিকায় বা এস্কেপিস্ট ভূমিকায় থাকা মোজেজ এবং আমেনা কথা বা ভঙ্গিতে বা আচরণে জোকার মত হলেও ইজা কে ছেড়ে দিচ্ছে না। তাদের সেই "কিউব" নিয়ে কৌতুহল ক্রমাগত বাড়ছে। ওটা ফিক্স করার চেষ্টা করছে। বলে রাখা ভালো, পুরো সিরিজ ধরে আমার “মাইন ক্যাম্ফ” বইটির কথা মনে পড়ছিলো।

আরো একটি ট্রাইব "ক্রিমসন"। ক্রিমসনের বৈশিষ্ট্য হলো তারা বিনয়ী কিন্তু যথার্থ বর্ণবাদী। ক্রিমসনের তালিকায় তারাই আছেন বা থাকবেন যারা তাদের দৃষ্টিতে সুন্দর বা সুন্দরী। লিভ বা ইভ এই ট্রাইবের যৌক্তিক একজন সদস্য পদ পেয়ে যান। নেতৃত্ব পর্যায়ের পদ পাওয়ার কারণ বোধহয় ক্রিমসনের কমান্ডারের কারণে। এই ট্রাইব প্রচন্ড রকম ডিপ্লোমেটিক এবং কমপ্লেক্স। তারা আইডিয়া পরিবর্তন করতে চায় এবং নিজেদের অস্তিত্ব বৃদ্ধিতে তৎপর কিন্তু মানুষের মৃত্যুতে পরোয়া করছে না বলেই মনে হয়েছে।

নেই কোনো ধর্মের বাড়াবাড়ি বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। অবশ্য যদি আমরা এসব ট্রাইব কে আলাদা-আলাদা সম্প্রদায় ধরি তাহলে নিশ্চয় সেটা আছে। এবং ডিটেনশন ক্যাম্প এই সিরিজে বেশ লক্ষণীয়। অত্যাচারের ভয়াবহতা এবং মুক্তি না পাওয়ার নিশ্চয়তা একরকম ধাক্কা দিতে পারে।

টেকনোলোজি নেই বললেও, এয়ারক্রাফট ক্র্যাশ হলো এবং কিউবের কী এমন শক্তি আছে! যার পিছনে লেগে আছে সমস্ত গ্রুপ। এবং শেষের চমক দ্বিতীয় চ্যাপ্টার দেখতে বাধ্য করতে পারে। যদিওবা মুভিটি পঁচা(রোটেন) টমেটো তে হিট খেয়ে, আই.এম.ডি.বি তে আছড়ে পড়ে গোগল তুলে দিয়েছে তবুও বলতে হয়, একবার দেখে নেওয়া জরুরী। তাছাড়া এমন নিষ্ঠুর দৃশ্য, মুক্তির জন্য বাবা আর ছেলে কে যখন সামনে দেওয়া হলো তখন বাবার ভূমিকাও দেখবার মত ছিলো বৈকি।

ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×