somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

নতুন সাই-ফাই মহাকাব্য, ডিউন (DUNE) মুভি রিভিউ

২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুপ্রিয় পাঠক, আশা করছি ভালো ও সুস্থ আছেন। আজ আমি একটি হলিউড মুভি “ডিউন (ᕲ ᑎ ᑎ ᕮ)” নিয়ে পর্যালোচনা করবো। আমার ব্যাখ্যায় কিছু কিছু জায়গায় স্পয়লার আছে।

“Dune” Novel by Frank Herbert –এই বইটির আলোকে নির্মিত হয়েছে “ডিউন (DUNE 2021)” মুভিটি। যদি আমরা পার্ট-০১ বিবেচনায় রাখি তাহলে এই মুভি কোন কনক্লুশনে পৌঁছায় না। এর আগেও হলিউড এই একই বইয়ের আলোকে ১৯৮৫ সালে মুভি নির্মাণ করেছে কিন্তু তেমন সাড়া পায়নি। “(DUNE 2021)” মুভিটিও ব্যতিক্রম বলে মনে হচ্ছে না। ডিউন ট্রিলজি বানানো হচ্ছে ভালো কথা কিন্তু একটি পুরো অংশ দেখে মনে হবে বিচিত্র সব চরিত্রের নাম মনে রাখা, একাধিক হাউজের নাম মনে রাখা সহজ নয়।

ঢং করে তারা একটা পার্ট তৈরি করতে পারে নাই আবার তারা প্রি বা পোস্ট সিকুয়েন্সের কথা বলছেন। ইতোমধ্যেই দর্শকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এই মুভিটি নিয়ে। অন্যদিকে পুরো ১ম পার্ট দেখার পর শুধু এটা মনে হয়েছে, হতে পারে এখান থেকে গল্প শুরু (যেহেতু আমি বইটি এখনো পড়িনি)। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর দর্শকদের কাছে এই মুভিটি এসেছে। তাই প্রত্যাশাও অনেক থাকতে পারে। শুরুতেই বলে রাখা ভালো, এই মুভিটির বেশ কিছু অংশ “Game of Thrones” ও “Star Wars” এর সাথে মিলে যায়।

এই মুভি শুরু হয় ডিস্ট্যান্স ফিউচার মানে প্রায় ১০,১৩১ সালে সামনের আসা ভবিষ্যৎ কে কেন্দ্র করে। এখন মানুষ বিভিন্ন প্ল্যানেটে বসবাস করা শুরু করে দিয়েছে। এখন এই প্ল্যানেটসমূহ বা গ্রহগুলো আলাদা আলাদা দেশের মত আচরণ করছে আর এই সব প্ল্যানেট কে নিয়ন্ত্রণ করছে “House of Corrino” নামক একটি প্ল্যানেট। এখন এই “House of Corrino” এর শাসক হলো “Emperor” যিনি তিনি সমস্ত প্ল্যানেট এর উপর নিজের কর্তৃত্ব রাখেন।

এই “House of Corrino” –এর কাছে সার্টোকার নামক একটি বিশাল মিলিটারি ফোর্স আছে যার সাথে কোন প্ল্যানেট লড়াই বা মোকাবেলা করতে সক্ষম নয়। এই মুভিতে স্পাইস নামক একটি পদার্থ রয়েছে। যেটা খেলে একজন ব্যক্তির মধ্যে সুপার-হিউম্যান শক্তি অর্জিত হয়। শুধু তাই নয় এই স্পাইস খাবার ফলেই বিভিন্ন প্ল্যানেটের লোক অন্য প্ল্যানেটে যাতায়াত করতে পারে। তো স্পাইসের এত শক্তির জন্য “ডিউন (DUNE)” ওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে দামী জিনিস বা পদার্থ হিসেবে পরিচিত।

এই প্ল্যানেটের মধ্যে যাদেরকে ফ্রেমান বলা হচ্ছে তারা এই “স্পাইস” কে পবিত্র বলে মনে করে। কিন্তু এর বেশি ব্যবহারের কারণে একজন ব্যক্তির চোখ নীল হয়ে যেতে পারে। আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এই স্পাইস কেউ কেউ নেশা করার জন্য ব্যবহার করছে আবার কেউ কেউ কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।

ডিউন ইউনিভার্সের অ্যারাকাসদের কাছে থেকে এই স্পাইস পাওয়া যায়। অনেক সাল ধরে হাউজ হার্কিনিসের লোক এই স্পাইস কে মাইন করছে বা কব্জায় রাখছে। যাদেরকে নেতৃত্ব দিচ্ছে রেভেন। এখানে ফ্রেমানরা অনেক চেষ্টা করছেন রেভেন কে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু তাদের বিশাল মিলিটারি ফোর্স এবং আশ্চর্যজনক ক্ষমতার জন্য ফ্রেমানরা টিকতে পারছে না।

হঠাৎ করে কিছুদিন পর হার্কান্যান্স অ্যারাক্যাসদের কাছে ব্যাপারটা ছেড়ে দেয়। কিন্তু কারো কাছেই বিষয়টি বুঝে আসে না। এরপর আসে হাউজ ক্যালেডান যেটা কিনা হাউজ আট্রোডিস এর নিয়ন্ত্রণে আছে। এখানেই আমাদের এই কাহিনীর মূল চরিত্র “পল” -এর সাথে সাক্ষাত হয়ে যায়। যেখানে দেখা যায় পল তার মা জেসিকার সাথে লাঞ্চ করছে। জেসিকা একটি হুইচ ক্ল্যান বেনি জেসারেড থেকে অবস্থান করছে। এই ক্ল্যান বাকি প্ল্যানেটকেও সাপোর্ট করে। এখানে জেসিকা চরিত্র বেশ মজাদার। বিশেষ করে তিনি ভবিষ্যতবাণী করতে পারেন। পলের দেখা স্বপ্নের জন্য তাকে হুইচ ক্ল্যানদের সাহায্যও নিতে দেখা যায়। আর পল প্রায় প্রতিনিয়ত একজন নীল চোখের মেয়েকে স্বপ্নে দেখেন যে কিনা একজন ফ্রেমেন।

এখন এই নীল চক্ষুবিশিষ্ট মেয়ে আসলে আর কেউ নয় সে আসলে চাহনি। যে কিনা বড় বড় স্পেসশীপ পরিচালনা করতে পারে। এরপর দেখা যায় একটি স্পেসশীপ ম্যাসেঞ্জার আকারে অ্যাট্রোডাস প্ল্যানেটে আসে। আর তারা লেটো কে বলেন, লেটো কে হার্কান্যান্সদের জায়গায় অ্যারাকাসদের হয়ে কাজ করতে হবে। এদিকে লেটোর কিছু করার ছিলো না কারণ এই আদেশ এসেছিলো “Emperor” এর কাছ থেকে।

হেলেনা হচ্ছে জেসিকার সাবেক শিক্ষিকা। এখন ড্যানকান (অ্যাকুয়াম্যান) চরিত্রের দেখা মিলে যিনি এখানে লেটোর সেনাপতির ভূমিকা পালন করছেন। পল এখানে তার স্বপ্নের কথা বলে যে, “প্রিয় সেনাপতি আমি আপনাকে আমার স্বপ্নে মরতে দেখেছি!”

কিন্তু ড্যানকান এসব কে তোয়াক্কা করেন না। উল্টো আমরা জিতে আসতেই দেখি। তার কাজ ছিলো অ্যারাকাসদের কাছে থাকা স্পাইস নিজের কব্জায় আনা। এতে করে নাকি শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এমন ডায়ালগ লেটোকে বলতে দেখা যায়।

পল ও তার বাবার কেমিস্ট্রি আমাকে মুগ্ধ করেছে। ঠিক একজন যোদ্ধার ব্যক্তি চয়েস থাকতে পারে না। পলের দাদুরও পলের মত ইচ্ছা ছিলো নিজের মত হবার। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে পলের বাবাও একই কথা বলছেন। সহজ বাংলায় পলের বাবা বলছেন, “পল, তুমি তোমার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারবে না। যখন যেটা ঘটে তার সাথে মিলে যেতে শেখো, খাপ খেতে শেখো। কারণ আমাদের জন্য তুমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”

যদিও পল ফ্রেমেনদের কাছে যেতে চায় এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়। এখানে আরো একটি বিষয় বেশ ভালো লেগেছে সেটা হলো, পল এর যুদ্ধ প্রস্তুতি। পল বলছে, আমার মুড নেই। আর তার সাথে যিনি যুদ্ধ করছেন তিনি বলছেন, এই খেলায় মানে যুদ্ধে তোমার মুড আছে কি নাই তা কেউ তোয়াক্কা করে না। এই খেলা চলতেই থাকে আর হামেশা মুড-অন করে থাকতে হয়।

হেলেনা পলকে যে পরীক্ষা করছে তা মূলত পলের ভিশন জানার জন্য। কারণ হেলেনার সন্দেহ পল-ই হচ্ছে সেই শক্তি যে একদিন পুরো ইউনিভার্স কে কর্তৃত্ব দেবে। এবং হেলেনার সন্দেহ সঠিক হয়। এখন লেটোর বাহিনী স্পাইস সমূহ মাইনিং করতে শুরু করে। অন্যদিকে পল স্বপ্নে দেখে যে, সে একদিন নেতৃত্ব দেবে পুরো ইউনিভার্স কে। পাশাপাশি লেটো বাহিনীর এলাকায় কিছু রহস্যময় বিষয়ও খুঁজে পায়।

প্রিয় পাঠক, এই মুভিতে আরো অনেক কিছু ঘটছে যার কিছুটা ব্যাখ্যা করলাম বাকি অংশ পয়েন্ট আকারে তুলে ধরলাম।
বিশেষ বিষেষ পয়েন্ট
১. হাউজ অব অ্যাট্রোডাস –এ কিছু ইন্টারন্যাল পলিটিক্স ঘটতে দেখা যায় যেখানে পলের মা জেসিকা জড়িত।
২. এই মুভিতে কেউ স্পাইস কে কন্ট্রোল করতে পারছেন কি পারছেন না? সেটাও জানা যাবে।
৩. তারপর স্পাইস ব্যবহারে কি কি সমস্যা বা সুবিধা আসতে পারে?
৪. পল কীভাবে একজন যোদ্ধা হিসেবে তৈরি হলো? তারপর তার ভালোবাসার মানুষের সাথে পরিচয় হলো? খুব সম্ভবত ওর প্রেমিকার নাম, জান্ড্যায়া।
৫. পল কীভাবে হাউজ অব হার্কিনিসের বিরুদ্ধে রিভেঞ্জ নেয়? এবং ৬. কীভাবে সে তার প্রোফেসি সম্পূর্ণ করে?

পরিশেষ
এই মুভিটি দেখলে আপনি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। রিভিউ লিখতে লিখতে আমি এই প্রথমবার ক্লান্ত অনুভব করছি।


- মেহেদি হাসান(Mehedi Hasan)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:৩৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×