কপি-পেষ্ট নিউজ।
রাজধানীর শাহবাগের শোডাউনে সিসিটিভি মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। শাহবাগে চলমান শোডাউনে জমায়েত ইসলামবিদ্বেষী ও উচ্ছৃঙ্খল ব্লগারদের নারীঘটিত কেলেঙ্কারি এবং মাদকসেবনের দৃশ্য রেকর্ড হয় সিসিটিভিতে। ওই সিসিটিভির দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল বাদল মিয়া এসব ফুটেজ জনগণের কাছে প্রচার করে দিতে পারেন সন্দেহে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। নোংরা ফুটেজ প্রচার করা হলে শাহবাগিদের আন্দোলনসহ ব্লগার ও ছাত্রলীগের কুকীর্তি ফাঁস হয়ে যেতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশেরও ধারণা।
পুলিশ ও গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, বাদল মিয়া ছিলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে ব্লগারদের শোডাউন শুরু হলে তাকে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরার দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হয়। সেখানে চলমান ইসলামবিরোধী কার্যক্রম, নামাজ ও ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল নিয়ে ব্যঙ্গ চলতে থাকলে তিনি এতে ব্যথিত হন। প্রতিবাদ করার সুযোগ না থাকলেও তিনি এ নিয়ে তার সহকর্মীদের কাছে নিজের মত প্রকাশ করেন। কোনো কনস্টেবল বিষয়টি শাহবাগে জমায়েত কোনো ব্লগারকে জানায় বলেও গোয়েন্দাদের ধারণা। এতে কনস্টেবল বাদল সিসিটিভিতে রেকর্ড হওয়া ব্লগারদের নারীঘটিত ও মাদকসেবনের দৃশ্য কোনো না কোনোভাবে ফাঁস করে দিতে পারেন বলেও ব্লগারদের সন্দেহ হয়। এর জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল করে তাকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের ধারণা। বাদল মিয়াকে একটি হলুদ ট্যাক্সিক্যাবে করে মতিঝিল এজিবি কলোনির বটতলার সামনে ফেলে দেয়া হয় বলে পুলিশ সূত্র জানায়। তার লাশ উদ্ধার করে রাজধানীর মতিঝিল থানার পুলিশ। তার কনস্টেবল নম্বর ছিল-২৪২৫০।
তবে বাদল মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য গতকালও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তার হত্যারহস্য উদঘাটনে শাহবাগের কয়েক ব্লগার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে বলে পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়। পুলিশ এই হত্যারহস্য উত্ঘাটনে আরও যেসব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করছে, সেগুলোর মধ্যে আছে—বাদলকে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে ডেকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে নিহত হয়েছেন, কিংবা পূর্বশত্রুতার জের ধরে খুন হয়েছেন।
এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার এসআই আউয়াল হোসেন গতকাল আমার দেশকে জানান, ‘বাদল খুনের ঘটনায় কোনো আসামিকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে চার-পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। নিহত বাদলের চোখে আঘাতের চিহ্ন দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বাদল মিয়ার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। বাদল খুন হওয়ার আগে মোবাইল ফোনে কার কার সঙ্গে কথা হয়েছে, সেসব খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’
মতিঝিল থানার সাব-ইন্সপেক্টর আবদুল লতিফ এ প্রসঙ্গে গতকাল দৈনিক আমার দেশকে জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বাদল মিয়াকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে শাহবাগে আবার দায়িত্ব দেয়া হয়। শাহবাগে দায়িত্বে এসে তিনি রাতের খাবার খান। রাত ১১টায় তার একটি মোবাইল ফোন আসে। এর পর থেকে তার কোনো খবর ছিল না। রাত দেড়টার দিকে এজিবি কলোনি বটতলা এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লাশ দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে যান। রাজারবাগ পুলিশলাইনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে বাদল মিয়ার লাশ গতকাল গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সুত্র- 'আমার দেশ' পত্রিকা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




