দুপুর বারটা বাজে প্রায়। মধ্যবিত্তের পিংক সিটি/বসুন্ধরা মার্কেটে আষীষ তার ছোট-খাটো শরীরের মাপের পলো শার্ট খুজে খুজে ক্লান্ত।পাবেই বা কেন এখানে যা আসে তাতো USA-Europe বাসিদের মাপে তৈরী রিজেক্টেট মাল।
এক দোকানের ডিসপ্লেতে ছোট সাইজের একটা আইটেম চোখে পরলে এগুতে লাগল সেদিকে।ঐ দোকানে তখন ৭/৮ জন সমবয়সী ক্রেতা ছিল যাদের একজন আরিফের দিকে চেয়ে সৌজন্য হাসি দিলে সেও তার উত্তর দিল।এগিয়ে এসে বলে ভাই আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি,গার্লফ্রেন্ড নিয়ে শপিং এ আইছেন?
আষীষ ভাবল হয়তো বিক্রেতা রসিকতা করছে তাই বলে,না ভাই একা এসেছি।
হঠাত একজন আরিফের কলার ধরে।আষীষ বলে ভাই গায়ে হাত দেন কেন?
ছেলেটি বলে,অই তুই কি হিজড়া তোর গায়ে হাত দিমু?
আষীষ বলে ভাই আমি তো জানি হিজড়াই অন্যের গায়ে হাত দেয়।
আরেকজন তেড়ে আসে,কি আমরা হিজড়া? হালারে ধোর , সাইজ কর। একজন জানতে চাইল,কই পড়স?আষীষ জানালো আহসানউল্লায়।দলনেতা টাইপের একজন বলে আহসানউল্লায় পড়ে ভাব দেখাস,খাড়া তোর খবর আছে, কি আছে বাইর কর।এই বলে আরিফের পকেটে হাত বাড়ায়।
তারপর সবাই মিলে তেড়ে আসলে দোকানের লোকেরা এগিয়ে এসে আষীষকে বাচাতে ডেস্কের ভিতরে নিয়ে যায় আর আরিফের হয়ে মাফ চাইতে থাকে।
পরে ২/৩ মিনিট চিতকার,লাফালাফি,অশ্লীল গালি গালাজ...তারপর “তুই কেমনে আজ মার্কেট থেকে বের হস দেখুম” বলে চলে যায়।
আষীষ জানতে চাইলে দোকানের লোকেরা বলে এরা ঢাকা কলেজের সোনার বাংলাদেশ দলের নিষ্পাপ পোলাপাইন,কেউ এদের কিছুই বলতে পারে না,আপনার ভাগ্য ভাল যে মোবাইল-মানিব্যাগ সব নিয়ে নিত,এটা নিত্যদিনের ব্যাপার।আপনার চোখের সাম্নেই ৫ টা টি-শার্ট নিয়ে গেল টাকা তো দূরে থাক উলটা দোকানে আসলে ওদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হয়।আপনি টেনশন লইয়েন না আপ্নারে গোপনে বের করে দিমু।পরে বের হতে সাহায্য করে।
.........বুজলাম না আরিফের কি দোষ?ভাই আপ্নারা কেউ বলতে পারবেন কি দোষ ছিল???
আমার মনে হয় ওরা তো ক্ষমতাময়,মহামহিম,দেশের বাড়িওয়ালার ধোয়া তুলসি পাতা-এক একটা হীরার টুকরা রাজপুত্র।রাস্তায় ওদের কুরনিশ করতে হবে,মার্কেটে মার্কেটে উপহারের পসরা বসাতে হবে,গায়ের চামড় তুলে কার্পেট বানিয়ে উপহার দিতে হবে,পড়ালেখা(???) শেষ হলে এদের কে আবার বিসিএস ক্যাডারের পুলিশ/কাস্টমস এসব দিতে হবে…….আরও কত্ত কি???

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


