ব্যাকরণে শেখা 'উচ্চারিত অর্থবোধক শব্দাবলী মানে ভাষা' সংজ্ঞাটি সংখ্যাগুরু শব্দ-করে কথা বলা বা বাচনিক ভাষার ব্যবহারকারিদের জুলুমবাজির এক দারুন নমুনা। কথাটি নিঃশব্দে কথা-বলা মানুষদের। ভাষা অবাচনিক হতে পারে? ভাষার কাজ কী? যোগাযোগ স্থাপন? তা মানুষ তো নিঃশব্দে কতশতই না যোগাযোগ করে। 'সে যে আমায় জানি পাঠায় বাণী গানের তানে লুকিয়ে তারে..." কবিগুরুর এই বাণী পাঠানোর কথাও মানি, তাই বলে শব্দহীন ভাষা! কে মানবে? শব্দ করে কথা বলার দল? নিজেদের এই শব্দের বাহাদুরি করে করে ওরা সুর, ধ্বনী...কত কী ব্যাকরণ লিখে যে শেষ! এখন এইসব ঝামেলার কথা যে! যা হোক, বাচনিক ভাষা ছাড়াও পৃথিবীতে অনেক অনেক ধরনের যোগাযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা আছে। সমস্যা হল স্বীকৃতির। এই যেমন কোন কোন দেশে ইশারা ভাষা স্বীকৃত ভাষা। দাপ্তরিক কাজেকর্মে ব্যবহার করা যায় অনায়াসেই। স্কুলে, অফিসে, কোর্টকাছারিতে। বেশিরভাগ লোকের কথা সব সময়ই দাপট দেখিয়েছে। এই যেমন ধরুন, আমাদের দেশের আদিবাসীদের দুঃখ। মাতৃভাষায় যোগাযোগ এই দেশে রীতিমতো বারণ! স্কুলে, অফিসে, বাসে-ট্রেনে, কোর্টকাছারিতে...। ইশারায় কথা বলা মানুষদের এই দেশের সরকারি নাম মুক ও বধির। তাদের জন্য স্কুল আলাদা। যেন আলাদা জগতে যাবে ওরা স্কুল পেরিয়ে। সেই স্কুল পেরিয়ে তো যাবার জায়গাই নেই!
ইশারা ভাষী মানুষেরা বলেন, আমাদের কথা না শুনেই, আমাদের মনের কথা না জেনেই তোমরা যে জ্ঞানের রাজত্ব কায়েম করেছ, তার নাম অহমিকা। সে জ্ঞান অসম্পূর্ণ। শিখে নাও আমাদের ভাষা। দারুন এই ভাষা আমাদের! কত কথা, কত অভিজ্ঞতা আমাদের! জুড়ে দাও তোমাদের ওই জ্ঞানের সাথে। দেখবে, জ্ঞান বলে যা নিয়ে তোমরা বড়াই করেছ এতদিন, তা কতই না অসার। মেজরিটির জ্ঞান!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




