somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম আমেরিকান নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার্কিন কংগ্রেসে দ্বিতীয় মুসলিম কংগ্রেসম্যান আন্দ্রে কারসন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিত্বমূলক প্রজাতান্ত্রিক দেশ। এদেশে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং রাজনীতি বিমুখ না হয়ে মুসলিম আমেরিকান নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে হবে। কংগ্রেস, সিনেট থেকে শুরু করে প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মুসলিম প্রতিনিধি নির্বাচনে তাদেরকে সক্রিয় হতে হবে। তিনি বলেন, নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রায় ১০ লাখ মুসলমান বাস করলেও বিশাল এই শহরে কোনো পর্যায়েই কোনো মুসলিম প্রতিনিধি নেই। এটা দুঃখজনক। কিন্তু এর কারণ আমরা নিজেরাই, আমরা নিজেদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখি।

রোববার রাতে নিউ ইয়র্ক’র লাগর্ডিয়ায় এক রেস্টুরেন্টে অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকান বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড প্রফেশনালস’র পক্ষ থেকে ইন্ডিয়ানা রাজ্য থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান কারসনের সম্মানে আয়োজিত এক নৈশভোজে বক্তব্য দানকালে তিনি একথা কলেন।

কংগ্রেসম্যান কারসন বলেন, “৯/১১ এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই ঘটনার পর অনেকদিন পর্যন্ত মুসলমানদের জন্য প্রকাশ্যে সালাম উচ্চারণ করাও কঠিন ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন ঘটলেও এদেশে এখনো মুসলমানরা গোয়েন্দাদের সন্দেহের বাইরে নয়। তারা এখনো মসজিদে তল্লাশি চালায়।”

অ্যান্ড্রু কারসন আরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম জনগোষ্ঠী ইতিবাচক অবদান রাখছে সব ক্ষেত্রে। তাদের এই স্বীকৃতি শুধুমাত্র এদেশে ভালোভাবে জীবন কাটানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। রাজনীতির মূলধারায় তাদের অবশ্যই তৎপর হতে হবে। তা না হলে যুক্তরাষ্ট্রে যারা ইসলামোফোবিয়া সৃষ্টি করছে, তাদের অপপ্রচার চলতেই থাকবে। পাশাপাশি মুসলিম জনগোষ্ঠী যে কোনো দেশেরই হোক না কেন তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রজাতন্ত্র. রাজতন্ত্র নয়। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই এদেশের নাগরিক সব মুসলিমকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অধিক হারে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করি যে আগামী ডেমোক্রেটিক কনভেনশনে আরো বেশি সংখ্যক মুসলিম প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এর পাশাপাশি মুসলিম পেশাজীবীরা তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এদেশের শিক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করা উচিত।

কংগ্রেসম্যান বলেন, “মুসলমরা যুক্তরাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশ্বের যেকোনো অংশ থেকেই তারা এসে থাকুক না কেন, এ দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে তারা যে অবদান রাখছে তা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য মুসলিম ডাক্তার, শিক্ষক, প্রকৌশলী এমনকি বিচারক পর্যন্ত রয়েছেন। সেনাবাহিনীতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। কাজেই তাদের বাদ দিয়ে বা তাদের অনুকূলে নয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। মুসলমানরা এখন নিজেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক হয়ে উঠেছে। এ জন্য প্রয়োজন তাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়াও তৎপর হয়ে ওঠা।

তিনি বলেন, “আমরা আরব স্প্রিংয়ে দেখছি কিভাবে মিশর, ইয়েমেন, লিবিয়া, সিরিয়ার মানুষ অপশাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠছে। কিন্তু আমরা এখন আমেরিকান স্প্রিংয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করছি ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’র আদলে। যুক্তরাষ্ট্রও জেগে উঠছে। ধনবাদের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনকে এখন আবেগের প্রকাশ বলে মনে করা হলেও এটি ছড়িয়ে পড়বে তৃণমূল পর্যায়ে এবং সুফল অবশ্যই পাওয়া যাবে।

অ্যান্ড্রু কারসন আশাবাদ জানিয়ে বলেন, “২০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে। এখন কংগ্রেসে আমরা মাত্র দু’জন মুসলিম আছি। আমরা মুসলিম হিসেবে যে কংগ্রেসে সার্ভ করছি, এজন্য আমরা গর্বিত। বিশ বছর পর সে সংখ্যা আরো বাড়বে। মুসলিম সিনেটর থাকবেন, মুসলিম মেয়র থাকবেন, মুসলিম সিটি কাউন্সিলম্যান থাকবেন। এই লক্ষে পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে। মুসলিম ইস্যুগুলো যাতে অবশ্যই ইসলামী আদলে হয় এবং সবাই সেভাবে বুঝতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্মই ওবামা, হিলারি হিসেবে এই জাতির নেতৃত্বে আসবেন, এটি দুরাশা নয়।”

লিঙ্ক
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×