বাংলাদেশে এবং ভারত উপমহাদেশে মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষার ইতিহাস দুই শ’ বছরের বেশি। কালের পরিক্রমায় এখন ভাবার সময় এসেছে যে, এই মাদ্রাসায় ধর্ম শিক্ষার নামে যুগ যুগ ধরে জাতিকে প্রতিদান হিসেবে কি দিয়েছে? মাদ্রাসা শিক্ষার বিষয়ে কতগুলো লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- প্রথমত ব্রিটিশ আমলে রক্ষণশীল মাদ্রাসা শিক্ষার বিপরীতে নিউ স্কীম মাদ্রাসা গড়ে উঠলে মাদ্রাসা শিক্ষায় ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি ইংরেজী, বাংলা, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান বিষয় পাঠ্যবিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই নিউ স্কীম মাদ্রাসা থেকেই বের হয়ে আসা প্রথম প্রজন্মের শিক্ষিত মুসলমান ব্যক্তিরাই প্রধানত শিখা গোষ্ঠী গঠন করে, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন, নারীর শিক্ষা ও অবগুণ্ঠন মুক্তির আন্দোলনের সূচনা করেন। বিপরীতে রক্ষণশীল মাদ্রাসাগুলো যুগের উপযোগী, যুগের প্রেক্ষিতকে বিবেচনা করে জাতির উন্নয়নে, পুরুষ-নারী, কারও এগিয়ে যাওয়ার পথে সহায়ক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম, এমন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্ম দিতে সক্ষম হয়নি। বরং এই প্রাচীনপন্থী মাদ্রাসাগুলো ‘হেফ্জখানা’ তৈরি করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে যুগের অনুপযোগী, রক্ষণশীল, অনুদার, ভেদবুদ্ধি দ্বারা চালিত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর জন্ম দিয়ে জাতি ও দেশকে দ্বিধাবিভক্ত, বিভ্রান্ত ও উন্নয়নবিরোধী কর্মতৎপরতার মাধ্যমে সমাজে জঙ্গীত্বের বীজ বপনে সহায়তা করেছে! সবচেয়ে বড় উদাহরণ- ২০১৩-এর বিএনপি-নেত্রী খালেদার উস্কানি গ্রহণ করে মৌলানা শফির হেফাজতে ইসলামের নেতা ও অংশগ্রহণকারী তরুণ-কিশোররা সবাই হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী! যদিও ঐদিন তান্ডব চালিয়েছিল শিবির-জামায়াত, বিএনপির সন্ত্রাসী, অর্থাৎ, মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণরত শিশু, কিশোর, তরুণদের শিক্ষার দ্বারা নিজস্ব বুদ্ধি ও যুক্তিবোধ অর্জনের ক্ষেত্রে তাদের পঙ্গু করে রাখা হয়। দরিদ্রের সন্তানদের মাদ্রাসা শিক্ষার নামে জঙ্গী, মৌলবাদী হওয়ার পথ রোধ করা দরকার বৈষম্য এ পথেই রোধ করা সম্ভব হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১